মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে এনবিআরের আন্দোলন স্থগিত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে এবং এনবিআর সংস্কারের লক্ষ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। এর আগ পর্যন্ত জারিকৃত অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না।
সরকারের এই আশ্বাসের পর পর আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
রোববার (২৫ মে) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ঐক্য পরিষদ। তবে চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে তার সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।
এর আগে বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সোমবার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিষদ। পরে সন্ধ্যায় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পরিষদের দাবির বিষয়ে স্পষ্ট করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
এনবিআর সংস্কারের জন্য সরকারের অধ্যাদেশ জারির পর উদ্ভূত আন্দোলন পরিস্থিতির আবহের মধ্যে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় মন্ত্রণালয়।
রাজস্ব সংস্কারের লক্ষ্যে সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া ইতিবাচক ঘোষণাকে স্বাগত জানায় ঐক্য পরিষদ।
এক্য পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সোমবার থেকে ঘোষিত কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলো। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবি এখনও পূরণ হয়নি। তাই চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ এছাড়া ঘোষণা অনুযায়ী, অফিস সময়ের বাইরে অতিরিক্ত সময় কাজ করে বিগত দিনের অনিষ্পন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ।
এর আগে সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাস্তবায়ন বিষয়ে গত ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রেসনোটে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে। সরকার আশা করেছিল অধ্যাদেশের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট সার্ভিসের সকল উদ্বেগের অবসান ঘটবে। কিন্তু এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাম্প্রতিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ বিষয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে। এমতাবস্থায়, এ বিষয়ে নিম্নরূপ অধিকতর স্পষ্টিকরণ করা হলো:
প্রথমত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। দ্বিতীয়ত বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি পৃথকীকরণের কাঠামো কিরূপে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
তৃতীয়ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম পৃথকীকরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সকল সংশোধনী আনা হবে। উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত জারিকৃত অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না।
সরকার আশা প্রকাশ করছে যে, এই ঘোষণার মাধ্যমে কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের সকল উদ্বেগের অবসান ঘটবে এবং দেশের রাজস্ব আহরণ ও রাজস্ব সেবা প্রদানকারী সকল দপ্তর অবিলম্বে পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করবে।
(ঢাকাটাইমস/২৫মে/মোআ)

মন্তব্য করুন