ইসরায়েলে হামলার আগে সতর্ক করেছিল ইরান, যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকার

তুরস্ক, জর্ডান এবং ইরাকের কর্মকর্তারা রোববার বলেছেন, ইসরায়েলে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক দিন আগে তাদেরকে বিস্তৃত নোটিশ দিয়েছে ইরান। তবে মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, তেহরান ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেনি এবং হামলায় ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করার লক্ষ্যেই এটি করেনি ইরান। খবর রয়টার্সের
সিরিয়ায় ইরানের কূটনৈতিক মিশনে ১ এপ্রিলের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার গভীর রাতে ইসলামিক বিপ্লব গার্ড কর্পস এবং অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল-অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান রোববার বলেছেন, ইরান প্রতিবেশী দেশ এবং ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে ৭২ ঘণ্টার নোটিশ দিয়ে জানিয়েছিল- তারা হামলা চালাবে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা হামলার আগে ওয়াশিংটন এবং তেহরান উভয়ের সঙ্গেই কথা বলেছিল এবং হামলার পর প্রতিক্রিয়া যেন আনুপাতিক থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আঙ্কারা মধ্যস্থতাকারী হিসাবে একে অপরের বার্তা উভয়পক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
তুরস্কের একটি কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ‘ইরান জানিয়েছিল- দামেস্কে তার দূতাবাসে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হবে এবং তারা এর বাইরে আর কিছুই করবে না। আমরা এই হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত ছিলাম। আর তাই ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা আমাদের কাছে অবাক করার মতো কিছু ছিল না।’
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আবদুল্লাহিয়ানের বিবৃতি অস্বীকার করে বলেছেন, ওয়াশিংটন সুইস মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু ৭২ ঘণ্টা আগে তারা কোনও নোটিশ পায়নি।
এই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি একেবারেই সত্য নয়। তারা কোনও নোটিশ দেয়নি, বা তারা (হামলার বিষয়ে) কোনও ধারণাও দেয়নি ... এমন কোনও ধারণা দেয়নি যে, ‘এরা লক্ষ্যবস্তু হবে, তাই তাদের সরিয়ে দিন।’
তিনি আরও বলেছেন, হামলা শুরু হওয়ার পরেই তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল ‘অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক’। ইরানের ব্যাপক সতর্কতার মিথ্যা দাবি করছে।
মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেন, ‘হামলার মধ্যেই আমরা ইরানিদের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছি, সুইসদের মাধ্যমে। সেই বার্তায় হামলা সম্পন্ন হয়েছে বলে মূলত ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, তবে হামলা তখনও চলমান ছিল। সেসময় আমাদের কাছে এটিই ছিল (তাদের) বার্তা।’
অন্যদিকে ইরাকি, তুর্কি এবং জর্ডানের কর্মকর্তাদের প্রত্যেকে বলেছেন, ইরান গত সপ্তাহে কিছু বিশদ বিবরণসহ হামলার বিষয়ে প্রাথমিক সতর্ক বার্তা দিয়েছে। ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলায় বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং সংঘর্ষ বাড়তে পারে।
মার্কিন কর্মকর্তারা শুক্রবার এবং শনিবার বলেন, তারা ইরানের কাছ থেকে অল্প সময়ের মধ্যে আক্রমণের আশঙ্কা করছেন এবং সেসময় তেহরানের কাছে কঠোরভাবে বাইডেনের একমাত্র বার্তা ছিল: ‘(ইসরায়েলে হামলা) করবেন না।’
(ঢাকাটাইমস/১৫এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন