সরকার অজানা আতঙ্কের মধ্যে আছে: গণসংহতি আন্দোলন

গণতন্ত্র মঞ্চের সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভে জোনায়েদ সাকিসহ নেতাকর্মীদের উপর পুলিশি হামলার বিচার ও গ্যাস-বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে গণসংহতি আন্দোলন।
শুক্রবার বিকালে পুরানা পল্টন মোড়ে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সদস্য সৈকত মল্লিকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, মিজানুর রহমান মোল্লাসহ নেতৃবৃন্দ।
সামবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের লুটপাট-দূর্নীতির দায়ভার জনগণের কাঁধে চাপাতে বর্তমান অবৈধ সরকার আবারো গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। লুটপাট, অর্থ পাচার ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে যখন মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে তখন গণতন্ত্র মঞ্চের সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচীতে কোন ধরণের উস্কানী ছাড়াই পুলিশ গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করেছে। পুলিশের হামলায় গণতন্ত্র মঞ্চের ৪০জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। আমরা অবিলম্বে হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের যথাযথ বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, "বর্তমান সরকার তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের উপর দমন-পীড়ন, নির্যাতন চালাচ্ছে। কিছুদিন আগে গার্মেন্ট শ্রমিকরা যখন মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করেছে সেখানে ৪ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আর এখন গণতন্ত্র মঞ্চ যখন লুটপাট, দূর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাদের উপর ভয়াবহ দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। সমস্ত দমন-পীড়নকে উপেক্ষা করে আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো। আমরা বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই লড়াইয়ে যুক্ত হবার আহ্বান জানাই।
সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, বর্তমান সরকারের লুটপাট-দূর্নীতি-অর্থপাচার ছাড়া আর কোন দিকে মনোযোগ নেই। বেইলী রোডে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত মানুষ নিহত হয়েছে। এর আগেও ঢাকায় বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেক মানুষ মারা গেছেন। কিন্তু জনগণের জীবনের নিরাপত্তায় সরকার কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয় নি। আমরা অবিলম্বে বেইলী রোডে অগ্নিকান্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
সমাবেশে তিনি আরো বলেন, ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনের পরে সরকার বলেছিলো এক সপ্তাহের মধ্যে তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে আনবে। কিন্তু তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। মরার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতো সরকার আবারো বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। বর্তমান সরকারের পক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না; কেননা এই সরকার সিন্ডিকেটের সরকার। আর সেই সিন্ডিকেটকে উচ্ছেদ করার সামর্থ্য এই সরকারের নেই। আমরা যখন ব্যাংক লোপাট, অর্থ পাচার ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করি তখন জোনায়েদ সাকিসহ নেতৃবৃন্দের উপর হামলা করে। সরকারকে এক অজানা অতঙ্কের মধ্যে আছে। সরকারের ভেতরে নার্ভাসনেস কাজ করছে। তাই তারা আমাদের উপর হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। হামলা-মামলা করে আমাদের দমানো যাবে না। আমরা গণমানুষের স্বার্থের পক্ষে আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের ঢাকা দক্ষিনের সদস্য সচিব সেলিমুজ্জামান, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ নেতৃবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/জেবি)

মন্তব্য করুন