‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাসকে ভাষা আন্দোলন থেকে বিচার করলে তা হবে আংশিক’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাসকে ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব অথবা ১৯৪৮-১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বিচার করলে, তা হবে আংশিক ও অপূর্ণাঙ্গ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উত্থানের ইতিহাসকে বুঝতে হলে বাঙালির হাজার বছরের আত্মপরিচয়ের সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের নির্মাণের ধারাবাহিকতায়। এই আত্মপরিচয় নির্মাণের বিকাশধারায় বাংলা ভাষার বিবর্তন, বাঙালির সংশ্লেষবাদী ধর্মবিশ্বাস এবং স্বতন্ত্র জীবনধারায় বাঙালির আত্মপরিচয়কে পরিপূর্ণতা দিয়েছে।’
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফার আহমেদ চৌধুরী মিনায়তনে 'বাংলাদেশ জাতি-রাষ্ট্রের উত্থান' শীর্ষক বক্তৃতা উপস্থাপনকালে তিনি এসব বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, হাজার বছর ধরে বাঙালির যে ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা, অসাম্প্রদায়িক আদর্শের মাধ্যমে বাঙালিদের মধ্যে যে জাতিস্বত্ত্বার উন্মেষ ঘটেছে, তারই রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রীয় রূপ হলো স্বাধীন বাংলাদেশ। এভাবেই একটা দীর্ঘ ঐতিহাসিক পথ পরিক্রমার মধ্যে দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা যদি বছরের ক্যানভাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে, তাহলে জাতির অভ্যুদয়ের ইতিহাস আংশিকও বোঝা যাবে না। বাংলা ভাষার কবি আব্দুল হাকিম, কবি রামনিধিগুপ্ত ও জীবনান্দ দাশ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকারী হাজী শরিয়তুল্লাহ, তীতুমীর ও মাস্টার দা সূর্যসেন এবং বাংলা ভাষার আদি গ্রন্থ চর্যাপদ সহ দেড় হাজার বছরের অসংখ্য ইতিহাসকে বাদ দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বুঝতে পারা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাসনের পেছনে ছিলো এই দেড় হাজার বছরের ইতিহাস।
বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক (বিপিএসএন) কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী। সঞ্চালক ছিলেন অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ। হারুন-অর-রশিদের সংক্ষিপ্ত জীবনী উপস্থাপন ও স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছিমা খাতুন, ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ড. শান্তনু মজুমদার ও ড. মুহাম্মদ সোহরাব হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম, ড. মামুন আল মোস্তফা, মো. মনিরুল ইসলাম ও ড. মুহাম্মদ বদরুল হাসান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লুৎফর নাহার প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এসকে/কেএম)

মন্তব্য করুন