কাকরাইলের রাস্তাতেই রাত কাটান জবির শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা, সমাগম বাড়ছে

আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তিসহ তিন দফা দাবিতে এখনো কাকরাইলের রাস্তায় অবস্থান করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত রাত তারা এখানেই অবস্থান করেন। এখানেই সড়কে ঘুমান।
আজ বৃহস্পতিবার ( ১৫ মে) ভোরে কাকরাইল মসজিদের সামনে গিয়ে দেখা যায় রাস্তার মাঝে কেউ শুয়ে আছেন, কেউ বসে আছেন। গায়ে রাতের অবসাদ নিয়েও কেউ কেউ উজ্জীবনী গান গাইছেন। সঙ্গে হাত তালি দিয়ে তাল দিচ্ছেন অন্যরা। কোথাও কোথাও গল্প করছেন কেউ।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, শিবির, ছাত্রঅধিকার পরিষদ, ছাত্র ফ্রন্ট, বৈষম্যবিরোধীসহ কয়েক শহ সাধারণ শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করছেন। তারা বলছেন অধিকার আদায় না করে ক্যাম্পাসে ফিরবেন না তারা।
এদিকে কাকরাইল মসজিদের ভেতরেও বেশ কিছু শিক্ষার্থী রাত কাটান বলে জানান শিক্ষার্থীরা। অনেককে সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাতে রাস্তায় আছেন শিক্ষকরাও। একজন শিক্ষক জানান, রাত সোয়া চারটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন ও ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মঞ্জুর মোর্শেদ ভুইয়া। রাত ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
দাবি আদায়ে গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে পৌনে একটার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে এলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী আহত হন।
রাতে সেখানে যান তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান ।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুতই প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির বিষয়ে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।
যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনের বিষয়ে সরকার কথা শুনবে জানিয়ে তিনি একই সঙ্গে হুঁশিয়ার করেন, কিছু হলেই যমুনায় চল, এমন আর হবে না। সরকার কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।
এরই মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। কে কারা উপদেষ্টার জটলার দিকে একটি পানির বোতল ছুড়ে মারে। এটি তার মাথায় আঘাত করে।
এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন।
(ঢাকাটাইমস/১৫মে/মোআ)

মন্তব্য করুন