চীনের মধ্যস্থতায় ঐক্য সংলাপে বসছে ফাতাহ-হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০০ | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৪

চীনের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী (গাজা উপত্যকার শাসক) হামাস ও তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ (পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের শাসক) গোষ্ঠী ফাতাহের প্রতিনিধিরা বেইজিংয়ে ঐক্য সংলাপে বসতে যাচ্ছেন। শিগগিরই এই সংলাপ শুরু হবে বলে শুক্রবার নিশ্চিত করেছেন এই দুই গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী দেখতে চাই এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যেসব রাজনৈতিক পক্ষ সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে ঐক্য স্থাপন করতে চায়, তাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’

গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম চীন সফরে যাচ্ছে হামাসের কোনো প্রতিনিধিদল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে চীনা কূটনৈতিক ওয়াং কেজিয়ান কাতারে হামাসের প্রধান নেতা ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সে সময় বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই শান্তি সংলাপের প্রস্তাব দেন ওয়াং কেজিয়ান এবং হানিয়াও তাতে সম্মতি দেন।

শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের প্রতিপক্ষ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য স্থাপনই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য।

রয়টার্স জানিয়েছে, এই সংলাপে যোগ দিতে ফাতাহ গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ নেতা আজাম আল আহমেদের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল চীনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আর হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন ওই গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক। তারাও শুক্রবার বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

প্রসঙ্গত গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম- তিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত ফিলিস্তিন। ২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করছে সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। অন্যদিকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ক্ষমতায় রয়েছে রাজনৈতিক দল ফাতাহের নেতৃত্বাধীন জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি-পিএ)। আর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ফিলিস্তিনের বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃত।

দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধিতার প্রধান ইস্যু স্বাধীনতা অর্জনের পন্থা নিয়ে। একদিকে ফাতাহ সংলাপ এবং রাজনৈতিক তৎপরতার ভিত্তিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। অন্যদিকে হামাস বিশ্বাস করে, সশস্ত্র সংগ্রামে ইসরায়েল রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করার মাধ্যমেই কেবল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন সম্ভব।

মূলত গত ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফের গুরুত্ব সহকারে সামনে আসে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্থাপনের ইস্যুটি। তবে এক্ষেত্রে একটি বড় বাধা ছিল হামাস ও ফাতাহের অনৈক্য ও পরস্পরের প্রতি বৈরী মনোভাব।

চীন সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক প্রভাব প্রদর্শন করেছে, ২০২৩ সালে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে শান্তি স্থাপনে নেতৃত্ব দিয়েছিল বেইজিং।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও শুক্রবার বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন যে চীন কীভাবে মধ্যপ্রাচ্যসহ বৈশ্বিক সংকটে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে।

অন্যদিকে চীনা কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ওকালতি বাড়িয়েছে, বৃহত্তর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি শান্তি সম্মেলন এবং একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচির আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

(ঢাকাটাইমস/২৭এপ্রিল/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :