নাকফুলে বাহার

তানিয়া আক্তার
  প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০১৭, ১২:৫৯
অ- অ+

হাজারো বছর আগে নাকফুলের প্রচলন হয়েছে। এর ব্যবহার বেশি প্রাচ্যে ও মধ্যপ্রাচ্যে। নাকফুলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সামাজিক প্রথা। সাজে-সজ্জায়ও নাকফুল আলাদা করে গুরুত্ব পায়। একসময় স্বর্ণের নাকফুলের কদর ছিল।

এখন কিন্তু রুপা, সুতা, কাঠ নানা কিছু চলে আসে নাকফুলে। আর পাথরের জায়গায় দামে ও আগ্রহে হীরা এখনো অদ্বিতীয়। তবে মুক্তা, চুনি, পান্না, নীলাসহ নানা পাথরের ব্যবহার দেখা যায়।

রুচির ভিন্নতার কারণে গোলাকার, চৌকোণ, ত্রিভুজ, তারা, ফুলÑ রকমারি নকশার নাকফুল আছে বাজারে। কোনোটিতে নকশার সঙ্গে মিলিয়ে পাথরও বসানো থাকে। সহজলভ্য হওয়ায় রুপা কিংবা রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া নাকফুলের চাহিদাই এখন বেশি।

ফোঁড়ানোর কায়দা... নাকে ফুল পরতে হলে প্রথমেই নাক ফোঁড়াতে হবে। আগে এ কাজে সুই-সুতার ব্যবহার ছিল। এখন এতেও লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। এর মাধ্যমে ব্যথামুক্তভাবে নাক ফোঁড়ানো যায়। বিউটি পার্লারগুলোতে লোকাল এনেস্থেসিয়ার মাধ্যমে নাক ফোঁড়ানোর ব্যবস্থা আছে।

সনাতনী কায়দায় ব্যথার ঝুঁকির পাশাপাশি নাক ফোঁড়াতে গেলে ঠিক জায়গায় ছিদ্র না-ও হতে পারে। এজন্য পার্লারগুলোতে পুশপিন গানমেশিনের সাহায্য নেওয়া হয়। এতে করে ঠিক জায়গাটিতেই ছিদ্র করা যায়। পরে আবার অ্যান্টিবায়োটিক স্প্রের ব্যবহার করা হয়, যাতে ক্ষত হওয়ার শঙ্কা না থাকে।

নাক ফোঁড়ানো প্রসঙ্গে পিংক পার্ল বিউটি পার্লারের কর্ণধার সেতারা বেগম ঝুমু বলেন, ‘নাকে ছিদ্র করার পর অনেকেই তিনদিন পর নাকফুল বা সুতা খোলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ভালো ব্র্যান্ডের নাকফুল কিন্তু ছিদ্র করার সঙ্গে সঙ্গে পরা যায়। এক্ষেত্রে অবশ্য নাকফুলটি স্বর্ণের হতে হবে।’

যার যা বয়স সৌন্দর্যে ভিন্নতা আনতে আজকাল সব বয়সীরা নাকফুল পরছে। তবে কম বয়সীদের নাক ফোঁড়ানোটা কখনো নাকের সৌন্দর্যহানি হতে পারে। পিংক পার্ল বিউটি পার্লারের কর্ণধার সেতারা বেগম ঝুমু বলেন, ‘নাক ফোঁড়ানোটা আগে হিসেবে প্রতীক ছিল। বাঙালি নারীদের প্রতীকটি ছিল বিবাহ।

সময়ের প্রয়োজনে আধুনিকতায় এটা একটা ফ্যাশন। তবে কম বয়সীদের বিশেষ করে স্কুল পড়–য়াদের নাক ফোঁড়ানো উচিত নয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাকের ছিদ্র সরে যেতে পারে।’

কেমন নাকফুল চাই মুখ ও নাকের গড়ন অনুযায়ী নাকফুল নির্বাচন প্রয়োজন। একসময় বাঁয়ের দিকে নাকফুল পরা প্রচলিত হলেও ভিন্নতা আনতে ডান নাকেও নাকফুল পরা যায়। নাকের ধরন যেমনই হোক না কেন পাথরের প্রথমে সাদা ছোট্ট একটা নাকফুল পরে যাচাই করে নেওয়া যেতে পারে।

তারপর স্টাইলিংয়ে নাকের আকার অনুযায়ী মানানসই নাকফুল নির্বাচন প্রয়োজন। নাকের গড়ন বড় হলে ছোট কিংবা মাঝারি নাকফুল পরতে হবে। বড়, ছোট, আয়ত ও চোখা নাকে বড় নাকফুল এখন চলতি ট্রেন্ড।

সাজে-পোশাকে নাকফুলের রং অঙ্গসজ্জার সৌন্দর্যে বৈচিত্র্য নিয়ে আসে। উৎসব, উপলক্ষ কিংবা আয়োজনে চেহারায় জমকালো ভাব আনতে ছোট্ট একটি সোনা বা হীরার নাকফুলই অসাধারণ লাগবে। তবে পোশাকের ধরনের এবং রঙের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। সাদা যেকোনো পোশাকে লাল রঙা নাকফুল খুবই বেমানান। সেক্ষেত্রে সাদা পাথরের কিংবা হীরার নাকফুল মানাবে।

শাড়িতে স্বর্ণের নাকফুল সবসময়ই মানানসই আর পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকে ছোট আকারের পাথর, হীরা বা এডি নাকফুল ভালো লাগবে। তবে পোশাক কিংবা রং যাই হোক না কেন ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী নাকফুল নির্বাচন প্রয়োজন।

বাজারের খোঁজ রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, আড়ং, ইস্টার্ন প্লাজা, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড কিংবা জুয়েলারি দোকানে সোনা এবং হীরার নাকফুল পাওয়া যাবে।

সোনার প্রলেপ দেওয়া বা ইমিটেশনের নাকফুল পাওয়া যাবে চাঁদনি চক, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চকবাজারে। পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে গেলে পছন্দসই নাকফুল বানিয়ে নিতে পারবেন।

দরদাম

সোনার নাকফুল নকশা ও ওজনভেদে পাবেন ৭০০ থেকে ১৭০০ টাকায়, সোনার ওপর মুক্তা বসানো নাকফুল পাবেন ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, ভিন্ন আকৃতির হীরার নাকফুল ৪০০০ থেকে ১৮০০০ টাকার মধ্যে পাবে।

এছাড়া নীলা, জিরকন, চুনি, রুবি, পান্না এসব পাথর বসানো সোনার নাকফুল পাবেন ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায়। কমদামে ইমিট্রেশনের নাকফুল ৫০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যাবে।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিজের নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম কেনা যাবে, জানালো বিটিআরসি
বনানীতে ট্রাকের ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
কসবা সীমন্তে বিএসএফের গুলি, আহত দুই বাংলাদেশি
কানে বিশেষ স্বীকৃতি পেলো আদনান আল রাজীবের ‘আলী’
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা