রাজশাহীতে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ | প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭

রাজশাহীতে গণপিটুনিতে আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। রবিবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত আব্দুল আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।

নিহত মাসুদ গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি কন্যাসন্তানের বাবা হন। চাকরির সুবাদে সপরিবার তিনি বিনোদপুরে থাকতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাসুদ রাত ১০টার দিকে বাড়ি থেকে রাজশাহী বিনোদপুর বাজারে ওষুধ কেনার জন্য এলে গণপিটুনির শিকার হন। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিক্ষার্থীদের একটি দল মতিহার থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে সেখান থেকে নেওয়া হয় বোয়ালিয়া থানায়।

এরপর শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল মাসুদের চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদের মৃত্যু হয়।

নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাতে বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু মতিহার থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার কোনো মামলা নেই। তাই তাকে বোয়ালিয়া থানায় আনা হয়, যেন কোনো সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।’

ওসি আরও বলেন, ‘গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাসুদ। তার শারীরিক অবস্থা দেখে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। এখন পরিবার চাইলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানা যায়, নিহত মাসুদ রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তিনি নগরের বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে তিনি হামলার শিকার হন। এতে মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাঁ পা। কেটে দেওয়া হয়েছিল হাতের রগ। একটি ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা ওই হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

হামলায় পা হারিয়ে মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। তার অন্য পা শনিবার রাতে ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

গুরুতর আহতাবস্থায় বোয়ালিয়া থানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় মাসুদ বলেন, ‘আমি বিনোদপুরে ওষুধ নিতে এসেছিলাম। আমি ছাত্রলীগ করতাম, এই জন্য ধরেছে। কিন্তু আমার পা ২০১৪ সালে কেটেছে। রগ-টগ সব কাটা। আমি তো অনেক দিন আগেই ছাত্রলীগ করা বাদ দিয়েছি।’

মাসুদকে যখন আনা হয়, তখন বোয়ালিয়া থানায় ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। ৫ আগস্ট এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দুই যুবককে ধরে থানায় এনেছিলেন তিনি। থানায় তিনিও মাসুদকে দেখেন।

মাসুদের মৃত্যুর খবর শুনে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা যে দুজনকে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। তার মধ্যেই আহত অবস্থায় একজনকে আনতে দেখলাম। কিন্তু কারা তাকে এনেছিল চিনতে পারিনি। পুলিশের এটা ভালোভাবে দেখা উচিত ছিল।’

(ঢাকাটাইমস/০৮সেপ্টেম্বর/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :