খেজুরের সঙ্গে যেসব খাবার খেলেই দেখবেন ম্যাজিক, দূরে থাকবে জটিল রোগ

খেজুরকে বলা হয় রাজকীয় ফল। শুধু অতুলনীয় স্বাদ আর গন্ধের জন্য নয়, খেঁজুরের খ্যাতি তার অসাধারণ রোগ নিরাময়ের জন্যও। হৃদরোগীদের জন্যও খেজুর বেশ উপকারি। উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাটসম্পন্ন খেজুর জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরি। খেজুর দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারি। এ ছাড়া ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যানসার রোধ করে।
পুষ্টিবিদদের মতে, খেজুরে থাকে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি, সোডিয়াম, আয়রনসহ আরো অনেক খাদ্য উপাদান। এছাড়া খেজুরে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা।
রোজ খেজুর খেতে পারেন, খেজুরে একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগই পূরণ করে।
খেজুরে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, আঁশ, পটাশিয়াম, জিঙ্ক ও আয়রন।
খেজুরের পুষ্টিগুণ, খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয় চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। সুস্বাদু আর বেশ পরিচিত একটি ফল, যা ফ্রুকটোজ ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। আছে প্রচুর ভিটামিন বি, যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়ামসহ নানান পুষ্টিগুণ। এসব খাদ্য উপাদান শরীরে অতীব প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে যখন আপনার বয়স পৌঁছাবে ৩০-এর কোঠায়। এ সময় মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতা কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, আমাদের কর্মশক্তি হ্রাস, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, পেশির সমস্যা, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি, হিমোগ্লোবিনের অসামঞ্জস্যতা, হজমে সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাড় ক্ষয়, ত্বকের নানা সমস্যা হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
তবে 'নো সুগার’ ডায়েটে খাবারে মিষ্টি স্বাদ আনতে খেজুর পছন্দ অনেকের। শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে খেজুর। রোজ একটি করে খেজুর খেলে শরীরের সঙ্গে মনও থাকে চনমনে। খেজুরে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম। ফলে শরীরে খনিজের ভারসাম্য বজায় থাকে। নার্ভের সমস্যা কাটাতে খেজুরের জুড়ি মেলা ভার। ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে খেজুর।
প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকায় খেজুর খেলে দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-কে, এসেনসিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিডে ভরপুর খেজুর নিয়মিত খেলে হাড় মজবুত হয়, অস্টিওপোরোসিসের আশঙ্কা কম থাকে। দিনের যে কোনও সময়ে সুইট ক্রেভিং হলে খেজুর খেতে পারেন। আর এই খেজুরের সঙ্গে কয়েকটি খাবার খেলে দ্বিগুণ উপকার পাবেন।
১. সকালে অনেকেই ব্রেকফাস্টে ওটস, স্মুদি বা দুধের সঙ্গে মুসলি, কর্নফ্লেক্স খেতে পছন্দ করেন। এর সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে বাড়বে পুষ্টিগুণ। সারাদিন শরীর থাকবে চাঙ্গা।
২. ডার্ক চকোলেটের সঙ্গে খেজুর খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। ডার্ক চকোলেটে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়। রক্ত চলাচলও সচল রাখে।
৩. খেজুরের সঙ্গে কাঠবাদাম ও ডার্ক চকোলেট খেলেও পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, লিভার ভাল রাখতে, হার্টের খেয়াল রাখতে, অনিদ্রা দূর করতেও খেজুরের সঙ্গে কাঠবাদাম ও চকোলেটের জুটি অনবদ্য।
৪. ৫-৬টি কাঠবাদামের সঙ্গে যদি ১টি খেজুর এবং সামান্য একটু কেশর মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে কাঠবাদাম এবং খেজুরের পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়।
৫. কাঠবাদাম, খেজুর এবং অল্প মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতাও অনেক।
৬. পেস্তাবাদাম, খেজুর এবং দই একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে গরমে শরীর সতেজ থাকে ও ক্লান্তি দূর হয়।
বেশি উপকারের আশায় অবশ্য মুঠো মুঠো খেজুর খেয়ে নেবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। খেজুর মিষ্টিজাতীয় ফল, তাই বেশি খেলে রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। প্রতিদিন তিনটি খেজুর খাওয়াই যথেষ্ট।
(ঢাকাটাইমস/১২ এপ্রিল/আরজেড)

মন্তব্য করুন