ঈদে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা: মধ্যরাতে তেজগাঁওয়ে বিশেষ চেকপোস্টে ডিসি
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে বাড়ি ফেরা শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজধানীজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা।
বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিপণি বিতানগুলো ঘিরে রয়েছে পুলিশের কড়া পাহারা। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে বিশেষ চেকপোস্ট, যা তদারকি করতে দেখা গেছে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের। মধ্যরাতেও চেকপোস্টে কর্তব্যরত অবস্থায় দেখা গেছে ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগের উপকমিশনার ও সহকারী কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদেরও।
রাত দেড়টার দিকে তেজগাঁওয়ের নাভানা টাওয়ারের সামনে দেখা যায় পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কর্মকাণ্ড তদারকি ও নির্দেশনা দিচ্ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক। ডিসি নিজেও অংশ নিয়েছিলেন চেকপোস্টে। তল্লাশি করছিলেন সন্দেহভাজন গাড়ি ও পথচারীদের। আর মধ্যরাতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পেয়ে কাজের গতি বেড়ে গিয়েছিল কর্মরত পুলিশ সদস্যদের। চেকপোস্টটিতে থানা পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এ সময় ঢাকা টাইমসকে ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, ‘আইজিপি স্যারের নির্দেশনা আছে, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ যাতে নিরাপত্তার সঙ্গে বাড়ি ফিরতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা। এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে কোনো নাশকতাকারী যেন কোনো নাশকতা না ঘটাতে পারে, যেটা মানুষের জানমালের জন্য হুমকি হবে। এজন্য আমরা যানবাহনের ওপর বিশেষভাবে নজর রাখছি এবং চেকপোস্টের আওতায় আনছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাতে করে কোনোরকম মাদক, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ছিনতাইকারী সড়কে অবাধে ঘোরাফেরা না করতে পারে বা ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা সংঘটিত না করতে পারে, এজন্য তেজগাঁও ডিভিশনের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছি। আর এই চেকপোস্টগুলোতে ঠিকমতো কাজ হচ্ছে কি না সেটা আমরা এবং আমাদের অফিসাররা নিয়মিত তদারকি করছেন।’
চেকপোস্ট বসানোর ক্ষেত্রে কোন এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, ‘স্থায়ী চেকপোস্টগুলোতে নিয়মিত অভিযান চলমান আছে। এর বাইরে প্রয়োজন বুঝে বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। বিশেষ করে হাতিরঝিল, বিজয় সরণির মতো অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।’
এই চেকপোস্টে থাকা একাধিক পুলিশ সদস্য ঢাকা টাইমসকে জানান, রমজানে তেজগাঁও বিভাগের পক্ষ থেকে যেসব নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে সেগুলো ডিসি স্যার নিজে রাতে এসে তদারকি করেন। তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে উৎসাহ দেন। প্রায়দিনই সেহরি পর্যন্ত একেক চৌকিতে অবস্থান করেন। পরে সেহরি খেতে চলে যান।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঈদ উপলক্ষে ঢাকাসহ বড় শহর ও গ্রামেও নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আর গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ঈদুল ফিতরে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।
(ঢাকাটাইমস/৪এপ্রিল/এআর)