ব্রিটিশ তেলবাহী জাহাজে হুতির ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০১ | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩

লোহিত সাগরে ইয়েমেনের উপকূলে যুক্তরাজ্যের মালিকানাধীন একটি অপরিশোধিত তেলের ট্যাঙ্কারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি। জাহাজটিতে কমপক্ষে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শনিবার এক টেলিভিশন ভাষণে হুতি গোষ্ঠীটির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া বলেছেন, ‘অ্যান্ড্রোমিডা স্টার’ নামক একটি ব্রিটিশ জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং তাদের যোদ্ধারা এতে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানতে সমর্থ হয়েছে। তবে জাহাজটি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে বিষয়টিও এখনো স্পষ্ট নয়।

ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি এজেন্সি- ইউকেএমটিও জানিয়েছে, ঘটনাটি ইয়েমেনের মোচা শহর থেকে প্রায় ১৫ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটেছে। পানামার পতাকাবাহী জাহাজটিতে দুবার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো আহত বা মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি এবং ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

ইউকেএমটিওর মতে, প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জাহাজে একটি বিস্ফোরণ ঘটায় এবং দ্বিতীয় হামলায় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে আঘাত হানে বলে মনে করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা আমব্রে বলেছে, ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাইজ প্রদেশ থেকে তিনটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডও (সেন্টকম) হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলছে, হামলায় অ্যান্ড্রোমিডা স্টার জাহাজটি ছোটখাটো ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তবে সমুদ্রযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন জানিয়ে দুই মাস ধরে লোহিত সাগরে চলাচলরত বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। এতে লোহিত সাগরের এ রুটে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ম্যার্স্ক, সিএমএ সিজিএমসহ বড় বড় শিপিং প্রতিষ্ঠানগুলো।

এরপরই হুতিদের আক্রমণ থেকে লোহিত সাগরের এ সমুদ্র পথকে নিরাপদ রাখতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডাসহ ১০টি দেশ নিয়ে সামুদ্রিক জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। গত ১২ জানুয়ারি থেকে হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে ইয়েমেনে বেশ কয়েক দফায় সরাসরি বিমান হামলা চালায় ব্রিটিশ ও মার্কিন বাহিনী।

তবে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে তাদের এ আক্রমণ অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, এশিয়া থেকে ইউরোপের পথে লোহিত সাগর হলো সবচেয়ে সহজ রাস্তা। লোহিত সাগর থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে সুয়েজ খাল ধরে যায় এই রাস্তা। এই রাস্তা এড়াতে হলে আফ্রিকায় ঢুকতে হবে। আফ্রিকার সেই ঘুরপথেই আপাতত চলাচল করছে অধিকাংশ পণ্যবাহী জাহাজ।

এর ফলে জাহাজগুলোর চলাচলের সময় অন্তত এক সপ্তাহ বেড়ে গেছে। যেতে হচ্ছে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার নটিকাল মাইল। এর ফলে জাহাজ চলাচলের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। বস্তুত, সুয়েজ খাল দিয়ে বিশ্বের ১২ শতাংশ বাণিজ্য সঞ্চালিত হয়। সেই ব্যস্ত রাস্তা এখন কার্যত খালি।

(ঢাকাটাইমস/২৭এপ্রিল/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :