কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে নিহত সুমাইয়ার মেয়ের দায়িত্ব নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী

গত ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে নিহত সুমাইয়ার শিশু সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দোয়েল চত্বর এলাকায় সুমাইয়ার মায়ের বাড়িতে এসে শিশুটির দায়িত্ব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি সুমাইয়ার অবুঝ শিশুকে দেখতে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, শিশুটির মুখে এখনো ভাষা ফুটেনি। এই শিশুটির মুখে যখন মুখে ভাষা ফুটবে তখন তারা মা ডাকার মতো কেউ রইলো না। এই শিশুর মতো যারা মা হারিয়েছে, যারা বাবা হারিয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদের হারিয়েছে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দেন।’
নিহত সুমাইয়ার মেয়ে সুয়াইবার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এই অবুঝ বাচ্চার এখন থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত পড়াশোনাসহ যাবতীয় দায়িত্ব আমরা নিলাম।’
তিনি বলেন, ‘যারা জালিমের হাতে মৃত্যুবরণ করলেন আল্লাহ যেন তাদের শহীদের মর্যাদা দান করেন। এলাকাবাসীর নিকট অনুরোধ রইল, জুলুমের হাত থেকে বাঁচতে হাজারো মানুষ তাদের বুক পেতে দিয়েছেন। এখন যদি কেউ আবারও এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে তা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি হবে। আর যেন তা না করতে পারে সেজন্য আপনারা অলিগলিতে, এলাকায় এলাকায় তাদের হাত অবশ করে দিবেন। যারা লুটতরাজ, চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদেরকে কোনো ছাড় দিবেন না। ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এবার জনগণ প্রমাণ করে দিয়েছে তারা অন্যায়ের সঙ্গে কোনো আপস করে না। তারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করলো তারা দেশে শান্তি চায়। আমরা যেন দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারি আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।’
এ সময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটিসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছিল। এতে উত্তাল ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত। এ সময় মিজমিজি পাইনাদী দোয়েল চত্বর এলাকায় দৌড়াদৌড়ির আওয়াজ শুনে বিকাল বেলায় মায়ের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া। দাঁড়ানোর দুমিনিটের মাথায় হঠাৎ হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলি এসে সুমাইয়ার মাথার বাম পাশে বিদ্ধ হয়। এতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/পিএস)

মন্তব্য করুন