নদীতে নিষিদ্ধ ঝোপের ছড়াছড়ি, রুদ্ধ পানিপ্রবাহ-বিপাকে জেলেরা

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:২৫
অ- অ+

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছোট-বড় ও শাখানদী নিষিদ্ধ ঝোপে ভরে গেছে। এসব ঝোপের কারণে নৌযান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলে ও স্থানীয়রা।

প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় নদীতে নিষিদ্ধ ঝোপের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। জেলেরা বলছেন, এর পেছনে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

জেলেরা জানান, নদীতে বাঁশ ও গাছের ডালপালার ঝোপ তৈরি করে নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। ঝোপগুলোতে প্রভাবশালীরা আধার রেখে দিয়ে ডিমওয়ালা মাছসহ ছোট মাছও নিধন করছে। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও জীববৈচিত্র্য। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় সারা বছর এই অবৈধ পন্থায় মৎস্য শিকার করছে মৌসুমি মাছ ব্যবসায়ীরা।’

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর বড় রায়পাড়া, মুদারকান্দি, আড়ালিয়া, গুয়াগাছিয়া এলাকার বসুরচর, কদমতলী, পৌঁড়াচক বাউশিয়া, ইসমানির চর, গোয়ালগাঁও, ফুলদী নদী ও মেঘনার শাখানদীতে অসংখ্য ঝোপ। অপরদিকে ভিটিকান্দি, নয়াকান্দি, মনাইরকান্দি গ্রাম সংলগ্ন মেঘনার শাখানদীতে একই রূপ।

এসব এলাকায় দেখা যায়, নদীতে বাঁশ ও গাছের ডালপালা ফেলে তার ওপর পানিতে কচুরিপানা রশি দিয়ে বৃত্তাকার ঘিরে রেখে ঝোপ বানানো হয়েছে। এসব ঝোপে বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় মাছ, ডিমওয়ালা চিংড়ি মাছ ও পোনা মাছ আশ্রয় নেয়। কিছুদিন পর বাঁশের ফালা ও মাছ ধরার বড় জাল দিয়ে ঝোপের চারদিক ঘিরে ফেলেন মৌসুমি জেলেরা। এসব ছোট ছিদ্রযুক্ত জালে উঠে আসে ঝোপে আশ্রয় নেওয়া মাছ। ছোট পোনা থেকে শুরু করে বড় মাছ, এমনকি সেখানে থাকা অন্য জলজ প্রাণীও আটকা পড়ে জালে।

জানা গেছে, নদীতে ঝোপ দেয়া সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু প্রতি বছর একটি সিন্ডিকেট নদীর যত্র-তত্র ঝোপ তৈরি করেন। এসব ঝোপের কারণে অনেক সময় বন্ধ হয়ে যায় নৌযান চলাচল। অনেক সময় নদীর কচুরিপানা বিলে উঠে যায়। পরে কৃষি মৌসুমে জমি থেকে কচুরিপানা অপসারণ করে শস্য ফলাতে বিপাকে পড়েন কৃষকরা।

নদীতীরের একাধিক বাসিন্দা জানান, এলাকার প্রভাবশালীরা এই এলাকায় অসংখ্য মাছের ঝোপ তৈরি করেছে। এক একটা ঝোপ থেকে পাঁচ-দশ লাখ টাকার মাছ পাওয়া যায়। তাই ঝোপ তৈরির প্রতি লোলুপ দৃষ্টি স্থানীয় প্রভাবশালীদের।

ঝোপগুলোর কারণে নৌকা ও ট্রলার চলাচল করতে পারে না অভিযোগ করে স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, ঝোপে ব্যবহার করা কচুরিপানা শুকনো মৌসুমে নদীর পার ঘেঁষে কৃষিজমিতে পড়ে থাকে। তাতে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়।

একেকটি ঝোপ তৈরি করতে ৫-৬ লাখ টাকা খরচ হয় বলে জানা গেছে। আর একটি ঝোপ থেকে ১০-১২ লাখ টাকার মাছ পাওয়া যায়। প্রভাবশালীদের এই ঝোপের কারণে প্রকৃত জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে পারেন না। জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। নদীর জীববৈচিত্র্য ও মাছ রক্ষায় এসব ঝোপ নদী থেকে উচ্ছেদ করার দাবি জানান স্থানীয়রা।

গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতি বছরই নদীতে ঝোপ দিচ্ছে বিভিন্ন মহল। অবৈধ ঝোপ বন্ধে সরকারি আইন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজন যৌথ উদ্যোগ।

উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরে জনবল সংকটের কারণে নিষিদ্ধ ঝোপ উচ্ছেদে কিছু করা যাচ্ছে না বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/১নভেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মোহাম্মদপুরে ৩৮০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
সাংবাদিক সাইদুরের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ 
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল সোমবার
এবার বাংলাদেশের চার টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ করল ভারত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা