জমি কেনায় প্রায় শত কোটি টাকা কম দেখিয়েছেন বেসিক ব্যাংক খেকো সেই শেখ আবদুল হাই

বেসিক ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির হোতা ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুর বিরুদ্ধে জমির দাম কম দেখিয়ে প্রায় শতকোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাচ্চুর বিরুদ্ধে এটিই প্রথম চার্জশিট।
ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় নিজ নামে, স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে এসব জমি কিনেছিলেন বাচ্চু, যার পরিমাণ প্রায় ৩০ কাঠা। এই জমির প্রকৃত দাম ছিল ১১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিনি ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা দর দেখান।
দুদক বলছে, জমির দাম কম দেখিয়ে ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। নিজের অবৈধ সম্পদ কম দেখাতেই তার এই চেষ্টা। যার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে ৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করেন।
এই অভিযোগে ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর আবদুল হাই, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার, আবদুল হাইয়ের ভাই শেখ শাহরিয়ার ওরফে পান্না, আবদুল হাইয়ের মেয়ে শেখ রাফা হাই ও ছেলে শেখ ছাবিদ হাই এবং দলিলদাতা আমিন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। সেই মামলায় সোমবার আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত ব্যক্তি শেখ আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে এর আগে দুদক ৫৮টি মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছিল।
২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে পান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু। দুই দফায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন। এ সময় ব্যাংকটি থেকে ২ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ অসংখ্য কর্মকর্তা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া, অতিমূল্যায়িত বা অস্তিত্বহীন বন্ধকের বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। আসামিরা ঋণের নামে বেসিক ব্যাংক থেকে প্রায় ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
আবদুল হাই নানাভাবে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ করে বিপুল পরিমাণে জমি কিনেছিলেন, ব্যবসা শুরু করেছিলেন, বাড়ি করেছিলেন। যার ফলে একসময়ের ভালো ব্যাংক হিসেবে পরিচিত বেসিক ব্যাংক সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে নেমে যায়। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০১৪ সালের ৫ জুলাই পদত্যাগ করেন আবদুল হাই।
ঢাকাটাইমস/২৮মে/ইএস

মন্তব্য করুন