সাফ শিরোপা জয়ে সাতক্ষীরার তিন কন্যার অনন্য অবদান

টানা দ্বিতীয়বার নারী সাফ টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে এবারের সাফল্যের পেছনে সাতক্ষীরার তিন নারী ফুটবলারের অসামান্য অবদান রয়েছে। অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, ডিফেন্ডার মাছুরা পারভীন এবং আফঈদা খন্দকার প্রান্তি।
অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের সবুজবাগ এলাকায়। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী সাবিনা বাবার সামান্য আয়ের সংসারেও খেলা চালিয়ে গেছেন। তার সংগ্রামী জীবনের গল্প সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।
সাবিনার সেজ বোন শিরিনা খাতুন বলেন, ‘সাবিনা আমাদের গর্ব। তার ছোটবেলার সংগ্রাম আজকের সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় থেকে সাবিনা খেলাধুলার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী ছিল। সে সব খেলায় অংশ নিত। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় সে আকবর স্যারের ফুটবল কোচে খেলা শুরু করে। বাবা ভাঙারির ব্যবসা করতেন। সাতজনের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। বাবার সামান্য আয়ে তিনবেলা ঠিকমতো খাওয়া জুটতো না। খেয়ে না খেয়ে সাবিনা খেলা চালিয়ে গেছে নিয়মিত। স্কুলড্রেস ব্যাগ, খেলার ড্রেস ছিল না, তারপরও সে খেলা চালিয়ে গেছে।’
অন্যদিকে মাছুরা পারভীনের নতুন বাড়ি সাতক্ষীরা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বিনেরপোতা এলাকায়। তার পরিবার এখনো তার সাফল্যের আনন্দে মেতে আছে। তাদের সরকার কর্তৃক দেওয়া আট শতক জমির ওপর টিনশেডের ঘরই মাছুরার পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছে।
আফঈদা খন্দকার প্রান্তির বাড়ি সুলতানপুর গ্রামে। তার বাবা খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং তার কাছ থেকেই আফঈদার ফুটবলে হাতেখড়ি।
প্রিন্স বলেন, ‘বাংলাদেশ নারী ফুটবল টিমে সাতক্ষীরার তিন কৃতি সন্তান রয়েছে। এদের অবদানের জন্যই বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমার মেয়ের প্রথম সাফ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ এবং গোল করা আমাদের গর্বিত করেছে।’
জাতীয় ক্রীড়া পদকপ্রাপ্ত সাবেক ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান বাবু বলেন, ‘পরপর দুটি সাফ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সাফল্যে সাতক্ষীরার তিনজন খেলোয়াড়ের অবদান অনস্বীকার্য। তাদের নেতৃত্ব এবং পারফরমেন্স বাংলাদেশকে আবারও চ্যাম্পিয়ন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের সাফল্যে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য রয়েছে অসংখ্য শুভকামনা। সাতক্ষীরার তিন কন্যা দেশের গর্ব এবং তাদের সাফল্য বাংলাদেশের ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’
(ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন