তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতায় বিপুলসংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ মে ২০২৪, ২০:১৪

‘বাংলাদেশে বিভিন্ন জনসমাগমস্থল ও গণপরিবহনে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) এর দুর্বলতার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন’— এমন দাবি সংশ্লিষ্টদের।

তাই বিদ্যমান আইনের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আলোকে সংশোধন করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের নেতারা।

মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

‘তামাকের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে’ জানিয়ে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। একইসঙ্গে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। এর কারণ- বাংলাদেশ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখনো সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ।’

বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, ‘তামাকের ভয়াবহতা থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বিদ্যমান আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। আইনি দুর্বলতায় তামাক কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) আড়ালে তরুণদের আকৃষ্ট করছে; যা তামাক নিয়ন্ত্রণে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, ‘তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে দেশে অসংক্রামক রোগ যেমন—হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ বাড়ছে।’

বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার।’

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. তারেক মেহেদি পারভেজ ও দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. শেখ শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্-এর লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২১/টিআই/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :