ভিন্নমত নির্মূলে প্রশাসন ও আদালতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার: গণঅধিকার পরিষদ

ভিন্নমত নির্মূলে প্রশাসন ও আদালতকে সরকার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, ভিন্নমত দমন ও সরকার বিরোধীদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করতে ও হয়রানির উদ্দেশ্যেই এই ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন ভারতীয় তাঁবেদার সরকার দেশে একদলীয় শাসন স্থায়ী করতে ভিন্নমত নির্মূলে প্রশাসন, আদালতকে দলীয়করণ করে আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, ২০২২ সালে ছাত্রলীগের এক নেতার করা ভিত্তিহীন একটি মামলায় চট্টগ্রামের আদালত গতকাল ডাকসুর সাবেক ভিপি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে এ সময়ের জনপ্রিয় নেতা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিলুপ্ত হয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন হলেও ২০২২ সালে নুরুল হক নুরের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কথিত মানহানির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানিমূলক মামলাটি দায়ের করেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার।
তিনি বলেন, একতরফা ডামি করতে নির্বাচনের পূর্বে বিরোধীদের গণগ্রেপ্তার, রাতে আদালত বসিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের শাস্তি এবং তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সরল স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় আদালতও এখন সরকারের তল্পিবাহকে পরিণত হয়েছে। বিচারব্যবস্থাও কার্যত এখন সরকারের হাতে বাক্সবন্দি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসও যার ভুক্তভোগী।
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশ এক গভীর রাজনৈতিক ও ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, লুটপাট, অর্থপাচারে জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে কেএনএফের মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান। সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক প্রতিনিয়ত বাংলাদেশিদের হত্যা, চেকিং ও যথোপযুক্ত শুল্ক ব্যতীত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সড়ক ও নৌপথ ব্যবহার করে ভারতকে ট্রানজিট, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপ, এমনকি বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ঢাকায় ঈদের পূর্বে ভারতের বন্ধুরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিশেষ বিমানের অবতরণে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে জনগণের মতো আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
‘গণঅধিকার পরিষদ বরাবরই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপসহীন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপ, সীমান্তে হত্যা ও ৫৪ অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা না দেওয়ার প্রতিবাদে বাংলাদেশের জনগণ যখন দেশে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জন করছে, গণঅধিকার পরিষদ জনগণের সঙ্গে থেকে সে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। ভারতীয় তাঁবেদার সরকার গণঅধিকার পরিষদের এই আপসহীন কণ্ঠ থামিয়ে দিতেই গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ডাকসুর সাবেক ভিপি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এদেশের মানুষের কাছে এক সংগ্রামী চরিত্রের নাম। হামলা-মামলা করে অতীতেও তার মনোবল দমন করা যায়নি, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেও তার মনোবল দুর্বল করা যাবে না।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে বিরোধী দলসমূহের সাথে গণঅধিকার পরিষদের আপসহীন যুগপৎ আন্দোলন চলছে, ফ্যাসিবাদের পতন না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, সহ-সভাপতি বিপ্লব কুমার পোদ্দার, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১৬এপ্রিল/জেবি/ইএস)

মন্তব্য করুন