যুক্তরাষ্ট্রে আমার একটা সুতাও নাই: ঢাকা টাইমসকে আজিজ আহমেদ

মেহেদী হাসান, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ মে ২০২৪, ২০:৩৭| আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১১:৩৭
অ- অ+

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটি। গণতন্ত্রের অবনতি ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণ দেখিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে যে অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় সাবেক তিনি ঢাকা টাইমসের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন।

ঢাকা টাইমস: যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

আজিজ আহমেদ: র‌্যাবের স্যাংশনটা যখন আসে তখন দেশে এগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা টকশোতে অনেকে কথাবার্তা বলেছে আমার বিষয়ে। কিন্তু এগুলো নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নাই। আমার কোনো ছেলে ওই দেশে (আমেরিকায়) পড়ে না। ওই দেশে আমার একটা সুতাও নাই বা ওই ধরনের কিছু প্রয়োজন পড়ে নাই। আমি পাঁচ বার নাকি ছয় বার ওই দেশ ভিজিট করেছি। যেহেতু ওইটা আমার দেশ না। মোহ মানুষের কতক্ষণ থাকে, তাই না! এই জিনিসটা (নিষেধাজ্ঞা) দিয়ে কী এচিভড করতে চাচ্ছে, একটা তো উদ্দেশ্য থাকে যে এজন্য দিয়ে দিলাম।

হ্যাঁ আমি বিব্রত হয়েছি কিছুটা। আমি অপমানিতবোধ করেছি। তারা যে অভিযোগগুলো দিয়েছে সেগুলো অসত্য। তারা আমাকে দুইটা এলিগেশন দিয়েছে। তার মধ্যে একটা এলিগেশন যে, আমি করাপশান করেছি, কী করাপশান সেটা- আমি অফিসিয়াল বা অন্যান্য যে প্রসিডিউর আছে সেটাকে এভয়েড করে আমি আমার পদ-পদবি ব্যবহার করে আমি নাকি আমার ভাইকে দেশের বাইরে পাঠিয়েছি। এখানে যে দুইটা এলিগেশন দিয়েছে। অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টার ম্যান আলিজাজিরায় প্রচারিত যে নাটক, সবাই যেটাকে নাটকই বলেছে, নাটকই হয়েছে, সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আসা হয়েছিল। ওইখানের এই দুইটা প্রশ্নই এখানে আছে। আর এখানে শুধু নাম মেনশন (উল্লেখ) করে নাই।

ঢাকা টাইমস: তাহলে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো কি অসত্য?

আজিজ আহমেদ: অবশ্যই এটা মিথ্যাচার, সেটা তো আমি আগেও বলেছি। কারণ প্রথম কথা হলো যে, এখানে আমার ভাইয়ের নাম যদিও মেনশন করা হয় নাই, সে ২০০২ সাল থেকে দেশের বাইরে। সে তো অবৈধ কোনো ডকুমেন্ট নিয়ে তো দেশের বাইরে যায়নি। দীর্ঘদিন তো সে ইউরোপে। আমি কোন জায়গাগুলি ইনফ্লুয়েঞ্চটা করলাম।

যখন আমি জেনারেল হলাম, জেনারেল হয়েছি তো ২০১২ সালে। আমি যখন জিওসি ছিলাম নিশ্চয়ই না। আমি যখন বিজিবির ডিজি ছিলাম অসম্ভব। আমি যখন সেনাপ্রধান হয়েছি আমি করিনি। কারণ সে তো তখন দেশের বাইরে।

ঢাকা টাইমস: সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আসেনি, এটি কী কারণে বলে মনে করেন?

আজিজ আহমেদ: এই উত্তর তো তারা দেবে। আমি ৩৯ বছর চাকরি করেছি। ট্রেনিং নিয়ে ৪১টা বছর। আমার পরিবারের সদস্যরাও জানে আমি শৃঙ্খলা কতটা মেনে চলি। আমি অবসরে আসার পরে অনেক অফার (সুযোগ) পেয়েছি। বড় বড় প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে উপদেষ্টা করার জন্য, তারা আমাকে এই দেবে সেই দেবে। টাকা পয়সা সবারই দরকার, কিন্তু আমার চাহিদা কিন্তু তেমন কিছু না। আমি যা আছি এটা দিয়েই কিন্তু, পেনশনে যা পাই, বাড়িভাড়া যা পাই আলহামদুলিল্লাহ। আমি কি এই বড় বড় অফারগুলো গ্রহণ করতে পারতাম না?

আমি অবসরে এসেও কোথাও জয়েন করিনি। আমার বেঁচে থাকার জন্য স্বাভাবিক চলার জন্য যতটুকু কাজ, সেটা যদি হয়, আবার আমি মাঝে মাঝে ঘুরতে যাই, সেটা যদি হয় তাহলেই পর্যাপ্ত। আমার তো কোনো ছেলে ওই দেশে (আমেরিকায়) লেখাপড়া করে না। আমার তো একটা সুতাও ওই দেশে নাই।

ঢাকা টাইমস: আপনাকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কেন দেওয়া হলো বলে মনে করেন?

আজিজ আহমেদ: সেটা তো আমি জানি না। আমার কিছুই হয়নি, সম্মানহানি ছাড়া। তবে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই সাংবাদিকদের। এজন্য কিন্তু করার কিছুই নাই। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন নাটক দেখি, ছবি দেখি। ভালো লাগলে একটু দেরি হয়। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ি। আমি অ্যালার্ম দিয়ে রাখি, ফজর নামাজ পড়ে ঘুমাতে যাই। এবং আমি সাধারণত সকাল ৯টা-১০টা-সাড়ে ১০টায় ঘুম না ভাঙতে উঠি না।

আজকে আমার এক বন্ধু এই ম্যাসেজটা (মার্কিন নিষেধাজ্ঞা) আমাকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু সকাল পৌনে ১০টার দিকে আমি একটা ফোন পাই। ফোন ধরার পরে বললো- এরকম একটা বিষয় হয়েছে, আমি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছি, প্লিজ একটু দেখবেন। এরপর আমি ওয়াশরুমে যাই ফ্রেশ হয়ে ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে জিনিসটা দেখলাম কয়েকবার পড়লাম। কিছুসময় পর সাংবাদিক আসা শুরু হলো (বাসায়)। তখন আমার কাছে মনে হয়েছে আমি ঠিক আছি। তারাও বিব্রত এ বিষয়টা নিয়ে। এটা অন্যায়, এটা অসত্য। আমি তাদের এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ব্যাথিত হয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/২১মে/এমএইচ/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যে কারণে স্থগিত হয়ে গেল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০০ দিন: যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি গোটা বিশ্ব পরিচালনার দাবি
গুলশান থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো অভিনেতা সিদ্দিককে
রংপুরে রোহিঙ্গা নারীকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা