আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি নিয়ে আশাবাদী সরকার
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে রিজার্ভের স্থিতি ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ঋণের তৃতীয় কিস্তি সময়মতো পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সরকার।
প্রতিশ্রুত ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বৈঠকের পর তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার বিকেলে আইএমএফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ, রাজস্ব আদায়, আর্থিক ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়েছে দুই পক্ষই। ফলে ঋণের পরবর্তী কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক।’
আইএমএফের সঙ্গে সমাপনী বৈঠক হওয়ার কথা ছিল বুধবার। কিন্তু একদিন আগেই বৈঠকটি হয়।
বেশ কিছু লক্ষ্য পূরণের শর্ত দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাত কিস্তিতে ছাড় করা হবে এই ঋণ।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তিতে আইএমএফ ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার ছাড় করে। ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ছাড় করা হয় ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। এবার তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলার ছাড় করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বৈশ্বিক ঋণদানকারী এই সংস্থা।
তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে ঋণের শর্ত পূরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে গত ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশে আসে সংস্থাটির একটি প্রতিনিধিদল। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সাথে বৈঠক করছে।
বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে অগ্রগতি জানাবে আইএমএফ।
এদিকে আগামী জুনে নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভের (এনআইআর) লক্ষ্যমাত্রা ১৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে আনার প্রস্তাব আইএমএফকে দিয়েছে সরকার। কেননা চলমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন।
বর্তমানে আইএমএফ জুনের জন্য রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। সংস্থাটির ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় ঋণের চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার অন্যতম শর্ত এটি। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যৌথসভায় আইএমএফের সফররত দলকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।
ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে আট সদস্যের আইএমএফ দল ঋণ কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যালোচনার জন্য গত ২৪ এপ্রিল থেকে ঢাকায় আছে। এরপর ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের ঋণের তৃতীয় কিস্তি দেওয়া হবে।
জুনে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৭মে/কেএ/এসআইএস)