কোটা সংস্কার দাবিতে গণপদযাত্রায় শিক্ষার্থীরা

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০৬| আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৫:০৩
অ- অ+

সরকারি চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের এক দফা দাবিতে গণপদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রবিবার বেলা বারোটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যম্পাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিল নিয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় এ গণপদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করবেন আন্দোলনকারীরা।

ঢাকা টাইমসের ঢাবি প্রতিনিধি শেখ শাকিল হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা দলে দলে শিক্ষার্থীরা ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জমায়েত হন। ঢাবির বিভিন্ন আবাসিক থেকে আসা শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও স্বতন্ত্র ব্যানার নিয়ে সেখানে জড়ো হন।

শাকিল জানান, বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে গণপদযাত্রা শুরু করেন। তারা শাহবাগ হয়ে মৎস্যভবন মোড় থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে বঙ্গভবনের সামনে যাবেন বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট পৌঁছালে সেখানে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। সেখান থেকে তাদের কয়েকজন প্রতিনিধি রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে বঙ্গভবনে যাওয়ার কথা জানান আন্দোলনের সমন্বয়করা।

পরে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে তারা বঙ্গভবনের দিকে এগুতে থাকে। গুলিস্তান পাতাল মার্কেট পর্যন্ত পৌছালে শিক্ষার্থীরা আবারো পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এরইমধ্যে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি নামে। আর পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে এগোতে না পেরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সেখানেই অবস্থান নেন।

এদিকে বঙ্গভবন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানে থাকা ঢাকা টাইমস প্রতিবেদক মো. মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম। দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকা টাইমস প্রতিবেদক কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জন প্রতিনিধিকে বঙ্গভবনে যেতে দেখেছেন।

আগের দিন শনিবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা দেয়। রবিবার বেলা ১১টায় ঢাকার পাশাপাশি একই দাবিতে দেশের ৫০টি জেলা থেকে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেবেন বলে জানান কোটা আন্দোলনের সমন্বয়করা।

ঢাকা টাইমসের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিনিধি শাহরিয়ার হোসেন জানান, বঙ্গভবন অভিমুখে বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে দিয়ে, জজ কোর্ট এলাকা হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়, তাঁতিবাজার মোড় হয়ে জিরো পয়েন্ট মোড়ে গণপদযাত্রা নিয়ে দুপুরে জিরো পয়েন্ট এলাকায় ঢাবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন জবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বেলা ১১টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা করেছেন বলে খবর দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি ইভান চৌধুরী। পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরাও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা শেষে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি আশিকুর রহমান।

এর আগে ‘কোটা বৈষম্য নিরসন করে সংসদে আইন পাস ও ২৪ ঘন্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে’ সকাল ১০ টায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১২টায় পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে গণ-পদযাত্রা শুরু করেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল।

ঢাকা টাইমস প্রতিনিধি জানান, শিক্ষার্থীরা নগরীর ২ নম্বর গেইট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, লাভ লেইন হয়ে গণপদযাত্রা শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন।

চবি শিক্ষার্থীরা ছাড়াও গণপদযাত্রায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও চবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এসময় তারা বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি সংস্কার, দ্রুত সংসদে আইন পাস ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি— সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মিরপুরে ট্রাফিক সদস্যদের মাঝে স্যালাইন বিতরণ 
আ.লীগ নিষিদ্ধ হয় নাই, করতে হবে: রাশেদ প্রধান
গানের নাম ‘প্রেমিক স্বৈরাচার’
দল নিষিদ্ধের বিধানসহ সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ জারি সোমবার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা