সেলিম প্রধানের বাসায় হামলা: অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের কর্ণধার সেলিম প্রধানের নারায়ণগঞ্জের বাড়িতে হামলাকারীদের বিচার চেয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন সেলিম প্রধান ও তার পরিবার।
সোমবার প্রেসক্লাবের জহুর আহমেদ চৌধুরী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধান বলেন, ‘আমার বাড়িতে যে হামলা হয়েছে তাতে আমার পরিবার আতঙ্কিত। সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।’
হামলার ঘটনার তিনদিন পার হওয়ার পরেও কোনো মামলা হয়নি উল্লেখ করে সেলিম প্রধান বলেন, ‘আমরা মামলার জন্য কয়েকবার থানায় কথা বলেছি। আমার স্ত্রী রাশিয়ান এম্বাসির সঙ্গে আলাপ করেছে। এম্বাসি থেকে থানায় মামলা করতে বলেছে। থানায় মামলা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু দুখের বিষয় হচ্ছে আজকে তিনদিন পার হয়ে গেল এখননো কোনো মামলা নেওয়া হয়নি। এমনকি কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।’
‘রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা সাওঘাট এলাকার সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের অন্যায়, অবিচারের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার নিমিত্তে’ শীর্ষক শিরোনামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধানের স্ত্রী আনা প্রসভেতোভা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধানের স্ত্রী আনা প্রসভেতোভা বলেন, ‘ঘটনার সময় তিন সন্তানকে নিয়ে খুবই আতঙ্কে ছিলাম। দীর্ঘ সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের বাসায় আক্রমন চালায়। যা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার সষ্ঠু বিচার চাই, যেন দ্রুত ওইসকল সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হয়। এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ সময় সেলিম প্রধান আরও বলেন, ‘এই ঘটনার পর থেকে আমার স্ত্রী খুবই আতঙ্কিত। আমার বাচ্চাদের অবস্থাও ভালো নেই। এই সন্ত্রাসী বাহিনী প্রথমে সকাল ৭ টায় হামলা শুরু করে। পরে আবার দুপুর ৩ টায় হামলা চালায়। দিনে দুপুরে দফায় দফায় এমন হামলা এদেশে কখনই কাম্য নয়। সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে, এই ঘটনার এমন এক দৃষ্টান্ত তৈরি করুক যাতে বাংলাদেশের কোথাও এমন ঘটনা যেন না ঘটে৷’
তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জের সংসদ সদস্যের কাছে অনুরোধ করব— আপনি প্রশাসনকে বলুন এই ঘটনার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।’
রুপগঞ্জে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই দাবি করে সেলিম প্রধান বলেন, ‘আমার সঙ্গে আমার বাড়িতে তারা যা করেছে; তাতে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে তা চিন্তা করুন। বাংলাদেশে কোথাও কোনো ঘটনা না ঘটলেও রুপগঞ্জে প্রতিনিয়ত নানা ঘটন-অঘটন ঘটছে।
তিনি বলেন, ‘রুপগঞ্জে এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে কেউ শান্তিতে থাকতে পারে না। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালায়। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে— আসুন আমরা এই সব সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করি। তাহলেই রুপগঞ্জকে পরিবর্তন করতে পারব। প্রশাসন সহযোগীতা করলে এটা সম্ভব হবে।’
রূপগঞ্জে বেশ কিছু বাহিনী সক্রিয় আছে উল্লেখ করে সেলিম প্রধান বলেন, ‘রূপগঞ্জের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বালু হাবিবের আপন ছোট ভাইয়ের বাহিনীর নাম ‘‘আজাবর’’ বাহিনী। আরেক বাহিনী হচ্ছে ‘‘ইমরান বাহিনী’’। এরা রুপগঞ্জে কেউ না। এরা সিনামাকেও হার মানাবে। এসব বাহিনী রুপগঞ্জে ওপেন মাদকের ব্যবসা করে। এরা রুপগঞ্জকে একপ্রকার ক্রাইম জোনে পরিণত করেছে।’
সেলিম প্রধান আরও বলেন, ‘রুপগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান বালু হাবিব রুপগঞ্জকে এক ভয়াবহ অবস্থায় নিয়ে গেছে। গেল শুক্রবার আমার বাড়িতে যে হামলা হয়েছে তা এর সব থেকে বড় প্রমাণ। সে ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কাউকে এরেস্ট করা হয়নি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে রূপগঞ্জের সবাই চেনে।’
দেশের এমন পরিস্থিতি দেখলে বিদেশি কেউ এদেশে বিনিয়োগ করতে চাইবে না উল্লেখ করে সেলিম প্রধান বলেন, ‘বর্তমান সরকার ফরেন ইনভেস্টমেন্টের জন্য নানা জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করছে। আমি ছোটবেলা থেকে জাপানে বড় হয়েছি, আমার জাপানের অনেক বন্ধু বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে চায়। কিন্তু এধরণের পরিস্থিতি দেখে কেউ দেশে ইনভেস্ট করতে চাইবে না।’
রুপগঞ্জে জাইকার ইন্ডাসট্রিয়াল পার্ক হচ্ছে উল্লেখ করে সেলিম প্রধান বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে। যাতে বিদেশিরা মনে করেন বাংলাদেশে কোনো ক্রিমিনাল কান্ট্রি না, এটা শান্তিপ্রিয় দেশ।’
(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এমআই/এসআইএস)

মন্তব্য করুন