সাতক্ষীরায় আ.লীগ নেতাসহ ১৪ জনকে হত্যা, পোড়ানো হলো ঘরবাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা
| আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৫৮ | প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৩৫

কোটা সংস্কার আন্দোলনের তোপের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে সাতক্ষীরায় হামলা ও সহিংসতায় আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে বিএনপির দুজন। বাকিরা অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।

এ সময় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন, ভাতিজা সজিব হোসেন, ভাগনে আশিকুর রহমান, স্বজন সাকের আলী ও গাড়িচালক শাহিন হোসেন। এছাড়া আশাশুনি থানার কল্যাণপুর গ্রামের আদম আলী (২৮), কোলা গ্রামের আনাজ বিল্লাহ (১৭) ও কুড়িকাউনিয়া গ্রামের আনাজ আলী (১৮), সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী আসাফুর রহমান (৪০), মৃগাডাঙ্গা গ্রামের তৌহিদ ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন (৩৫)।

প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোক আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেনের কল্যাণপুরের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় জাকির বন্দুক দিয়ে গুলি করেন। গুলিতে ঘটনাস্থলেই আদম আলী, আনাজ বিল্লাহ ও আনাজ আলী মারা যান। এরপর জাকিরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। পরপরই জাকিরসহ তার পাঁচ স্বজনকে পিটিয়ে হত্যা করে তারা।

বৈকারি ইউপির চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল জানান, সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আসাফুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাত ৯টার দিকে মৃগাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃগাডাঙ্গা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী তৌহিদ ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, বিএনপিকর্মী জাহিদ হোসেন ও ফারুক হোসেন নিহত হন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শহরে আওয়ামী লীগ নেতা আবু আহমেদ, ফিরোজ কামাল, লায়লা পারভিন সেজুতি, তামিম আহমেদ, সুব্রত ঘোষ, আবদুল মান্নান, তজুলপুরের সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন, বৈকারি গ্রামের আলী হোসেন, নূরুল ইসলাম, ইউনুস আলী, আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ঘোষ সনৎ কুমার, প্রণব ঘোষ, বিশ্বজিৎ সাধু, জাকির হোসেন, শেখ নূরুল হক, কলারোয়ার ফিরোজ আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, মজনু চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, শ্যামনগরের অসিম কুমার মৃধা, উৎপল মণ্ডল, মলয় মণ্ডল, আবদুল মুজিদ, রবিউল ইসলাম, এজাজ আহমেদ, সেলিনা সাঈদ, সেলিম রেজা, মতিয়ার রহমান, সুফিয়ান সফিকুল ইসলাম, আশাশুনির রাজেশ্বর দাস, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন, দেবহাটার নজরুল ইসলামের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। তাদের কারও কারও বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে সাতক্ষীরা সদর থানা, ট্র্যাফিক কার্যালয় ও শ্যামনগর থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় থানাগুলোয় কোন পুলিশ সদস্য নাই।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, কয়েকজনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি এবং কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে শুনেছি। পরিস্থিতির উন্নতির চেষ্টা চলছে। সবাইকে ঘরে ফিরে যেতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

(ঢাকা টাইমস/০৬আগস্ট/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :