দেশির চেয়ে চাইনিজ কমলার কদর বেশি

শীতের সময় বাজারে বেশ চলছে চাইনিজ ছোট কমলা। ছোট ছোট এই কমলাগুলো বাজারে এসেই জয় করে নিয়েছে ফলখোরদের মন। তবে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশি কমলার ওপর। চাইনিজ কমলার মন-ভোলানো স্বাদ আর ভুবন ভোলানো ঘ্রাণ দেশি কমলার চাহিদা কমিয়ে দিয়েছে। ক্রেতারা জানিয়েছেন, সুন্দর সুন্দর ব্যাগে করে বিক্রি করা ডজনখানেক কমলার মধ্যে কোনোটাই পঁচা বা নষ্ট পাওয়া যায় না। এছাড়াও ‘ছোট মরিচে ঝাঁল বেশি’ প্রবাদটির একটি উত্তম দৃষ্টান্তও দেখা যায় চাইনিজ কমলায়। কেননা, ছোট হলেও এগুলো বেশি মিষ্টি। এই কমলাগুলো চীন থেকে জাহাজে করে আসে।
বাদামতলির বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, চাইনিজ কমলা প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। অনেক দোকানির বিক্রি শেষ। আবার অনেকে নতুন করে পসরা সাজাচ্ছেন। তবে সবার একই কথা- এই ফলটার বিক্রি ভালো।
মো. হুমায়ূন নামে এক কর্মচারীর কাছ থেকে জানা যায়, এই কমলায় কোনো ক্ষতি নেই। তারা এই ফলের কোনো ধরনের টেস্ট করেন না। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এটা করেন।
আহসানুল্লাহ নামে এক দোকানি জানালেন, সব ধরনের ফলের টেস্ট পোর্টে হয়। সরকার টেস্ট করে দেয়। তবে মহিউদ্দিন নামে এক ম্যানেজার বললেন, টেস্ট সম্পর্কে তার জানা নেই।
শরিফ নামে এক ম্যানেজার বলেন, সরকারি উদ্যোগে টেস্ট হয়, তবে টেস্ট হয় নিশ্চিত। এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু টেস্ট হয়ে আসে, অবশ্যই উপকারী। কোনো ক্ষতি হয় কি না জানতে চাইলে বলেন, কোনো ক্ষতি বা ফরমালিন থাকলে সরকার আটকাতো। সবই উপকারী।
বাদামতলি ব্যবসায়ী ও ফ্রুটস সমিতির সেক্রেটারির দোকান থেকে পাওয়া যায় সব ধরনের তথ্য। দোকানের ম্যানেজার দিলীপ বলেন, চাইনিজ কমলা মূলত চীন থেকে জাহাজে আসে। এরপর বড় কার্গো ট্রাকের মাধ্যমে আমাদের এখানে আসে। পোর্টে আসার পর ওখানে টেস্ট হয়। টেস্টের পর সার্টিফিকেট দেয়া হয়। আর সার্টিফিকেট দুই দেশ (চীন ও বাংলাদেশ) থেকে প্রদান করা হয়। এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফল আসছে বিদেশ থেকে। বর্তমানে চীনা জাম্বুরা ও আগামীকাল থেকে পারসিমন আসছে।
চাইনিজ কমলা কত টাকা কেনা আর কত টাকা বিক্রি হয় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক ক্রেট কিনতে দাম পড়ে ৯৫০ টাকা আর বিক্রি হয় ১০০০ টাকার মতো। তবে খুচরা বিক্রি এর থেকে বেশি।
মহিউদ্দিন নামে এক দোকানি জানান, কেনা পড়ে ৯০০ টাকা। তবে মাঝে মাঝে লস দিয়ে বিক্রি করতে হয়। তিনি জানান, আমদানি বেশি হলে লস হয়। আবার অনেক সময় পঁচে যায়।
পাইকারি বাজারে এর দাম বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়। জামাল নামে এক দোকানি বলেন, আজ আমাদের ক্রেটপ্রতি দাম পড়েছে ৯০০ টাকার মতো। আর বিক্রি হচ্ছে ৯৩০ টাকার দামে।
খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শামিম নামে এক বিক্রেতা বলেন, আজ কেনা পড়ছে ৯৩ টাকার মতো আর বিক্রি করছি ১১০ টাকা। তবে বিভিন্ন দোকানে কেনা ও বিক্রির পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/টিআর/জেবি)

মন্তব্য করুন