‘শিবির রগ কাটে কি না’ গুগলে সার্চ দিন, কিছুই পাবেন না: ফরহাদ

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ।
এ সময় সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাবি শিবির সম্পাদক বলেন, ছাত্রশিবির কারো রাগ কেটেছে কি না আপনারা গুগুলে সার্চ দিয়ে দেখবেন। সেখানেই কিছুই পাবেন না।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। ফরহাদ বলেন, ‘আমরা সভাপতি ও সেক্রেটারি আত্মপ্রকাশ করেছি এবং খুব শিগগিরই আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করবো। আমাদের কিছু সময় প্রয়োজন।’
বৈষয়ম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্পর্কে ফরহাদ বলেন, ‘আন্দোলনে ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। এখানে কারো একক কৃতিত্ব নেয়ার সুযোগ নেই।’ এছাড়া ক্যাম্পাসে দীর্ঘ সময় হত্যার ভয়ে শিবির নেতাকর্মীদের পরিচয় গোপন রাখতে হয়েছিল বলেও দাবি করেন ঢাবি শিবির সম্পাদক।
শিবিরের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলে যেমন ক্যান্ডিডেটরা পদের জন্য দাঁড়িয়ে যান সেখানে আমাদের শিবিরে তার কর্মী পর্যায় থেকে জনশক্তিরা সেটা নির্ধারণ করে দেয়। তারাই বলে দেয় আমরা তাকে সভাপতি বা সেক্রেটারি হিসেবে চাই। এখানে অন্য কোনো অথরিটি নাই।’
‘এসময় ছাত্রশিবির রগকাটে কি না’— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ফরহাদ বলেন, ‘আপনি রগকাটা নিয়ে গুগলে সার্চ দেবেন, দেখবেন শিবিরের বিরুদ্ধে এমন কোনো ডকুমেন্টস পান কি না। যা পাবেন সব ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পাবেন। ফ্যাসিবাদ দীর্ঘদিন ধরে একটা বিষয় প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছে। কথা বললে, শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ফেলবে। সুতরাং কেউ সমর্থন না করলেও বিরোধীতা করতে পারেনি। সামগ্রিক ইফোর্ট দিয়ে তারা এটা প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররাজনীতি থাকবে না। সবকিছু প্রশাসন ঠিক করবে। তারপর ছাত্ররাজনীতির পরিবর্তিত রূপ চালু হবে।’
‘বহির্বিশ্বের কাছে কেন আপনাদের নিষিদ্ধ সংগঠন বলে প্রচার করে আসছে’— এমন প্রশ্নে ঢাবি শিবির সম্পাদক বলেন, ‘২০০৮ সালের পরে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তারা ফ্যাসিবাদ কায়েমের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়কে বাধা মনে করেছে। তারমধ্যে প্রথম হলো সেনাবাহিনী। তাই তারা বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এরপর তারা শিবিরকে তাদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা মনে করে আমাদের ওপর আক্রমণ করেছে। শিবিরের এমন কোনো লেয়ার নেই যেখানে হামলা হয়নি। শিবির সভাপতিকে কারণ ছাড়া টানা ৫৬ দিন রিমান্ডে নিয়েছে। এমনকি নামাজের সময়ও ছাত্রলীগ হামলা করেছে।’
শিক্ষার্থীরা শিবিরকে কীভাবে গ্রহণ করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বলে রাখা ভালো, ফ্যাসিবাদ দুটি বিষয় কায়েম করেছে। প্রথমত, শিবিরের সব অফিস বন্ধ করে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে। দ্বিতীয়ত, শিবিরের প্রতি ভীতি তৈরি করেছে। আমাদের আত্মপ্রকাশের পর এই ভিত্তি ভেঙে গেছে। প্রায় সব শিক্ষার্থী আমাদের পজেটিভলি গ্রহণ করেছে। যারা আমাদের দীর্ঘ ৫ বছর ধরে দেখেছে, আমাদের আচরণ, ব্যক্তিত্ব দেখেছে তারা অনলাইনে ফিডব্যাক দিচ্ছে।’
‘বড় একটা জেনারেশন শিবিরকে চিনে না, এ ব্যাপারে আপনাদের উদ্যোগ কী হতে পারে?’ জবাবে ফরহাদ বলেন, ‘আমাদের আত্মপ্রকাশই বড় একটা উদ্যোগ। আপনারা যদি সার্ভে করেন, দেখতে পারবেন প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী আমাদের ব্যাপারে পজেটিভ ধারণা পোষণ করে। আমাদের বিরুদ্ধে যে বয়ান ছিল সেটাকে তারা মিথ্যা বলেই ধরে নিয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/এসকে/এসআইএস)

মন্তব্য করুন