এক হাজার গোলের মাইলফলক ছুঁতে চান রোনালদো
তার কাছে বয়স শুধু একটা সংখ্যা মাত্র। পায়ের জাদুতে বয়সটাকে স্রেফ একটা সংখ্যায় আটকে দিচ্ছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ক্লাব ও দেশের হয়ে ক্যারিয়ারে ৯০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে মাত্র একটি গোল দরকার রোনালদোর। তিনি স্পর্শ করতে চান হাজার গোলের রেকর্ড। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত সাবেক ইংলিশ তারকা রিও ফার্ডিনান্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৩৯ বছর বয়সী রোনালদো তার গোল রেকর্ড গড়ারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন।
‘ইউর ক্রিশ্চিয়ানো’ নামে খোলা নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ডিফেন্ডার ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিজের সাবেক সতীর্থ ও বন্ধু রিও ফার্ডিনান্ডকে নিয়ে খোলামেলা আলাপে ছিলেন রোনালদো। কথা চলছিল সৌদি প্রো লিগ আর তার নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে। সেই প্রসঙ্গেই রোনালদো বললেন, ‘আমি ১০০০ গোল করতে চাই। চোটে না পড়লে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি এটা চাই। ফুটবলে তাড়া করার জন্য এটাই আমার কাছে সেরা মাইলফলক। প্রথমে ৯০০ গোল, তারপর আমার চ্যালেঞ্জ হলো ১০০০ গোল করা।’
রোনালদো সৌদি প্রো লিগে খেলার মান থেকে শুরু করে তার আবেগ এবং এটি থেকে উদ্ভূত সমালোচনার মতো বিষয়গুলিতে অকপটে কথা বলেছেন। যেখানে তিনি পেলে এবং আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর মতো কিংবদন্তিদের নিজের গোলগুলিকে আলাদা হিসেবে দেখছেন। কারণ মহারথীদের সময়ে ক্যামেরা ততটা প্রচলিত ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমি যতগুলো গোল করেছি, সবগুলোর ভিডিও আছে। সবার কাছে ভিডিও আছে। শুনুন, আমি তাদের সবাইকে (পেলে ও ডি স্টেফানো) সম্মান করি। আর বেশি গোল করতে চাইলে অনুশীলন থেকেও আনতে পারি। পরে দর্শকদের কাছে প্রমাণ করব। তারা এই খেলোয়াড়কে পছন্দ করে, কারণ তারা মনে করেন তারাই (পেলে) সেরা। যদিও আমি ওসব নিয়ে মাথা ঘামাই না।’
সৌদি আরবে খেলার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রোনালদো বলেন, ‘তরুণ বয়সে স্পটলাইটে আসার পর থেকে তিনি যে চ্যালেঞ্জ সহ্য করেছেন তাতে এটি তুলনামূলকভাবে সহজ হয়েছে। কোনো দেশই নিখুঁত নয়, তাই আমার জন্য মানিয়ে নেওয়া সহজ ছিল এবং আমি সেখানে থাকতে পছন্দ করি। আমার মতে লিগ খুব, খুব ভালো।’
স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে ইউরো ২০২৪-এর কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর পেনাল্টি মিস করার পর কান্নাকাটি করার জন্য যে সমালোচনা হয়েছিলেন, এ বিষয়ে রোনালদো বলেন, ‘আমাকে বিশ্বের সবদেশের দর্শকরা ফলো করেন। আর সে কারণেই এটা ছড়িয়ে পড়েছে। সমালোচকরাও তাই সমালোচনা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘১১ বছর বয়স থেকে তিনি নিজের ওপর যে চাপ দিয়ে আসছেন, তারই ফল এই অশ্রু। আপনি যা করছেন তার প্রতি যখন আপনার আবেগ থাকে, তখন আপনি কেমন অনুভব করছেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া যায় না। আমি ব্যর্থ হয়েছি কারণ ১১ বছর বয়স থেকেই আমি নিজের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছি। সবাই আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে আমি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়, আমি সবসময় এভাবেই চিন্তা করি। কিন্তু যখন পেনাল্টি মিস করলাম, তখন আমার নিজের কাছে, সমর্থকদের এবং পরিবারের কাছে খারাপ লেগেছিল, লোকের সমালোচনার জন্য নয়।’
যদিও তিনি বুঝতে পারছেন যে তিনি তার ক্যারিয়ারের শেষের দিকে রয়েছেন, পাঁচবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী শেষ পর্যন্ত কখন তার বুটজোড়া তুলে রাখবেন তা ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারছেন না।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কবে শেষ করতে পারব। যখন আপনি বেশি খেলেন, আপনি অনেক কিছু শিখবেন। একটা জিনিস আমি শিখেছি, মুহূর্তটা উপভোগ করতে হবে। কারণ আপনি জানেন না আগামীকাল কী ঘটতে যাচ্ছে। আমি জানি আমাকে এখনও ভালো দেখাচ্ছে। যেদিন আমি অনুভব করতে শুরু করব যে আমি কিছুই আর করতে পারি না, আমি আমার ব্যাগ প্যাক করে চলে যাব। কিন্তু সেই সম্ভাবনা আপাতত অনেক দূরে।’
(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/এনবিডব্লিউ)