গিনিতে ফুটবল মাঠে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত প্রায় ১০০
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনিতে একটি ফুটবল ম্যাচে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে শতাধিক সমর্থকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রেফারির একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত। সমর্থকরা গ্যালারি ছেড়ে মাঠে নেমে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এমনকি সমর্থকদের দিক থেকে রেফারির উদ্দেশে পাথর ছুঁড়েও মারা হয়। পরে সংঘর্ষ স্টেডিয়ামের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু এক পর্যায়ে থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। খবর এএফপি।
স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, গিনির সামরিক নেতা তথা প্রেসিডেন্ট মামাদি দোম্বুয়ার উদ্দেশ্যে একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেই টুর্নামেন্টের এক ম্যাচ দেখার জন্য স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন ফুটবল ভক্তরা। সেখানেই ম্যাচ চলাকালীন রেফারির এক সিদ্ধান্ত ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে। এরপর একটা সময় ভয়াবহ রূপ নেয় সেই অশান্তি। রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের সমর্থকরা। খেলা চলাকালীনই মাঠে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা।
স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, সংঘর্ষে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের মর্গে লাশের স্তূপ হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তায় অনেক লাশ পড়ে আছে। তবে এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় গিনির প্রধানমন্ত্রী মামাদু ওরি বাহ সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
গিনির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এনজেরেকোরে প্রেসিডেন্ট মামাদি দৌমবৌয়াকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য এই ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জোর করে গিনির ক্ষমতা দখল করে নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছিলেন মামাদি। পরে আন্তর্জাতিক বিরোধিতায় ক্ষমতা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে অন্য এক স্টেডিয়ামে গিনির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ২০০৯ সালে রাজধানী কোনাক্রির স্টেডিয়ামে বিরোধী দলের এক সভাবেশে সরাসরি গুলি করে সেনারা। এই ঘটনায় ১৫৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরও অনেকে। অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হন। ওই গণহত্যার দায়ে সাবেক সেনাশাসক মুসা দাদিস কামারাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/২ ডিসেম্বর/আরজেড)
মন্তব্য করুন