দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের আর্থিক সহায়তা প্রদান

দিনাজপুরে যাত্রীবাহী নাবিল পরিবহণ ও আম বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের দেখতে এবং চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ ও পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমদ। এ সময় নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৬টায় দিনাজপুর সদর উপজেলার ৫নং শশরা ইউনিয়নের পাঁচবাড়ী বাজার সংলগ্ন বলরামপুর (দইসই) এলাকায় আরিয়ান পেট্রোল পাম্পের পশ্চিমে দিনাজপুর ফুলবাড়ি মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় দুই শিশুসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২৮ জন। আহতদেরকে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন চিরিরবন্দর কোচনা এলাকার মো. মমিনুরের ৫ মাস বয়সি কন্যা জায়না, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বদতালীগাঁও এলাকার দানেশ আলীর ছেলে মো. আলী (৫২), যাত্রীবাহী নাবিল কোচের সুপার ভাইজার বোচাগঞ্জ মিল রোড এলাকার মৃত লক্ষণ বাহাদুরের ছেলে রাজেশ বাহাদুর (৩৫), ট্রাক চালক ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ মিত্রপাঠ এলাকার মৃত সুরার ছেলে হাসু (২৮), বোচাগঞ্জ আনোয়ারা এলাকার জাহিদ ও সুলতানা পারভীনের কন্যা শিশু বিভা (১০) এবং চিরিরবন্দর আমবাড়ি বিশ্বনাথপুর এলাকার বিমল চন্দ্র রায়ের ছেলে ভ্যানচালক সদেশ রায় (৩০)।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর সদর উপজেলার পাঁচবাড়ী চকরামপুর আরিয়ান পেট্রোল পাম্পের পশ্চিমে ঢাকাগামী আম বোঝাই একটি ট্রাক তার রাস্তার সাইড পরিবর্তন করে ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলগামী যাত্রীবাহী বাস নাবিল পরিবহনকে সামনাসামনি ধাক্কা দিলে এই হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ ও পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমদ এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে এবং আহতদের চিকিৎসার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় ।
জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএর পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে এবং হবে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমদ বলেন প্রাথমিক তদন্তে আমরা যেটা জানতে পেরেছি
ট্রাকের হেলপার ট্রাক চালাচ্ছিল এবং ড্রাইভার পাশে বসাছিল। ওই সময় ট্রাকটি একজন ভ্যানচালককে ধাক্কা দিয়ে রোড লেন ক্রস করে নাবিল বাসের সামনে চলে আসে। কিন্তু চলন্ত অবস্থায় বাস চালকের সঙ্গে এক যাত্রীর কথা কাটাকাটি হওয়ায় চালক কিছুটা অমনোযোগী ছিলেন। ফলে চালক বাসটি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। ট্রাকের হেলপার চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশি হেফাজত রয়েছে এবং সড়ক আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আহত বাসের এক যাত্রী জানান নাবিল গাড়িটি ৮০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার বেগে চলছিল। এর মধ্যে আবার চলন্ত অবস্থায় বাসের ড্রাইভারের সঙ্গে এক যাত্রীর ঝগড়া চলছিল। এসময় একটি ট্রাক তার সাইড পরিবর্তন করে আমাদের গাড়ির সামনাসামনি চলে আসলে ড্রাইভার অনেক চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ছোট বাচ্চাসহ বাসে অনেক যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে এবং ঘটনাস্থলেই বাসের হেলপার এবং ট্রাকের চালক মারা
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে বাসে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ হোসেন বলেন, পুলিশ দুর্ঘটনার শিকার বাস ও ট্রাকটি রাস্তা থেকে সরিয়ে হেফাজতে নিয়েছে। বর্তমানে রাস্তার যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/পিএস)

মন্তব্য করুন