রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে খুবি শিক্ষকদের মানববন্ধন
দলীয় রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গণ, বৈষম্যহীন সমাজ ও দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষকরা। তারা দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে শিক্ষকরা তিনটি দাবি নিয়ে মানববন্ধন ও র্যালি করেন। পরে রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষক রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গণ চেয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষকরা উল্লেখ করেন- স্বাধীনতার জন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ বার বার সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে। বিদেশি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করেছে। মানুষ ভেবেছিল তারা শোষণ, বঞ্চনা, দুর্নীতি, লুটপাট থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু তারা মুক্তি পায়নি। এ দেশীয় স্বৈরশাসকরা বার বার একই কায়দায় মানুষের উপর জুলুম, নির্যাতন ও স্বৈরশাসন কায়েম করেছে। মানুষকে দাসে পরিণত করা হয়েছে। সত্য ন্যায়ের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। দেশীয় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষ বার-বার রক্ত দিয়েছে, একটি শোষণহীন বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু তাদেরকে বারবার ঠকানো হয়েছে। তাদের রক্তকে অপমান করা হয়েছে। একই উদ্দেশ্যে সম্প্রতি আবারও ছাত্র-জনতা সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে। শত-শত প্রাণের বিনিময়ে আজ দেশে নতুন সূর্য উদয় হয়েছে। এ দেশের মানুষ আর ঠকতে চায় না। তারা চায় একটি শোষণহীন, বৈষম্যহীন আলোকিত বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ। আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের যথাযথ সংস্কার করতে হবে। আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আবারও যাতে কোনো মহল দুঃশাসন, স্বৈরাচার কায়েম করতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। যার যার ন্যায্য প্রাপ্য তা দিতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
শিক্ষাঙ্গণগুলো দলীয় রাজনীতির কালো থাবা থেকে মুক্ত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই এ দেশ আলোকিত বাংলাদেশ হবে।
এর আগে মানববন্ধনে অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, আমাদের উঠে দাঁড়ানোর জন্য এটাই হচ্ছে সঠিক সময়। দেশে সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবেশে আমি মনে করি সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। আমাদের আশাহত হলে হবে না।
তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনে শত শত সন্তান প্রাণ দিয়েছে। আমরা কিন্তু তাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের মনে রাখতে হবে তারা যে চেতনা নিয়ে আন্দোলন করেছে সেটির সফলতা এসেছে। আমরা যদি সেটা এগিয়ে নিতে না পারি তাহলে আমি মনে করি, তাদের রক্তের প্রতি অপমান করা হবে, বেঈমানি করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/পিএস)