চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর, ঝুঁকি এড়াতে কী কী করবেন
রাজধানীতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উৎপাত বেড়েই চলছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। যদিও গতবারের মেয়ররা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বা মশকনিধনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা খরচ দেখালেও মশার কামড় থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে পারেননি। সাধারণত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর—এই কয়েক মাস ডেঙ্গুর জন্য উচ্চঝুঁকি থাকে। এই সময়ে বৃষ্টি হয়, মশার প্রজননের জন্যও উপযুক্ত তাপমাত্রা থাকে। সাধারণত মশা প্রজননের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মশাবাহিত অন্য রোগ নিরাময়ে সক্ষম হলেও প্রাণঘাতী ডেঙ্গু নিরাময়ে অক্ষম। কোন শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার যন্ত্রণা দেখে পিতা-মাতা কতটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন একমাত্র ভুক্তভোগী ছাড়া কারও তা উপলব্ধি করার উপায় নেই। তাই ডেঙ্গুতে ভয় খুব বেশিই হয়।
ডেঙ্গু মশা বা এডিস মশা খালি চোখে দেখা অতি কষ্টকর ব্যাপার। ডেঙ্গু মশা এতোটাই ভয়ঙ্কর যে, এর দংশনে প্রচন্ড কম্প দিয়ে জ্বর উঠে। সহসা জ্বর ছাড়তে চায় না। ক্রমান্বয়ে মানুষ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। মনে হতে পারে যে, ডেঙ্গু মশার মধ্যে জীবাণু রয়েছে। যেমন বিষধর সাপে রয়েছে বিষ। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা কিন্তু তা নয়। মশার নিজের মধ্যে কোন জীবাণু নেই। এটা বাহক মাত্র। রোগাক্রান্ত ব্যক্তির দেহে দংশন করে জীবাণু সংগ্রহ করে এবং তা অন্যের দেহে ছড়ায়।
শরীর বিজ্ঞানীদের মতে, ডেঙ্গু জ্বর একটা ভাইরাসজনিত রোগ। ভাইরাসের নাম গ্রুপ ‘বি’ আরবো ভাইরাস। এই ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপ রয়েছে। আরবো ভাইরাস বহনকারী মশার নাম এডিস মশা। এই মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। এই ভাইরাস বহনকারী স্ত্রী জাতীয় এডিস মশা যখন কোন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তখন তার দেহে এই ভাইরাস প্রবেশ করে এবং ওই ব্যক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। সাধারণত মশা কামড়ানোর ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে কামড়ানোর ৮ থেকে ১২ দিন পর এডিস মশা এই রোগ ছড়াতে পারে এবং এই মশা তার জীবনকালের বাকী সময়ের জন্যও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
শরীরে লালচে আভা ও ফুসফুড়ি বা র্যাশ দেখা যায়। চোখেও লালচে হয়ে যায়। কখনও কখনও শরীরের অভ্যন্তরে অত্যধিক রক্তরণ হয় এবং রোগীর অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যেতে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ অবস্থাকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলে। তখন ব্লাড প্রেসার অনেক কমে যায়। রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় শ্বেতকণিকা অনেক কমে গেছে। রক্তের অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেটও অনেক কমে যায়। সাধারণ টিসি, ডিসি পরীক্ষায় এগুলো বোঝা যায়। প্লাটিলেট দেখার সর্বোত্তম পন্থা হলো প্রথমে সেল কাউন্টিং মেশিনে এবং পরে মাইক্রোস্কোপে দেখার ফলাফল তুলনা করা। রক্তে এই ভাইরাস সনাক্ত করার জন্য ইমিউনোলজিক্যাল পরীক্ষা করা যায়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। অনেক রোগী না বুঝে ব্যয়বহুল ইমিউনোলজিক্যাল পরীক্ষা নিজেরাই করেন। যা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া করা উচিত নয়।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে শরীর অনেকটাই দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে বা ডেঙ্গু ধরা পড়লে দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করতে হবে। সেইসঙ্গে খেতে হবে তাজা ফলের রস, ডাবের পানি, আখের রস ইত্যাদি। সেই সঙ্গে খেতে হবে মাছ ও ডিম, মুরগির মাংস, শাকসবজি। খাবার স্যালাইন পান করুন একটু পরপর।
ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ আটটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে। কিন্তু কোনো ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি–সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় এ–জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
শর্করা, প্রোটিন ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাধারণ খাবার বন্ধ করা যাবে না। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঘরে বানানো খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করতে হবে। ডেঙ্গু হলে অনেক সময় শরীরে প্রচুর পানির ঘাটতি তৈরি হয়। ডাবের পানি এক্ষেত্রে অনেক উপকারী হতে পারে। ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ইলেক্ট্রোলাইট ও পুষ্টি থাকে। লেবুর পানি ভিটামিন সির খুব ভালো উৎস। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। অনেক ক্ষেত্রে আদা পানি গ্রহণেরও পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এটি অনেক ডেঙ্গু রোগীর বমি বমি ভাব মোকাবিলায় সহায়তা করে। কখনও কখনও শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) গ্রহণের পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। এটি শরীরে অত্যাবশ্যক পটাসিয়াম সরবরাহ করে। পারে। জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্তি পেতে যেসব খাবার খাবার খাবেন-
ড্রাগন ফল
চিকিৎসকেরা ড্রাগন ফলকে ‘ট্রপিক্যাল সুপারফুড’ বলছেন। ড্রাগন ফলের উপকারিতা বেশ চমকে ওঠার মতো। ডেঙ্গু জ্বরের মোকাবিলায় অন্যতম ভরসা হয়ে উঠছে ড্রাগন ফল। চিকিৎসকদের মতে, ড্রাগন ফলে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে। যা রক্তে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় এই ফল খুবই কার্যকর। তাছাড়া এই ফলে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে।
ব্রোকলি
প্লাটিলেট সংখ্যা বাড়ানোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ব্রোকলি ভিটামিন কের খুব ভালো একটি উৎস, যা রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে ভূমিকা রাখে। যদি হঠাৎ করে প্লাটিলেট অনেক কমে যায়, তাহলে ব্রোকলি খাওয়ানো যেতে পারে। এই খাবারটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজে পরিপূর্ণ।
বিট
রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে প্রতিদিন এক গ্লাস বিটের রস পান করুন। বিটের পুষ্টি উপাদান প্লাটিলেটকে নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং প্রচুর নতুন প্লাটিলেট তৈরি করে।
পালং শাক
পালং শাক আয়রন, ভিটামিন কে, পটাসিয়াম এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই খাবারটি প্লাটিলেট বাড়ানোর একটি কার্যকর উপায়।
ডালিম
ডালিম খুবই পুষ্টি এবং খনিজ সমৃদ্ধ ফল, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে এবং ক্লান্তির অনুভূতি হ্রাস করে। আয়রনের একটি সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায় ডালিমকে রক্তের প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য বেশ উপকারী বলে মনে করা হয়।
হলুদ
হলুদ একটি এন্টিসেপটিকসমৃদ্ধ খাবার এবং এটি শরীরে মেটাবলিজম বাড়াতে ভূমিকা রাখে। দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করলে ডেঙ্গু জ্বর থেকে দ্রুত সেরে উঠা সম্ভব।
মেথি
মেথি সহজে ঘুমানো এবং যন্ত্রণা হ্রাসের ক্ষেত্রে উপকারী। জ্বর অনেক বাড়তে থাকলে সেটিকে স্থিতিশীল করার জন্যও মেথি গ্রহণ করা যেতে পারে।
কালো আঙুর
কালো আঙুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এবং রক্তের গঠনের জন্য সহায়ক একটি ফল। পেয়ারাও প্লাটিলেট কাউন্ট বাড়াতে কার্যকরী।
সবজির রস
ডেঙ্গু জ্বরে জ্বরে সবজি প্রতিদিন খাওয়া উচিত। ডেঙ্গুর জ্বরে যদি আক্রান্ত হন, তাহলে নিজের পছন্দমতো সবজির রস করে এই সময় খেতে পারেন। স্বাদ বদলের জন্য অল্প লেবুর রসও দিতে পারেন। লেবুতে ভিটামিন সি থাকে। সেটা শরীরের ইমিউনিটি ব্যুস্ট করে।
পেঁপে পাতার রস
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে পেঁপে পাতার রস কতটা উপকারী সেটা আবার অনেকেই জানেন না। এই রস নিয়মিত খেলে জ্বর ধীরে ধীরে কমে যায়, শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট বাড়ে, এমনকি ইমিউনিটি ব্যুস্ট ও হয়। বাড়ির আশেপাশে একটা দু’টো পেঁপে গাছ তো থাকেই। তারই পাতা কুচিকুচি করে কেটে ব্লেন্ডারে অল্প জল দিয়ে মিশিয়ে রস তৈরি করতে পারেন। দিনে অন্তত দুবার এটা খাবেন।
আমলকির রস
আমলকি ভিটামিন এ ও সি তে ভরপুর। বাজারে সারাবছরই এখন আমলকি পাওয়া যায়। অনেক সময় ভিটামিন সি ট্যাবলেট পাওয়া যায় না বলে, তার বদলে দিনে একটা আমলকি খান। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের ট্রেস কমায়। ইমিউনিটি ব্যুস্ট করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
চিকেন স্যুপ
ফ্লু বা জ্বরের সময় ডাক্তাররা দিনে অন্তত একবার চিকেন স্যুপ খেতে সাজেস্ট করেন। এটা শরীর হাইড্রেটেড রাখে। আবার জ্বরের সময় অনেকেই মুখে খাবারের স্বাদ পান না ঠিকমতো। তাদের চিকেন স্যুপ খেতে বলেন।
নিম পাতার রস
নিমপাতার ঔষধি গুণ নিয়ে করোর মনে একটুও সংশয় নেই। জানেন কি, ডেঙ্গু জ্বরেও সমান উপকারী! এই রস শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করে। দিনের শুরুতেই ডাক্তাররা এটা খেতে বলেন।
হার্বাল টি
বাজারে এখন নানারকম ফ্লেভারের চা পাওয়া যায়। তুলসি, আদা, দারুচিনি, প্রভৃতি সমৃদ্ধ। এগুলো নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়। সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের পরে অনেকেই খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সময় এই ধরণের চা খেলে শরীর মন দুটোই চাঙ্গা থাকে।
প্রক্রিয়াজাত খাবারের পাশাপাশি তৈলাক্ত, মশলাদার ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবারের ফলে পেটে অ্যাসিড জমতে পারে, পিএইচ স্তর নেমে যেতে পারে যার ফলে আলসার ও অন্ত্রের দেয়ালের ক্ষতি হতে পারে।
ক্যাফিনেটেড পানীয় দ্রুত হৃদস্পন্দন বাড়ায়। ফলে এসব পানীয় ক্লান্তি এবং পেশীর ক্ষতি করতে পারে।
এডিস মশা থেকে যেভাবে সাবধান থাকবেন
মশার ধরণ হলো দুটি। একটি উড়ন্ত মশা, অপরটি লার্ভা। মশা নিধনের জন্য ধোঁয়া দিয়ে হয়তো উড়ন্ত মশা মেরে ফেলা যাবে। কিন্তু যে পানিতে লার্ভা থাকে সেখানে যদি সরাসরি স্প্রে না করা হয় তাহলে এডিস মশা জন্মাবেই। তাই এডাল্ডিসাইডের পাশাপাশি লার্ভিসাইডও করা দরকার। অর্থ্যাৎ ধোঁয়া দিয়ে মশা নিধনের পাশাপাশি স্প্রে করতে হবে।’
এডিস মশা খুব অল্প পানিতে (৫ মিলি বা ১ চা চামচ পানি) ডিম পাড়ে যা পানি ছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। এই জন্যই লার্ভা ধ্বংসে টেমিফস ১ গ্রাম/১০ লিটার পানিতে খুব কার্যকরী, যা ব্যবহার পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। নির্মাণাধীন ভবনের প্রজননস্থল ধ্বংস করে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব।
এডিস মশার জন্ম হয় পাত্রের জমে থাকা পানিতে। সপ্তাহে অন্তত একদিন নিজের বাড়ি এবং বাড়ির চারদিকে ঘুরে দেখুন, কোথাও কোনো পাত্রে পানি জমে আছে কি না। যদি থাকে তাহলে তা ফেলে দিন বা পরিষ্কার করুন। যদি পাত্রটি এমন হয় যে, পানি ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না তাহলে সেখানে কীটনাশক বা কেরোসিন বা ব্লিচিং পাউডার বা লবণ দিন।
গাড়ির অব্যবহৃত টায়ার বাসায় রাখবেন না কারণ এখানে এডিস মশার জন্ম হয় যদি রাখতেই হয় তাহলে ছাউনির নিচে রাখুন যেন পানি জমা না হয় । দই বা যেকোনো খাবারের পাত্র বাইরে ফেলবেন না। বাথরুমে যদি পানি ধরে রাখতে হয় তাহলে পানির পাত্র সপ্তাহে অন্তত একবার ব্লিচিং পাউডার বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে আবার পানি ভর্তি করুন।
এডিস মশা পানির পাত্রের কিনারে ডিম পাড়ে এবং পাত্রের গায়ে আটকে থাকে। যে কারণে পানি ফেলে দিলেও ডিম নষ্ট হয় না। তাই এটাকে ব্লিচিং পাউডার বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
আপনার বাড়ির পাশে কোন নির্মাণাধীন ভবন থাকলে, এটার বেজমেন্ট, লিফটের গর্ত, ইট ভেজানোর চৌবাচ্চা, ড্রাম পরীক্ষা করুন। যদি এসব জায়গায় জমে থাকা পানিতে ছোট ছোট পোকা দেখতে পান তাহলে বুঝবেন সেটি এডিস মশার লার্ভা বা বাচ্চা। নির্মাণাধীন ভবনের মালিককে সামাজিকভাবে চাপ প্রয়োগ করুন যেন সে তার বাড়িতে মশা জন্মানোর স্থান তৈরি না করেন। নির্মাণাধীন ভবন যদি আপনার হয় তাহলে সেখানে জমে থাকা পানিতে কীটনাশক বা কেরোসিন বা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে রাখুন।
আপনার বাড়ির আশেপাশে যদি মশা জন্মানোর মতো কোনো সরকারি বেসরকারি স্থাপনা থাকে তাহলে ওই অফিসকে জানান। বাড়ির আশেপাশে গাছের গর্ত বা কাটা বাঁশের গোঁড়া মাটি দিয়ে বন্ধ করে দিন। কারণ গাছের কোটর বা বাঁশের গর্তে এডিস মশার জন্ম হয়।
দিনের বেলা পায়ে মোজা ব্যবহার করতে পারেন। ফুল হাতার জামা পরুন। শিশুদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরাতে হবে। দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশা যেন না কামড়াতে পারে এজন্য মশাবিরোধী বিভিন্ন ক্রিম বা তেল শররের খোলা স্থানে ব্যবহার করুন। দরজা-জানালায় নেট লাগাতে হবে। মশা তাড়াতে স্প্রে, লোশন, ক্রিম, কয়েল, ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন। ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, বাড়িঘরের আশপাশে যে কোনে পাত্রে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন। ঘরের বাথরুমে কোথাও পানি জমাবেন না। বাড়ির ছাদে বাগানের টবে বা পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে। প্রয়োজনে প্রতিদিন পানি বদলে ফেলুন। বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার রাখুন।
(ঢাকাটাইমস/১০ সেপ্টেম্বর/আরজেড)