সীমান্তে হত্যার ঘটনায় খেলাফত মজলিসের ক্ষোভ
গত মঙ্গলবার রাতে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক দুজন বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খেলাফত মজলিস।
বৃহস্পতিবার খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাহী বৈঠকে এ ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
সভায় নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফল। বাংলাদেশের ডামি ভোটের সরকার অতীতে এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি। কর্তৃত্ববাদী সরকারের দুর্বলতার সুযোগে নিরীহ বাংলাদেশীদের উপর বিএসএফ একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। বিএসএফের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুষ্পষ্ট অনেকগুলো প্রমাণ মিডিয়ায় রয়েছে। ভারতের এই বাহিনীকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বাংলাদেশ সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সীমান্তে আর কোনো বাংলাদেশি নাগরিক হতাহত হলে জনগণ এই সরকারকে ছাড় দেবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এবার বৈদেশিক মুদ্রার তুলনায় টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন ঘটেছে। এর প্রভাবে আমদানি ব্যয় বাড়বে, দ্রব্যমূল্য আরেক দফা বাড়বে। ব্যাংকিং খাতে একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশিত হচ্ছে। এসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে আবার টাকা ভর্তি খাম উৎকোচ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে যা নৈতিক সাংবাদিকতার জন্য চরম অপমানজনক। জনগণের আমানত লুটপাট হয়ে যাচ্ছে অথচ সরকার নির্বিকার।
খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, অদক্ষ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে দ্বিগুণ ব্যয়ে উৎপাদিত হলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে এই বিদ্যুৎ মফস্বলের মানুষের কাজে লাগছে না। উপরন্তু এই উচ্চ ব্যয়ের ঘাটতি মেটাতে বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে সরকার। শুধুমাত্র ভারতের আদানী পাওয়ার কোম্পানি ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ গত এক বছরে চার হাজার ১০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছে। এইভাবে অর্থপাচার আর লুটপাট করে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই অবস্থা থেকে দেশবাসী মুক্তি চায়।
দলটির নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যদের মধ্যে নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, অর্থ সম্পাদক আলহাজ আবু সালেহীন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. রিফাত হোসেন মালিক, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, মুফতি আবদুল হক আমিনী, জিল্লুর রহমান, জহিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শায়খুল ইসলাম, হাজী নুর হোসেন, মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, আবুল হোসেন ও প্রিন্সিপাল মাওলানা আজিজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে গাজার রাফা শহরে ইসরাইলী আক্রমণ ও হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ইসরাইলী গণহত্যা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/ জেবি/পিএস