পান্তা-ইলিশ নিয়ে বাকবিতণ্ডা: ইউএনওর কর্মচারীদের পেটালেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ২১:০২
অ- অ+

দিনাজপুরের বিরামপুরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে উপজেলা বিএনপির নেতাদের সামনেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ও উপজেলা পরিষদের কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের পৌর সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিনজন তিন কর্মচারী আহত হয়ে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্তমঞ্চ এলাকায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা- ইউএনও নুজহাত তাসনীম আওন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন।

আহতরা হলেন- উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক, আবু হোসেন, ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি। এদের মধ্যে এমদাদুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও নুজহাত তাসনীম আওন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আজ উপজেলা পরিষদের ভেতর মুক্তমঞ্চে চলছিল। অনুষ্ঠানের ফাঁকে উপজেলা পরিষদ ও ইউএনও কয়েকজন কর্মচারী আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য পান্তা, ইলিশ মাছ, ভর্তা ও পানি বিতরণের ব্যবস্থা করছিলেন। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের পৌর সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল ও তার সহযোগীরা খাবার নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনেই বেধড়ক মারপিট করে তিনজনকে আহত করেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনওর কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম ওরফে রনি বলেন, আজকে সুন্দর পরিবেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। এর ফাঁকে অতিথিদের জন্য পান্তা উৎসব শুরু করার জন্য আমরা কয়েকজন নিয়োজিত ছিলাম। আমাদের কাজের ফাঁকে বিএনপির পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল নিজেই খাবার নিতে শুরু করে। আমরা বাঁধা দিলে তারা আমাদের পিটিয়ে আহত করে।

অভিযোগের বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের পৌর সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল বলেন, ‘আমি রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছী।খাবার বিতরণের অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অপমান করায় এমনটি হয়েছে। তবে আমার ভুল হয়েছে।’

অনুষ্ঠানের সামনের অংশে আমরা ছিলাম আর ঘটনা আমাদের থেকে অনেক দূরে উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, ‘এমন একটি অনুষ্ঠানে এই আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন আচরণের পর আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে এসেছি।’

রাসেলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নিবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে রয়েছি আর ওরা পৌর কমিটির। তার পরেও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমার সামনে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন বলেন, আপনি সামনাসামনি আসেন, মোবাইলে নয়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মমতাজুল হক জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি অভিযোগ দিলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা- ইউএনও নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হাজার লোকের আয়োজন ছিল। এমন ঘটনা ঠিক হয়নি। আহত তিন কর্মচারীকে থানায় অভিযোগ দেওয়া কথা বলা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে এনসিপির সমাবেশে দুই গ্রুপের মারামারি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
বাংলাদেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী চীন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ২০০ কেজি ওজনের বোমা পাওয়া গেল মুন্সীগঞ্জে, নিষ্ক্রিয় করল সিটিটিসি
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা