ঈদুল আজহায় বাজারে আসছে নতুন ডিজাইনের টাকা, ৫ টাকায় সাঈদ-মুগ্ধ, ১০০০ টাকায় স্মৃতিসৌধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২১ মে ২০২৫, ১০:১০| আপডেট : ২১ মে ২০২৫, ১১:৩৯
অ- অ+

শিগগির বাজারে আসছে নতুন ডিজাইনের টাকা। ঈদের আগে-পরে বাজারে আসা এসব টাকায় কোনোটিতে থাকছে না বঙ্গবন্ধুর ছবি। জুলাই বিপ্লবে শহীদ, তারুণ্য, সুন্দরবন এবং ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় থাকছে নতুন টাকার নকশায়।

জানা গেছে, ২৭ মে বাজারে আসছে ২০ টাকার নোট। এতে কান্তজিউ মন্দির ও বৌদ্ধমন্দিরের ছবি থাকবে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের চিত্র ও আতিয়া মসজিদের ছবিযুক্ত ৫০ টাকার নোট ২৯ বা ৩০ মে এবং বঙ্গভবন ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবিসংবলিত ১০০০ টাকার নোট ২ জুন বাজারে আসবে বলে জানা গেছে। ইউরোপ থেকে কাগজ সরবরাহে বিলম্ব হওয়ায় আবু সাঈদ ও মুগ্ধের অবয়বসংবলিত ৫ টাকার নোট বাজারে আসবে ঈদের পর।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, নতুন নোটের ডিজাইন ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। কাগজ আনা হয়েছে। ১০০০ টাকার নোটসহ কয়েকটি ভিন্ন নোটের ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। এবার কোনো নোটে মানুষের পুরোপুরি ছবি থাকছে না। তবে জুলাই বিপ্লবে শহীদ, তারুণ্য, সুন্দরবন এবং ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় থাকছে নতুন নোটের নকশায়। আমিও ধারণা করছি, ঈদের আগে কয়েকটি নতুন নোট আসছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৫ টাকায় থাকবে আবু সাঈদ ও মুগ্ধদের ছবি, ১০ টাকায় থাকবে তারুণ্যের ঐক্যের প্রতীক এবং জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ছবি। ১০০ টাকায় থাকবে ইউনেস্কোর স্বীকৃত সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ ও বাঘের চিত্র, যা সাবেক সরকারের বিদায়ের পর নোট রূপান্তরের প্রতীক। ২০০ টাকায় ধর্মীয় বৈচিত্র্যের প্রতীক হিসেবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা থাকবে, আর ৫০০ টাকায় থাকছে ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলের ছবি।

জানা গেছে, গত আগস্টে মাত্র ১৫ দিনে নতুন নোটের নকশা চূড়ান্তের প্রস্তাব করা হলেও তা বাস্তবসম্মত ছিল না। কারণ নকশা, কাগজ, নিরাপত্তা উপকরণসহ সবকিছুতেই বিদেশি অংশগ্রহণ লাগে এবং দরপত্রসহ পুরো প্রক্রিয়ায় ৫-৭ মাস সময় প্রয়োজন। সে কারণে ঈদুল ফিতরের আগেই নোট ছাড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ দেশের নিজস্ব কাগুজে মুদ্রা চালু হয়। মানচিত্রখচিত প্রথম নোটটি ছিল ১ টাকার। ১৯৭৩ সালে ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোট ইস্যু করে বাংলাদেশ। এরপর ৫০ ও ৫০০ টাকার নোটের প্রচলন করা হয় ১৯৭৬ সালে। ১৯৭৯ সালে ইস্যু করা হয় ২০ টাকার নোট। দেশে ২ টাকার নোট চালু হয় ১৯৮৮ সালে। ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই বাজারে আনা হয় সবচেয়ে বেশি মানের ১০০০ টাকার ব্যাংকনোট। আর ২০২০ সালে সর্বশেষ বাজারে আসে ২০০ টাকার নোট।

বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুন মাসে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এই প্রেসে নোট ছাপানো শুরু হয়। ওই বছরের নভেম্বর মাসে ১০ টাকার নোটও ছাপানো হয় সেখানে। প্রতিটি নোট ছাপানোর আগে তার নকশা অনুমোদন করে সরকার। সেজন্য দরপত্র ডেকে চিত্র শিল্পীদের দিয়ে নোটের নকশা করানো হয়।

নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাঁকশাল।

বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় টাকা ছাপায় না। সাধারণত একটি নোট ৪ থেকে ৫ বছর চলে। এরপর তা পুনর্মুদ্রণ করা হয়। ছোট মানের নোট বেশি হাতবদল হওয়ায় তা দ্রুত নষ্ট বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়।

বছরের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা মুদ্রণ বা উৎপাদন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রেখে দেওয়া হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বাজারে ছাড়া হয়, তখনই তা মুদ্রা বা টাকায় পরিণত হয়। তার আগে সেটা টাকা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি সার্কুলেশন প্রতিবেদনে যোগ করা হয় না।

(ঢাকাটাইমস/২১ মে/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে কুমিল্লায় ব্রিটিশ নাগরিককে অর্থদণ্ড 
অতীত ভুলে র‌্যাব সদস্যদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি এনসিপির
ইশরাককে শপথ না করাতে রিটের আদেশ বৃহস্পতিবার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা