শহীদ মিনারে হামলায় রক্তাক্ত গণঅধিকারের ফারুক, ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসানের ওপরে হামলা হয়েছে। এ হামলায় তিনি রক্তাক্ত জখম হয়েছেন।
শনিবার বিকালে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার পর ফারুকের ওপর হামলা করা হয়। পরে নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে তার উপর হামলার ঘটনায় বিপ্লবী পরিষদের লোকেদের অভিযুক্ত করেন ফারুক৷
এদিকে, আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। এ বিষয়ে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে সংগঠনটি।
জানা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফ্যাসিবাদ বিলোপ ও নতুন সংবিধানের দাবিতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক সংগঠন নাগরিক সমাবেশ আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন গণঅধিকার পরিষদ নেতা ফারুক হাসান।
অনুষ্ঠান চলাকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন ফারুক। এ সময় অনুষ্ঠানে আসা কিছু ব্যক্তি ফারুকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং একপর্যায়ে তার এবং সঙ্গীদের উপর হামলা করেন। এসময় কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধরা। পরে ফারুককে ধাওয়া দিয়ে ঢাকা মেডিকেল অভিমুখী সড়ক পর্যন্ত নিয়ে যান এবং সেখানেও তাকে মারতে থাকেন।
আহত হওয়ার পর নিজের ফেসবুক একাউন্টে ভিডিও লাইভে এসে ফারুক হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজকে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমাবেশ ছিল। সেখানে আমি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখি। আমি বলেছি, আমরা জুলাই-আগস্টে বিপ্লব করেছি একটা বিপ্লবী সরকারের গঠনের জন্য। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইনি। আমরা হাসিনার সংবিধান ছুড়ে ফেলে একটি বিপ্লব সফল করেছি।’
তিনি বলেন, যারা ৫ আগস্টের পরে ক্যান্টনমেন্টে আর্মির প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, সেদিনই মূলত অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত এসেছে। বিপ্লবী সরকার না হওয়ার কারণে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিপ্লবী সরকার না থাকার কারণে দেশে সমস্যা ও সংকট তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আমার এ বক্তব্য শতভাগ সঠিক।’
তার দাবি, ‘আমার এ বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে বিপ্লবী পরিষদের নেতাকর্মীরা হামলা করে আমাকে আহত করেছে। আমার মোবাইল, মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে। নিজেকে গণঅধিকার পরষদের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও তারা এই হামলা চালিয়েছে৷’
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘অনুষ্ঠানে উপস্থিত ১০-১৫ জন ফারুক হাসানের উপর হামলা করেছে। আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে। পুলিশ যদি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির মজুমদার বলেন, ‘ফারুকের উপর হামলার সঙ্গে আমাদের সংগঠনের কেউ জড়িত নয়।’
তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন ফারুক। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা ফারুকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায়। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ফারুকের উপর হামলা চালায়।’
(ঢাকাটাইমস/৪জানুয়ারি/আরএইচ/এজে)

মন্তব্য করুন