স্বতন্ত্র পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব গণঅধিকার পরিষদের
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা। বুধবার বিকালে সচিবালয়ে এই বৈঠকে স্বতন্ত্র পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেয় গণঅধিকার পরিষদ।
পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনসহ ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেন। এসময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাসহ চলমান পরিস্থিতিতে গণঅধিকার পরিষদের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে— ১.পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের পথ বন্ধ করে নিরপেক্ষ কাজের পরিবেশ তৈরি করা এবং নিয়োগ,পদোন্নতিসহ তদারকিতে 'স্বতন্ত্র পুলিশ কমিশন' গঠন করা; ২.ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা, গুলি চালানো সন্ত্রাসী এবং গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে দ্রুত সময়ে পদক্ষেপ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা; ৩. আগামী ১০ দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশ।
৪. পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও পুলিশকে দলীয়করণ করাসহ দুর্বৃত্তায়নে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও দলবাজ, অসৎ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা; ৫. চলমান পরিস্থিতিতে পুলিশের মনোবল বৃদ্ধি ও নির্বিঘ্নে-নিরাপত্তার সাথে কাজ করাসহ দ্রুত সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গুরুত্বপূর্ণ মেট্রোপলিটন ও জেলা শহরের প্রতি থানায় ১০ জন করে সেনা সদস্য নিয়োগ করা। স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে কমিউনিটি পুলিশিংকে সক্রিয় করার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় মূলক প্রোগ্রাম গ্রহণ।
৬. পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশনসহ পুলিশের সর্বস্তরের ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত করে জনবান্ধব পুলিশি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। পুলিশের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের ভাতাসহ মাঠপর্যায়ের টহল পুলিশের জন্য পর্যাপ্ত বাজেট প্রদান। থানা/উপজেলা পর্যায়ে অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের ন্যায় পুলিশেও ক্যাডার অফিসারদের পদায়ন। ৭. পুলিশের কোন সদস্যদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠলে ১ মাসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে ব্যবস্থা গ্রহণ। ৮. সারা দেশে মাদক , চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য বন্ধে ছাত্র- নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে পুলিশ কর্তৃক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।
৯. কাজে যোগদান না করা এবং দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করা পুলিশ সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা। প্রয়োজনে দ্রুত সময়ে নতুন নিয়োগ। ১০. বিট পুলিশিং / কমিউনিটি পুলিশিং সিস্টেমকে আরো কার্যকর করা। ১১. ‘চাকরি নয়, সেবা’ এই মূলনীতির আলোকে বাংলাদেশ পুলিশকে নতুন করে ঢেলে সাজানো। ১২. পুলিশিং সিস্টেমকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি সুশৃঙ্খল, জনবান্ধব ও দক্ষ বাহিনীতে পরিণত করা।
বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, এরশাদ সিদ্দিকী, আরিফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি এ্যাড. জুয়েল খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/জেবি/কেএম)