‘বিটিআরসিকে খুব দ্রুতই এসএমপি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে’

​​​​​​​নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ মার্চ ২০২৪, ১৯:২১

অসামঞ্জস্যপূর্ণ বাজার ব্যবস্থা থাকলে মনোপলি বাজার তৈরি হবে। তাই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) খুব দ্রুতই এসএমপি নীতিমালা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেন টেলিযোগাযোগ খাতে ভারসাম্য বজায় থাকে।টেলিযোগাযোগ খাতে বাজার প্রতিযোগিতা, মুঠোফোন গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষায় করণীয়শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসির মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান বলেন, মার্কেটে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য কমিশন কাজ করবে। আগামী মাসে আমরা গণশুনানি করতে যাচ্ছি, যা হবে ৮টি বিভাগে। এছাড়াও অনলাইনে শুনানি করা হবে।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক মো. খালেদ আবু নাছের বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল ফোন অপারেটর রয়েছে। অপারেটরদের মধ্যে বাজার প্রতিযোগিতায় খুবই একপেশে কর্তৃত্বপূর্ণ একটি অপারেটরের উপস্থিতি নির্দেশ করে। বর্তমানে খাতে গ্রাহকের ভিত্তিতে প্রথম অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোনের মার্কেট শেয়ার ৪৩ দশমিক শতাংশ, দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রবি আজিয়াটার ৩০ দশমিক , বাংলালিংকের ২২ দশমিক শতাংশ এবং চতুর্থ অপারেটর টেলিটকের দশমিক শতাংশ। অবস্থা নির্দেশ করে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে অদূর ভবিষ্যতে বাজার মনোপলির দিকে ধাবিত হবে।

খালেদ আবু নাছের বলেন, সর্বশেষ অবস্থানে থাকা তিনটি অপারেটরের জন্য বাজারে টিকে থাকা বেশ কঠিন। একইসঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতের বিনিয়োগও সংকটের মুখে পড়বে। অবস্থা একটি বিপদজনক পরিস্থিতির সংকেত দেয় যেখানে বাজার প্রতিযোগিতা ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যার ফলশ্রুতিতে গ্রাহক স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, উদ্ভাবনী সেবার প্রসার বাজারে হ্রাস পাবে এবং সার্বিকভাবে তা মোবাইলভিত্তিক সেবার অর্থনৈতিক অবদানে নেতিবাচক প্রভাব রাখবে। পরিস্থিতি নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অতিসত্ত্বর ত্বড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি

প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক এই পরিচালক বলেন, বর্তমানে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের বাজার প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণে যেসব নীতিমালা আইন-কানুন রয়েছে সেগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবনার অবকাশ রয়েছে। দেশে প্রতিযোগিতা আইন রয়েছে-সেটি ভঙ্গ করে কোনো অপারেটর যদি ক্রস সাবসিডি, প্রতিযোগিতা ভঙ্গকারী মূল্য নির্ধারণ করে অথবা খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতাদের প্রতিযোগিতাবিরোধী অফার দেয় তাহলে সেসব নিয়ন্ত্রণে বিধান রয়েছে, কিন্তু এর যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্স সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সাবেক সচিব) ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, গ্রামের মানুষ নেটওয়ার্কের দূর্বলতা থাকলেও ব্যবহার করতে পেরেই খুশি। কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাইলে নেটওয়ার্কের গতি বৃদ্ধির বিকল্প নেই। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপকার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মো. ফজলে হুদা বলেন, ৫৭ শতাংশ রাজস্ব সরকারকে দিতে হয়। আর মাঝখানের কিছু অপারেটর বা মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দিতে হয় ২১ শতাংশ। ২৬/২৭ টাকার মধ্যে আমাদের অপারেশন পরিচালনা করতে হয়। এর মধ্যে যদি অসামঞ্জস্যপূর্ণ বাজার ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে তাহলে দুই একটি অপারেটর ঝরে পড়লে বাজারে মনোপলি প্রতিষ্ঠা হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে খুব দ্রুতই এসএমপি বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত বলেন, অপারেটরদের অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এখানে কোনো একটি অপারেটর বেশি সুবিধা নিচ্ছে কথা ঠিক না। মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটি অপারেটরের বিজনেস পলিসির কারণেই তারা অগ্রগামী হয়। আর ভুল কারণেই তারা পিছিয়ে যায়। আমরা উন্নত সেবা দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলালিংক লিমিটেডের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান কর্মকর্তা তৈমুর রহমান বলেন, ছোট অপারেটর হিসেবে আমরা খুব চাপে আছি। আমাদের প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ এবং স্ট্রাগল করতে হচ্ছে। এসএমপি বাস্তবায়িত হলে আমাদের সুবিধার পাশাপাশি নতুন করে বিদেশী বিনিয়োগ বা অন্য অপারেটর ব্যবসায় আসতে উৎসাহিত হবে।

ফাইবার এট হোমের চিফ রেগুলেটরি অফিসার আব্বাস ফারুক তাদের নিজেদের বাজার প্রতিযোগিতায় চরম বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক সময় সিটিসেল বাজারে মনোপলি করত। এর পর গ্রামীণ টেলিকম ইনকামিং এবং আউটগোয়িং উভয়কলে ১০ টাকা করে চার্জ নিত। আবারো সেই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একটি অপারেটর ৫২ শতাংশ বাজার দখল করে আছে আর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান . শতাংশ বাজার দখল করে আছে। বৈষম্যের কারণেই নতুন করে বিদেশি বিনিয়োগ বা দেশি বিনিয়োগ আসতে চাচ্ছে না টেলিকম খাতে।

সময় আরো বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সংগঠনের উপদেষ্টা . কামরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট বেলাল প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১১মার্চ/এমএইচ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

রবিবার খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্লাস

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

হাসিনা-থাভিসিন দ্বিপাক্ষীক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা স্বেচ্ছাচারিতামূলক: টিআইবি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

একযোগে আট বিভাগে সম্পন্ন হলো ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা

৭৬ বছরের রেকর্ড ভাঙছে তাপপ্রবাহ

তাপপ্রবাহে রেলের কর্মীদের জন্য ৫ নির্দেশনা

মানবসম্পদ উন্নয়নে উচ্চ শিক্ষার বিকল্প নেই: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :