রাত পোহালেই কুমিল্লার ৪ উপজেলায় ভোট

বুধবার (২৯ মে) ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩য় ধাপে কুমিল্লার চার উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে প্রচার প্রচারণা। শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে ছিলেন মরিয়া। গিয়েছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। দিয়েছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।

কুমিল্লার চার উপজেলা হলো দেবিদ্বার, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও মুরাদনগর।

ইতোমধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ৪টি উপজেলার ৫০৭টি ভোট কেন্দ্রের ৩ হাজার ১৮৫টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণের জন্য ৫০৭ জন প্রিসাইডিং অফিসারসহ ১০ হাজার ৫০৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

জানা যায়, চার উপজেলায় ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন রয়েছেন।

এসব উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১২ লাখ ৯২ হাজার ৪৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৭২ হাজার ২৭২ জন এবং নারী ভোটার ছয় লাখ ২০ হাজার ১৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৪জন।

এর মধ্যে দেবিদ্বার উপজেলায় তিন লাখ ৮১ হাজার ৭৪৬ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৯৯ হাজার ৬৫৫ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন। এ উপজেলায় ভোট কেন্দ্র ১২৩ টি এবং ভোট কক্ষ ৮৭০ জন। ১২৩ জন প্রিজাইডিং অফিসারসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন তিন হাজার ছয় জন। এ উপজেলায় নয়জন প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন জন। তারা হলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ (আনারস) এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের সহধর্মিণী শাহিদা আক্তার (ঘোড়া) এবং তার মেয়ে খাদিজা বিনতে রোশন (দোয়াত কলম প্রতীক)।

এছাড়াও, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বুড়িচং উপজেলায় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৬৬ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৩৩ হাজার ৩৫৬ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ২৩ হাজার ৭১০ জন। এ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ১২১টি এবং ভোট কক্ষ ৬৭১টি। ১২১ জন প্রিসাইডিং অফিসারসহ দুই হাজার ৩৪৭ জন কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করবেন। এ উপজেলায় ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখলাক হায়দার (ঘোড়া), তার ভাই জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য তারিক হায়দার (টেলিফোন), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম (দোয়াত-কলম) এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বাছির খান (আনারস)। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

হ্মণপাড়া উপজেলার এক লাখ ৮৬ হাজার ২০৮ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯৭ হাজার ১৪৩ জন এবং হিজরা এক জন, নারী ভোটার ৮৯ হাজার ৬৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার এক জন। ভোট কেন্দ্র ৭২টি এবং ভোট কক্ষ ৪৬৪টি। ৭২ জন প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন এক হাজার ৬১১ জন । এ উপজেলায় ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরী (আনারস), আমিনুল ইসলাম সুজন (দোয়াত কলম), আবু তৈয়ব অপি (ঘোড়া) ও সরকার জহিরুল হক মিঠুন (টেলিফোন)। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয় জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মুরাদনগর উপজেলায় চার লাখ ৬৭ হাজার ৪৪০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৪২ হাজার ১১৮ জন, মহিলা ভোটার দুই লাখ ২৫ হাজার ৩১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিন জন।

এ উপজেলায় ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার জন। তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোর (আনারস), মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার (ঘোড়া), রাশেদ হায়দার জুয়েল (হেলিকপ্টার), বশির আহমেদ (কাপ-পিরিচ)। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, নির্বাচন সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য এবং ভোটারদের নিরাপত্তা রক্ষায় বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব, আনসার ও স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৮মে/প্রতিনিধি/পিএস)