চার অপরাধে চাকরিচ্যুতির বিধান রেখে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি

চার অপরাধের জন্য চাকরিচ্যুতির বিধান রেখে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ (সংশোধন) ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শিরোনামে অধ্যাদেশটি জারি করল সরকার।
রোববার (২৫ মে) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
গত ২২ মে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ২৯তম বৈঠকে এ অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই অধ্যাদেশকে ‘কালো আইন’ উল্লেখ করে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
অধ্যাদেশ জারির কারণ হিসেবে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয় এবং সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে। সেহেতু সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।
সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৭ এর পর নতুন ধারা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে, এই আইন বা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালায় যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারি-
(ক) এমন কোনো কার্যে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারির মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অথবা
(খ) অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ব্যতীত বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত, নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অথবা
(গ) অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, অথবা
(ঘ) যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত থেকে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন,
তাহলে তা হবে একটি অসদাচরণ এবং এজন্য তিনি উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
কোনো সরকারি কর্মচারীকে দণ্ড প্রদান করা হলে তিনি দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে ধারা ৩৪ এর অধীন আপিল করতে পারবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আদেশ বহাল রাখতে, বাতিল করতে বা পরিবর্তন করতে পারবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, তবে এইক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন করতে পারবেন এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত মনে করবেন, সেরূপ আদেশ প্রদান করতে পারবেন।
এই অধ্যাদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৫মে/মোআ)

মন্তব্য করুন