আজিমপুর করবস্থানে চাঁদাবাজির মামলা: বাদী-সাক্ষী চেনেন না আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:১৩
অ- অ+

মামলার বাদী-সাক্ষী কেউ তাকে চেনেন না, নামও জানেন না, অথচ ডিএমপির আজিমপুর থানায় হওয়া চাঁদাবাজি মামলার আসামি ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারও করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক দিন হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি পান গত সরকারের আমলে বহু হামলা-মামলার ভুক্তভোগী এই নেতা।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিগত সরকারের আমলে ৮৭টি মামলার আসামি আমিনুলের অভিযোগ, কবরস্থানে চাঁদাবাজির মামলায় তাকে জড়ানোটা স্থানীয় রাজনীতির আধিপত্যের ষড়যন্ত্র।

গত ২৩ ডিসেম্বর আজিমপুর কবরস্থানে চাঁদাবাজি ও দখলদারির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করে সেনাবাহিনী। এরপর ৩১ ডিসেম্বর রাতে আমিনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১ জানুয়ারি পুলিশ তাকে আদালতে পাঠালে জামিন দেন আদালত।

এদিকে মামলার বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে মেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাদী রাকিব মিয়া (২৫) মামলার অন্য আসামিদের চিনলেও আমিনুলকে চেনেন না; তার নাম কীভাবে এজাহারে এলো তা-ও জানেন না তিনি।

বাদীর এমন বক্তব্যের পর মামলার প্রধান সাক্ষী সামছুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ঢাকা টাইমসকে তিনি জানান, আমিনুলের নাম তিনি আগে কখনো শোনেননি, তাকে দেখেনওনি। গ্রেপ্তারের পর তার সম্পর্কে জানতে পারেন এই সাক্ষী।

লেখাপড়া না-জানা বৃদ্ধ সামছুর রহমান জানান, ওই দিন থানায় ডেকে নিয়ে তার নাম ও পিতার নাম জানতে চাওয়া হয়। পরে জানতে পারেন তিনি ওই মামলার সাক্ষী।

আজিমপুর কবরস্থানে চাঁদাবাজির অভিযোগ, অথচ সেখানকার কর্মচারীরা আমিনুলের জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। কবর খোঁড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা একাধিক কর্মচারী ঢাকা টাইমসকে জানান, তার বাসা কবরস্থানের পাশে হলেও সেখানে তেমন একটা যান না আমিনুল। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগও কখনো শোনেননি তারা। কীভাবে তিনি গ্রেপ্তার হলেন সেটা তাদের কাছে বোধগম্য নয়।

লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈনু জানান, ‘তিনি (আমিনুল) মামলার এজাহারনামীয় আসামি। এ কারণে স্বাভাবিকভাবে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।’

চাঁদাবাজির অভিযোগে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। তাই এখনই বিস্তারিত বলতে পারছি না।’

এদিকে এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত ৩ জানুয়ারি লালবাগের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির পদ থেকে আমিনুল ইসলাম আমিনকে বহিষ্কার করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আমিনুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মামলার এজাহারে ৯ নম্বর আসামির জায়গায় আমিন নাম রয়েছে। তবে আমার নাম আমিনুল ইসলাম। কবরস্থানে আমার কোনো কাজ নেই। আমাকে কেন, কীভাবে, কারা আসামি করল, সেটা আমি জানি না। এটা মুখস্থ মামলা।’

তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে অভিযোগ করেন আমিনুল। গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এলাকায় বিএনপির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আমাকে আসামি করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে যারা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী, আমার ভালো চায় না, তারা আমার নাম জড়িয়েছে মামলায়।’

গত সরকারের আমলে শতখানেক মামলার আসামি আমিনুল আরও বলেন, ‘বিএনপির দুঃসময়ে রাজপথে ছিলাম, শত হামলা-মামলার মধ্যেও কখনো পিছিয়ে যাইনি। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিগত সরকার আমাকে ৮৭টি মামলার আসামি করেছে। এখন আমি যেভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি, দল এটা পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা করি।’

আজিমপুর কবরস্থানে চালার কাজ করে কাজী কনসট্রাকশন। এই প্রতিষ্ঠানের কাজী হেমায়েত হোসেন রনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এই কবরস্থানে বহু বছর ধরে চাঁদাবাজি চলে আসছে। তবে আমিনুল ইসলামের কোনো সম্পৃক্ততা কখনো দেখিনি।’

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সংস্কারের সব ইতিবাচক সিদ্ধান্তে সমর্থন জানাবে জামায়াত: মোহাম্মদ তাহের
নাট্যোৎসব বন্ধ বা স্থগিত সম্পর্কে কোন নির্দেশনা দেয়নি ডিএমপি
ফরিদপুর-২ শামাকে ছেড়ে ফরিদপুর-৪ এ শহীদুল ইসলাম বাবুল, আনন্দ-বেদনার কাব্য 
দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে নির্বাচন করতে বলেছিলেন নিতায় রায়!
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা