লেখক-সাংবাদিকদের সঙ্গে এবি পার্টির মতবিনিময়
‘বর্তমান সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে লেখক-সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভা করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। সভায় নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেছেন, বর্তমান সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।
বিশিষ্ট লেখক সাংবাদিক সৈয়দ তোশারফ আলীর সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক আব্দুর রহমান মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সাংবাদিক কবি আব্দুল হাই শিকদার, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম. আব্দুল্লাহ, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক কবি শামীমা চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম খান, সিনিয়র সাংবাদিক ও গবেষক আহমেদ মতিউর রহমান, কবি ও লেখক ফজলুল হক খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য শাহনাজ পলি, সিনিয়র সাংবাদিক নাসরিন গীতি।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ তোশারফ আলী বলেন, বর্তমানে রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের জন্য সরকার ছয়টি কমিশন গঠন করেছে। আমরা একে স্বাগত জানাই। এর সাথে এটাও বলতে চাই দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নিলে রাষ্ট্রের বেশির ভাগ সমস্যা সমাধান হবে। আমরা যাদের ব্যাপারেই আজ কথা বলছি এমনকি সাংবাদিক, লেখক, কবি সাহিত্যিকসহ সবাই যারা স্বৈরাচারের দোসরের ভূমিকা পালন করেছে, এর মৌলিক কারণ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশা। মূল কথা অবৈধভাবে ক্ষমতা, বাড়ি, গাড়ি সম্পদের মালিক হওয়া। দেশ তখনই সঠিকভাবে চলবে যখন আইনের শাসন, ন্যায় বিচার এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। এটা কাগজ কলমে নয়, বাস্তবিক অর্থেই সরকার করবে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশকে সঠিকভাবে চালাতে হলে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আমরা যারা সাংবাদিক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক আছি, যারা চাই দেশটা ভালো চলুক, মানুষ অধিকার পাক, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হোক তাদেরও সঠিক ভূমিকা রাখতে হবে। সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে হবে। সত্য লিখতে হবে। ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিলে রাষ্ট্রকে কোনো সময়ই সঠিকভাবে চালানো সম্ভব নয়।
কবি আব্দুল হাই শিকদার বলেন, শেখ মুজিব ফ্যাসীবাদের প্রতীক। দুর্ভাগ্যের বিষয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরও ফ্যাসিবাদের এই প্রতীক উপদেষ্টাদের মাথার ওপর ঝুলছে। তারা সাংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী সরকার। এই সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ এই সংবিধানকে ফেলে দিয়ে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন রেখে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। কারণ এই সংবিধান দেশের ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে না।
এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু উপস্থিত লেখক ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এই দেশ, এই সমাজের আয়না। একটি ফ্যামিবাদী সরকার সমাজে এমন বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিলো যে আজ সাংবাদিকদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হচ্ছে। আমরাতো এমন দেশ চাই না যেখানে সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক বা প্রেসক্লাবের সভাপতিকে পালিয়ে যেতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমরা লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিকদের কাছে নতুন করে দেশ গড়ার সঠিক ভূমিকা চাই। আমরা চাই আপনারা দেশকে সঠিক রাস্তায় চালাতে ভূমিকা রাখবেন। আমরা সার্বিক সহোযোগিতা করব ইনশাআল্লাহ।
মতবিনিময় সভায় দেশের স্বনামধন্য সাংবাদিক, লেখক ও কবি সাহিত্যিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/ইএস