সুনামগঞ্জে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২০ প্রার্থীর দুজন কোটিপতি

​​​​​​​নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০২৪, ২১:০৬

দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে সুনামগঞ্জের চারটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২০জন প্রার্থী। ধর্মপাশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এসব নির্বাচন হবে। এরমধ্যে একমাত্র মহিলা প্রার্থী হিসেবে ধর্মপাশা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নাসরিন সুলতানা দিপা।

দিপা সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি শিক্ষায় পিছিয়ে থাকলেও সম্পদে সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে আছেন। হলফনামা অনুযায়ী তার সম্পদ রয়েছে তিন কোটি ৭৫ লাখ ৪২ হাজার ৭১৪ দশমিক ৭৫ টাকার। সম্পদে দ্বিতীয় স্থানে আছেন এস আর হায়দার চৌধুরী লিটন। হলফনামা অনুযায়ী তার রয়েছে দুই কোটি ৬৭ লাখ ৯৮ হাজার ৩৫৫ টাকার সম্পদ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী, বিএনপির একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। স্বশিক্ষিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বাশার তালুকদার। প্রার্থীদের মধ্যে মামলায় অভিযুক্ত নন পাঁচজন এবং দায় দেনাও নেই পাঁচজনের। প্রার্থীদের মধ্যে আছেন আইনজীবী, ব্যবসায়ী, কৃষিজীবী সমাজসেবী।

নাসরিন সুলতানা দিপা হলফনামায় লিখেছেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেশি পাশ। পেশা উল্লেখ করেছেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমাজসেবা। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সম্মানি হিসেবে বাৎসরিক আয় করেন ৫৪ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ দুই কোটি ৮৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭১৪ দশমিক ৭৫ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভূক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার দুই লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এক লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র এক লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে কৃষি জমি ৪৮ লাখ চার হাজার টাকা, দালান ৫০ হাজার টাকা। তিনি মামলায় অভিযুক্ত নন এবং দায় দেনাও নেই।

অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস আর হায়দার চৌধুরী লিটনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.কম (সম্মান), এলএলবি। পেশা উল্লেখ করেছেন আইনজীবী ব্যবসা। ব্যবসা থেকে তিনি বাৎসরিক ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং আইন পেশা থেকে লাখ ৪১ হাজার ৯৭৮ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ দুই লাখ টাকা, ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৫২ টাকা, এফডিআর ৫০ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকা, স্ত্রী স্বামীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণ এক লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা। অন্যান্য (ব্যবসার পুঁজি) ৩৪ লাখ আট হাজার ৭২৫ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে .০৭৮০ একর কৃষি জমি ২৪ লাখ টাকা, .০৬১৭৪০ একর অকৃষি জমি ২৯ লাখ টাকা, পাকা দালান ২০ লাখ টাকা। তিনি কোনো মামলায় অভিযুক্ত নন এবং দায় দেনাও নেই।

এদিকে ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস এইচ.এস.সি পাস। পেশায় কৃষক। কৃষি খাত থেকে বাৎসরিক ৬০ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে তিন লাখ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ চার লাখ টাকা, স্ত্রী/স্বামীর নামে তিন ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৬০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা অন্যান্য ২৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে কৃষি জমি সাত একর (ক্রয়সূত্রে) সাত লাখ টাকা, পৈত্রিক সম্পত্তি তিন একর, অকৃষি জমি এক একর (পৈত্রিকসূত্রে), তিনটি হাফ বিল্ডিং ঘর (পৈত্রিকসূত্রে) তিনি বর্তমানে কোনো মামলায় অভিযুক্ত নন। তবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ধর্মপাশা শাখায় এক লাখ ২০ হাজার টাকার কৃষি ঋণ সোনালী ব্যাংক ধর্মপাশা শাখায় এক লাথ টাকা দায় দেনা রয়েছে।

অন্যদিকে ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ বি. পাশ। ধান চালের ব্যবসা থেকে তিনি বাৎসরিক চার লাখ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৫০ হাজার টাকা, একটি মোটরসাইকেল লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা, ভরি স্বর্ণালংকার ৮০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৭০ হাজার টাকা, ব্যবসার পুঁজি ১১ লক্ষ হাজার ৩২৫ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে .০০ একর কৃষি জমি লক্ষ টাকা, দুতলা বিশিষ্ট একটি দালান ১৫ লক্ষ টাকা। তিনি বর্তমানে কোন মামলায় অভিযুক্ত নন এবং দায় দেনাও নেই।

ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর সবোর্চ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা এম.এস.এস। পেশায় তিনি আইনজীবী। বাৎসরিক তিনি লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ লক্ষ টাকা, একটি পুরাতন পালসার মোটরসাইকেল, স্ত্রী স্বামীর নামে ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ০৫ শতাংশ বসতবাড়ি। তার বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞ জেলা দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা রয়েছে (চূড়ান্ত রিপোর্ট) কোন দায় দেনা নেই।

এবং মো. বাশার তালুকদার স্বশিক্ষিত। কৃষি খাত থেকে তিনি বাৎসরিক লক্ষ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ লক্ষ টাকা, স্বর্ণ লক্ষ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী লক্ষ টাকা এবং আসবাবপত্র লক্ষ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে কৃষি জমি ১৫ একর, অকৃষি জমি ৩৫. শতাংশ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, দালান (বাণিজ্যিক) লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, টিনসেড ঘর লক্ষ টাকা। তিনি মামলায় অভিযুক্ত নন এবং দায়দেনাও নেই।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :