বাজারদর নিয়ন্ত্রণে প্রতিযোগিতা কমিশন আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবতা
বর্ষাকালের শেষের দিকে এ বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাঘাট ও নদ-নদীতে পানি এবং বছরজুড়ে বন্যার প্রকোপ। পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থার অবনতি ও বাজারে নিত্যপণ্যের জোগান কম থাকায় দাম বেড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়েছে। কাঁচা বাজারে সব জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিগত ৫-৭ বছর পণ্যমূল্যের লাগাম ছুটে গেছে বহু আগেই। এখন ছুটছে বল্গাহীন পাগলা ঘোড়ার মতো। মাননীয় উপদেষ্টা তো বলেই দিয়েছেন, মুরগি ও ডিমের দাম সহসা কমবে না। আবার মুরগি ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক খামারি উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন! মাংসের মূল্য হু হু করে বাড়ছে, দাম আগুনও বলা যায়। বিক্রি হচ্ছে আড়াইশো গ্রাম করে। এটা নিয়ে আবার কেউ কেউ রসিকতা করছেন। কেন গ্রাম হিসেবে মাংস কিনতে হবে? পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে মাছ-মাংস গ্রামে বা পিচ পিচ ইচ্ছেমতো কেনা যায়। আমরা পারছি না কেন? এখানে আমার ভিন্নমত রয়েছে। গ্রাম হিসেবে বিক্রি হওয়াকে কোনোমতেই আমি নেতিবাচক হিসেবে দেখি না। আমার কাছে আপত্তির বিষয় হলো—অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি। আর এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি রোধ বা স্বাভাবিক রাখা যায় কিভাবে সে বিষয়ে নজর দেওয়া যায়।
ব্যবসা-বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ করতে পারবে না। এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে নির্মূল করার জন্য প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনে মোট ধারা ৪৬টি । এই আইনটি প্রণয়নের আগে বাংলাদেশে ‘মনোপলিস অ্যান্ড রেসট্রিকটিভ ট্রেড প্র্যাকটিসেস (কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৭০’ ছিল। এরপর ২০১২ সালে ‘প্রতিযোগিতা আইন-২০১২’ প্রণয়নের মাধ্যমে ওই অর্ডিন্যান্স বাতিল করা হয়।
প্রতিযোগিতা আইন বাংলাদেশের জন্য নতুন হলেও আধুনিক যুগে ১৮৮৯ সালে প্রথম কানাডায়, ১৮৯০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১৯৪৭ সালে জাপানে প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত আইন পাস হয়। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ১০টি দেশে এ আইন প্রচলিত ছিল। ২০১৭ সালে এ আইন বিশ্বের ১৩০টি দেশে চালু হয়। এখন এশিয়ার ১৭টি দেশে প্রতিযোগিতা আইন চালু আছে।
প্রতিযোগিতা আইনের উদ্দেশ্যগুলো অর্জনের জন্য এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী সরকার ‘বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন’ করে। আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী একজন চেয়ারপারসন এবং চারজন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হবে। একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করার পাশাপাশি সম্পৃক্তকরণ ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তোলাই হবে এই কমিশনের কাজ।
ব্যবসায়ীদের একটি অবৈধ চক্র (সিন্ডিকেট) দেশে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের সরবরাহ-ব্যবস্থা প্রায় ব্যাহত করে। এই চক্রটি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য পণ্যমূল্যের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে । মূলত পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য এই সিন্ডিকেটই দায়ী। কিন্তু কিভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় বিষয়টিকে বিবেচনা রেখেই ২০১২ সালে সরকার প্রতিযোগিতা আইন তৈরি করে। পাশাপাশি উক্ত আইন বাস্তবায়নে প্রতিযোগিতা কমিশনও গঠিত হয়েছে । আর এই কমিশনের উদ্দেশ্য হলো—অর্থনীতিতে টেকসই প্রতিযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাজারে সমতা আনার পাশাপাশি ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষা করা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে—বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যেকোনো পণ্য বা সেবার কেনা-বেচা, উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ ও পণ্যের গুদামজাতকরণের সঙ্গে সম্পর্কিত সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই আইনটি প্রযোজ্য। বর্তমান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের দেশে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে অসম প্রতিযোগিতা কমিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন অতীব জরুরি। ‘প্রতিযোগিতা কমিশন’ গঠিত হয়েছে দেশে একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি, বাজার সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে। প্রতিযোগিতা আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজারে অনৈতিক মুনাফার লোভে ষড়যন্ত্রমূলক প্রতিযোগিতাবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা। পাশাপাশি এই আইনে, প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়নে উচ্চতর জ্ঞানভিত্তিক গবেষণাধর্মী এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর একটি কমিশন গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে ।
প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হয়েছে মূলত তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। এগুলো হলো-১. দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করে তা বজায় রাখা। ২. বাজারে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড, এককভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মুষ্টিমেয় কিছু প্রতিষ্ঠানের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ রাখা কিংবা কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিযোগিতাবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা। ৩. এমন কিছু হলে তা নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করা।
কমিশনের ক্ষমতার বিষয়ে ‘প্রতিযোগিতা আইনে’ বলা হয়েছে, কোড অব সিভিল প্রডিউসর-১৯০৮ (অ্যাক্ট-৫ অব ১৯০৮)-এর অধীনে একটি দেওয়ানি আদালত যে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন, প্রতিযোগিতা কমিশনও সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
আইনে বলা হয়েছে, কমিশন যেসব কাজ করবে, সেসব কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—(ক) বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা নির্মূল করা, প্রতিযোগীকে উৎসাহিত করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। (খ) কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতাবিরোধী সব চুক্তি কর্তৃত্বময় অবস্থান ও অপচেষ্টার তদন্ত করা। (গ) প্রতিযোগিতা আইনের অধীনে অপরাধের তদন্ত পরিচালনার পাশাপাশি মামলা দায়ের ও পরিচালনা করা। (ঘ) জোটবদ্ধতা ও জোটবদ্ধতা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদন্তের পাশাপাশি জোটবদ্ধতার শর্তাদি ও জোটবদ্ধতা অনুমোদন বা নামঞ্জুর সংক্রান্ত বিষয় নির্ধারণ করা। (ঙ) প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত বিধিমালা, নীতিমালা, দিক-নির্দেশনামূলক পরিপত্র বা প্রশাসনিক নির্দেশনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের সরকারকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া। (চ) প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন ও প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য উপযুক্ত মানদণ্ড নির্ধারণ করা। (ছ) সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত সার্বিক বিষয়ে প্রচার ও প্রকাশনার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা। (জ) সরকারের পাঠানো প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয় প্রতিপালন, অনুসরণ বা বিবেচনা করা। (ঝ) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও বাস্তবায়নের বিষয়ে অন্য কোনো আইনের অধীন গৃহীত ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব বলছে, ৪৭টি নিত্যপণ্যের মধ্যে ২৬টিরই দাম বেড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এ বলা হয়েছে, ‘ভেজাল’ অর্থ পিউর ফুড অর্ডিন্যান্স, ১৯৫৯–এর ধারা ৩(১) এ সংজ্ঞায়িত Adulteration এবং স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট, ১৯৭৪–এর ধারা ২৫-সি বা অন্য কোনো আইনে উল্লিখিত Adulteration বা ভেজাল।
‘ভোক্তা’ বলতে সাধারণ অর্থে আমরা যেকোনো পণ্যের ক্রেতা বা গ্রহীতাকে বুঝি। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯–এ ভোক্তাকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের যেসব কাজ ভোক্তা অধিকারবিরোধী কাজ হিসেবে গণ্য হবে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ সেসব কাজের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
মামলা ও বিচার হবে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ অনুযায়ী, আইনে যা-ই থাকুক না কেন, সরকার বা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এ আইনের অধীনে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারার্থে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত আমলে নিতে পারবেন।
ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে—জরিমানা ও শাস্তির বিধান আরও সুনির্দিষ্ট যেমন জীবননাশক বা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিক বা ভারী ধাতু বা বিষাক্ত দ্রব্যমিশ্রিত কোনো খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, আমদানি, প্রস্তুত, মজুত, বিতরণ, বিক্রয় বা বিক্রয়ের অপচেষ্টা করলে অনূর্ধ্ব সাত বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। পুনরায় একই অপরাধ করলে সাত বছর থেকে অনূর্ধ্ব ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ লাখ টাকা জরিমানা।
এ ছাড়া দূষণমিশ্রিত কোনো খাবার বিক্রি করলে; শর্ত ভঙ্গ করে কোনো খাদ্যদ্রব্য মজুত বা প্রস্তুত করলে; অনুমোদিত ট্রেডমার্ক বা ট্রেডনামে বাজারজাত করা কোনো খাদ্যপণ্য নকল করে বিক্রির চেষ্টা করলে; খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন বা সংরক্ষণের স্থানে শিল্পকারখানার তেল বা খনিজ বা বর্জ্য থাকার অনুমোদন দেওয়াসহ এমন ২০ ধরনের অপরাধের জন্য অনূর্ধ্ব সাত বছর থেকে কমপক্ষে দুই বছর শাস্তি এবং অনধিক ১০ লাখ টাকা অথবা কমপক্ষে তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। একই অপরাধ পুনরায় করলে শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ আরও বাড়ানোর বিধান রাখা হয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯—দুটি মিলিয়ে পড়লে ওই আইনে যেসব কাজ করার বিষয়ে বিধিনিষেধ অথবা যেসব কাজ অপরাধ গণ্য করা হয়েছে, তা সব নাগরিককে জানতে হবে। কেননা ওই বিধিনিষেধ ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা অধিদপ্তরকে ভেজাল পণ্য বাজেয়াপ্ত ও আটকের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট ১৯৭৪ এর ২৫ এবং ২৭ ও ২৮ ধারার বিধান প্রয়োগ করেও অবৈধ মজুতদার ও মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। অন্যায় ও অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে মূলত বিশেষ ক্ষমতা আইনটি করা হয়েছিল। একটু প্রয়োগ করলেই হয় অথচ এ আইনটি বেশির ভাগ ব্যবহার হয় ইন্ডিয়া হতে কে চকলেট আনল, কে রেলের টিকিট বিক্রি করল, কালোবাজারিতে তার বিরুদ্ধে যেটি এই আইনের মুখ্য বিষয় নয়।
দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিরকালে সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মানুষের চাহিদার তুলনায় তা কি পর্যাপ্ত? এই পরিসর আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে? সরকারেরও নানা সীমাবদ্ধতা আছে, জানি। তাই সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না। শুধু চাই- সবকিছুকে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নিয়মের মধ্যে আনলে বা আইন প্রয়োগে কঠোর হলে হয়তো সমাধান আসতে পারে।
ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে দ্রব্যমূল্যের দর নিয়ন্ত্রণে বাজারকে বেশি প্রতিযোগিতামূলক করতে, সিন্ডিকেট রোধ করতে, বাজারে কর্তৃত্বপূর্ণ অবস্থানকে প্রতিহত করে প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং নিরাপদ খাদ্য ন্যায্যমূল্যে টিসিবির মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। জনগণ সচেতন হলে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত আরও দৃঢ় ও মজবুত হবে। কবির ভাষায় পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তুলতে হবে। হাজার বছর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নাই তাই মৃত্যু নিশ্চিত জেনে নৈতিকতা ও নীতিবোধসম্পন্ন মানুষ হতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যেন ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ করতে না পারে। একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করে নিত্য পণ্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেট প্রতিরোধ এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার প্রতিষ্ঠায় সকল ধরনের কর্মকাণ্ডকে নির্মূল করার জন্য প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ এর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।সেজন্য প্রতিযোগিতা কমিশনকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে হবে। কার্যাক্ষেত্রে কমিশনকে টিসিবির ন্যায় ম্যাজিস্ট্রেসীসহ আইনগতভাবে শক্তিশালী করে একটা আন্তর্জাতিক মানের কমিশন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।
লেখক: মোঃ তাজুল ইসলাম (পিএইচডি ফেলো) আইন বিশ্লেষক ও কলামিস্ট