যাত্রা করল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ ক্লাব
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধনে হাতে-কলমে গবেষণা শিক্ষা, একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন, উদ্ভাবন ও পেশাদারি বিকাশের লক্ষ্যে ‘এ রোড টু ইনোভেশন’ স্লোগানে প্রথমবারের মতো যাত্রা করল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) রিসার্চ ক্লাব। এটি একটি অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যা রাজনীতি, ধর্ম, জাতি, বর্ণ এবং গোষ্ঠী থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাকৃবি রিসার্চ ক্লাবের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তাজউদ্দিন, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, বাকৃবি রিসার্চ ক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান এবং সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক ড. এ কে এম আবদুল্লাহ আল-আমিন। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ক্লাবটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা জানান, বাকৃবি রিসার্চ ক্লাবের ভিশন হলো শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা, সমস্যা সমাধান করা, বিভিন্ন শাখা/ ডিসিপ্লিনের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তুলে সামাজিক প্রভাব বাড়ানো এবং বৈশ্বিক অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করা।
আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান বলেন, রিসার্চ ক্লাবের উদ্দেশ্য হলো বাকৃবির স্নাতক পড়ুয়া এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের অত্যাধুনিক গবেষণায় অনুপ্রাণিত করা, গবেষণার ধারণা, বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাভাবনা এবং বাস্তবায়নের ওপর শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, আন্তর্জাতিক গবেষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করা, বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রাণিত করা, গবেষণা পদ্ধতি, তথ্য বিশ্লেষণ, উপস্থাপনা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর সেশন পরিচালনা করা, বর্তমান গবেষণা বিষয়ের ওপর বিশেষজ্ঞ আলোচনা এবং সেমিনারে অংশগ্রহণ ও হোস্ট করা।
এ ছাড়া আন্তবিভাগীয় গবেষণায় সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ ও হোস্ট করা, সমালোচনামূলক মূল্যায়নের জন্য একাডেমিক ও গবেষণা কাগজপত্র পর্যালোচনা করা এবং আলোচনা করা, উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করতে গবেষণা প্রস্তাব এবং প্রতিযোগিতা হোস্ট করা, ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা লাভের জন্য ল্যাব, ইন্ডাস্ট্রিস, বা ফিল্ড পরিদর্শন করা এবং সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষক বা গবেষণায় অভিজ্ঞ শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থীদের সাথে সংযুক্ত করা এবং গবেষণা প্রস্তাব লেখা ও গবেষণা তহবিল সংগ্রহ করার কৌশল শেখানো উদ্দেশ্য বলে জানান সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই একজন শিক্ষার্থী একজন ভালো গবেষক হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকলে আমরা তাদের গবেষক হিসেবে তৈরি করব।’
রিসার্চ ক্লাবের উদ্বোধনকালে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্র এবং গবেষণায় সমৃদ্ধ করার জন্য এই ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যেন তারা বিশ্বের যেকোনো স্থানে কাজ করতে পারে। একজন অধ্যাপকের কাজের মৌলিক উপাদান হলো তার শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ছাড়া তারা চলতে পারেন না। গবেষণার আগে উপযুক্ত পরিকল্পনা এবং চিন্তাশক্তি থাকা জরুরি। ছাত্র-শিক্ষকের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে তাদের মধ্যে লুকায়িত উদ্ভাবনী শক্তি জাগ্রত করতে হবে।
উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন তাদের গবেষণার মাধ্যমে উন্নত বিশ্বকেও ছাড়িয়ে যায়, এই কামনা করি। ভারত-চীনকে পাশ কাটিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবে এই স্বপ্ন আমি দেখি।’ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবর্দা পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/মোআ
মন্তব্য করুন