কত জেলা মন্ত্রীহীন!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:৪২| আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ১৪:০৯
অ- অ+

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ সরকার। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে দুই দফায় মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে, যাতে বিভিন্ন জেলা থেকে ৪৩ জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব পেয়েছেন।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৮টি জেলা থেকে এই ৪৩ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। এরমধ্যে কোনো কোনো জেলা থেকে একাধিক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হলেও ৩৬টি জেলা মন্ত্রীহীন। এমনকি এমন অনেক জেলা রয়েছে যেখান থেকে একাদশ সংসদে মন্ত্রী পেয়েছিল। কিন্তু বাদ পড়ার পর দ্বাদশ সংসদে সেই জেলায় নতুন কাউকে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে চলছে নানান আলোচনা।

দেখা গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠন হওয়া নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় বৃহত্তর চট্টগ্রাম, ফরিদপুর ও বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলও গুরুত্ব পেয়েছে। ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম জেলা ছাড়াও আরও কয়েকটি জেলায় রয়েছে একাধিক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী।

বিদায়ী সরকারে গুরুত্ব পাওয়া সিলেট অঞ্চল এবার মন্ত্রী পেয়েছে বেশ কম। বৃহত্তর বরিশাল কোনো পূর্ণ মন্ত্রী পায়নি। রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগও তুলনামূলক কম গুরুত্ব পেয়েছে।

মন্ত্রীহীন যেসব জেলা

লক্ষ্মীপুর, পিরোজপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, শেরপুর, রংপুর, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, ভোলা, বরগুনা, গাইবান্ধা, নেত্রকোণা, বাগেরহাট, লালমনিরহাট, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, নড়াইল, রাঙামাটি, ঝালকাঠি, ফেনী, নীলফামারী, বান্দরবান, যশোর, ঝিনাইদহ, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও।

প্রধানমন্ত্রী ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে মোট ৪৩ জনকে মন্ত্রিপরিষদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ২৫ জন মন্ত্রী ও ১৮ জন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

আটটি বিভাগের মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্য ঢাকা বিভাগে। এখানে প্রধানমন্ত্রীসহ ১৫ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের তিনজন, বরিশাল বিভাগের দুইজন, খুলনা বিভাগের দুইজন, ময়মনসিংহ বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন ও রংপুর বিভাগের দুজন স্থান পেয়েছেন মন্ত্রিসভায়।

মন্ত্রী পেয়েছে যেসব জেলা

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী)। কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ। তিনি সাতবারের এমপি। এছাড়া জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকারও ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের এমপি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী হয়েছেন। একই জেলা থেকে আনিসুল হক আইনমন্ত্রী (বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) হয়েছেন।

গোপালগঞ্জ জেলা থেকে মন্ত্রী করা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খানকে (বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়)।

গাজীপুর থেকে আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়), নরসিংদী জেলা থেকে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (শিল্প মন্ত্রণালয়), চট্টগ্রাম থেকে ড. হাছান মাহমুদ (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (শিক্ষা), জামালপুর থেকে ফরিদুল হক খান (ধর্ম মন্ত্রণালয়), ময়মনসিংহ থেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়), কুমিল্লা থেকে মো. তাজুল ইসলাম (স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রলায়), রাজবাড়ী থেকে জিল্লুল হাকিম (রেলপথ মন্ত্রণালয়), কিশোরগঞ্জ থেকে নাজমুল হাসান পাপন (যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়)।

ঢাকা জেলা থেকে জাহাঙ্গীর কবির নানক (বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালায়), আসাদুজ্জামান খান (স্বরাষ্ট্র), সাবের হোসেন চৌধুরী (বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়), মেহেরপুর থেকে ফরহাদ হোসেন (জনপ্রশাসন), চাঁদপুর জেলা থেকে দীপু মনি (সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়), দিনাজপুর থেকে আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে (অর্থ মন্ত্রণালয়), খুলনা থেকে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (ভূমি মন্ত্রণালয়), নওগাঁ জেলা থেকে সাধন চন্দ্র মজুমদার (খাদ্য মন্ত্রণালয়), ফরিদপুর থেকে আবুদর রহমান (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়)।

এছাড়া দুইজনকে টেকনোক্র্যাট ক্যাটাগরিতে মন্ত্রিসভা করা হয়েছে। চট্টগ্রামের ইয়াফেস ওসমানকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ও হবিগঞ্জ জেলার সামন্ত লাল সেনকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে।

প্রথম দফায় শপথ নেন ১১ জন প্রতিমন্ত্রী। তারা যেসব জেলা থেকে নির্বাচিত—

দিনাজপুর জেলা থেকে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী), ঢাকা জেলা থেকে নসরুল হামিদ (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি), মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, (তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী), বরিশাল থেকে জাহিদ ফারুক (পানিসম্পদ মন্ত্রণালায়), নাটোর থেকে জুনাইদ আহমেদ পলক (ডাক ও টেলিযোগাযোগ), গাজীপুর জেলা থেকে বেগম সিমিন হোসেন রিমি (মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়), বেগম রুমানা আলী (প্রাথমিক ও গণশিক্ষায়), পটুয়াখালী জেলা থেকে মো. মহিববুর রহমান (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়), খাগড়াছড়ি জেলা থেকে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়), সিলেট জেলা থেকে শফিকুর রহমান চৌধুরী (প্রবাসী কল্যাণে) ও টাঙ্গাইল জেলা থেকে আহসানুল ইসলাম টিটু (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়)।

দ্বিতীয় দফায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সাতজন। তারা হলেন— রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আব্দুল ওয়াদুদ (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়), নওগাঁ-২ আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকার (পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ), চট্টগ্রাম-১৪ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী (শ্রম ও কর্মসংস্থান)। টাঙ্গাইলের সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়), চট্টগ্রাম জেলা সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও পরিকল্পনা অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান (অর্থ মন্ত্রণালয়), ঢাকা জেলা সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান (সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়), জয়পুরহাট জেলার সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/২মার্চ/জেএ/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শ্যামলীতে দিনদুপুরে ছিনতাই, চাপাতি, বাইকসহ গ্রেপ্তার ৩
বগুড়ায় দাদি ও নাতি বউকে গলা কেটে হত্যা  
যাত্রাবাড়ীতে ২ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
কারফিউয়ে থমথমে গোপালগঞ্জ, যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ১৪
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা