শরীয়তপুরের কাজির হাটে প্রতিদিন বিক্রি হয় শ্রমিক

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ মে ২০২৪, ১৪:২০

ভোর হলেই সড়কের দুই পাশে জড়ো হয় শত শত শ্রমিক। আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী এখান থেকে শ্রমিক কিনে যায়। দুপুর ২টা বা ৩টা পর্যন্ত কাজ শেষে পারিশ্রমিক নিয়ে আবার শ্রমিকরা ফিরে আসেন কাজীরহাট এলাকায়।

বলছিলাম শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ডুবিসায়বর বন্দর (কাজীরহাট) বাজারের কথা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শ্রমিকরা কাজের জন্য পরিবার নিয়ে বা পরিবার ছাড়াই এখানে এসে স্থানীয় বাড়িগুলোতে ভাড়ায় থেকে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। সময় ও কাজের ধরন অনুযায়ী দিনে ৪০০ থেকে ৭০০ কিংবা ৮০০ টাকা পর্যন্ত মজুরিতে শ্রম দেন এসব শ্রমিকরা।

বুধবার আন্তর্জাতিক মে দিবসে বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এদিন সকালে সরেজমিনে গিয়ে কাজীরহাট বাজারে দেখা যায় শ্রমিকরা রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বসে আছেন বিক্রি হওয়ার জন্য। সেখান থেকে কাজের জন্য লোকজন এসে দামদর করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের পছন্দমতো শ্রমিকদের। সারাদিনে ৬-৮ ঘণ্টা কাজ করাবেন এসব শ্রমিকদের দিয়ে।

কেউ আবার থেকে যাচ্ছেন অবিক্রীত। অবিক্রীত থেকে যাওয়া মানে এদিন তাদের আর কোন কাজ করা হবে না। সারাদিন অলস সময় পার করতে হবে এই এলাকাটিতেই। আর যারা বিক্রি হচ্ছেন, তারা কেউ মাটি কাটা, কেউ খেতে আবার কেউ বিভিন্ন বাড়িতে প্রয়োজনীয় শ্রম দিবেন সারাদিন। কাজ শেষে আবার ফিরবেন এখানে, প্রস্তুতি নিবেন পরদিন বিক্রি হওয়ার জন্য।

মাটিকাটা শ্রমিক হিসেবে এই হাটে বিক্রি হতে আসা হাফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবত তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এখানে এসে একটি বাসায় ভাড়ায় থেকে শ্রমিকের কাজ করছেন। আজ তিনি অবিক্রীত থেকে গিয়েছেন বেলা ৭টা পর্যন্ত। তার মানে আজ হয়তো তিনি আর কাজ পাবেন না। এভাবেই কাটাতে হবে সারাদিন।

হবিগঞ্জ থেকে এখানে এসে এই হাট থেকে বিক্রি হয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তারা বেপারী। তিনি জানান, ব্র‍্যাক বাজারের কাছে থেকে প্রতিদিন এই হাটে উঠে তিনি বিক্রি হন কাজের জন্য। তারা বেপারী সাধারণত চাষাবাদের কাজ করে থাকেন এখানে। যা দিয়ে চলে তার সংসার। এদিন তিনি হাটে উঠেছেন বিক্রি হওয়ার উদ্দেশ্যে।

পাশের একটি গ্রাম থেকে শ্রমিক নিতে আসা সোহেল জানান, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কাজের জন্য সাধারণত শ্রমিক পাওয়া যায় না। এখানে আসলে সব ধরনের কাজের জন্যই শ্রমিক পাওয়া যায়। তাই আমার বাড়িতে মাটি কাটার জন্য আমি এখানে এসেছি কয়েকজন মাটি কাটা শ্রমিক নিতে।

চাষাবাদের কাজের জন্য শ্রমিক কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মাসুদ মিয়া। তিনি জানান, আমার পাটখেতে কাজ করার জন্য পাঁচজন শ্রমিক প্রয়োজন ছিল। তাই জাজিরা থেকে এখানে এসেছি শ্রমিক নিতে। দুপুর পর্যন্ত তাদের নিয়ে কাজ করলেই আমার খেতের কাজ হয়ে যাবে। তাই এখান থেকে পাঁচজন শ্রমিক কিনে নিয়ে যাচ্ছি।

(ঢাকা টাইমস/০১মে/প্রতিনিধি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :