বুড়িগঙ্গায় পাওয়া লাশ যশোর বিএনপি নেতা আবুর

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর ২০১৮, ২২:৫৮

ঢাকায় বুড়িগঙ্গা থেকে উদ্ধার লাশটি যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুবক্কর আবুর। তার ভাগ্নে আশিকুজ্জামান লাশ শনাক্ত করে যশোরের সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

গেল সপ্তাহে বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিতে আবু ঢাকা গিয়েছিলেন। বিজয়নগর এলাকার একটি হোটেলের সামনে থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় একটি লাশ মেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেলিঘাট আশ্মিনগেট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ কেশবপুর আসনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কেশবপুরের মজিদপুর ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান অবিবাহিত আবু বকর আবু ঢাকা থেকে অপহৃত হন গত ১৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে। অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী তার মুক্তির জন্য পরিবার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেয়া হলেও তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস জানান, মনোনয়নপত্র ক্রয় ও জমা দেয়ার জন্য তিনি ১২ নভেম্বর ঢাকা যান। সেখানে পল্টন এলাকার মেট্রোপলিটন হোটেলের ৪১৩ নম্বর কক্ষে তিনি অবস্থান নেন। তিনি ১৯ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য সেখানে অবস্থান করতে থাকেন। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার সঙ্গী ইউপি মেম্বার সাইফুল ইসলাম ফিরে এসে তাকে রুমে পাননি।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার ব্যবহৃত সেল ফোন থেকে কেশবপুরের ভাগ্নের সেল ফোনে কয়েকটি মিসকল আসে। প্রত্যেকবার এ নম্বরটিতে ব্যাক দিলে হ্যালো হ্যালো ছাড়া কোন কথা হয়নি। এরপর ভাগ্নের কাছে ফোন দিয়ে তার মামার জন্য দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ জন্য ওই রাতে কয়েকটি বিকাশ নম্বরও সরবরাহ করেন তারা। কিন্তু রাত ১২টার পর বিকাশের ট্রানজিট বন্ধ থাকায় সোমবার সকালে অপহরণকারীরা আবার মোবাইলে যোগাযোগ করে। এরপর তাদের দেয়া বিভিন্ন নম্বরে দেড় লাখ টাকা বিকাশ করা হয়।

পরদিন সকাল ৯টার দিকে অপহরণকারীরা দেড় লাখ টাকার প্রাপ্তি স্বীকার করে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। বহু অনুরোধের পর অপহরণকারীরা ২০ হাজার টাকা বিকাশ করার জন্য ২টি নম্বর সরবরাহ করে বলেন, ওই টাকা পাওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে আবু বকর আবুকে ওই হোটেলের সামনে ছেড়ে আসা হবে। সাড়ে ১০টার দিকে ২০ হাজার টাকা বিকাশ করার পরও তাকে ছাড়া হয়নি এবং তারা আর মোবাইল ফোন রিসিভ করেনি। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আবু বকর আবুর ছোট বোন আঞ্জুমানারা জানান, আমার ভাই কেশবপুরের বিএনপি নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। সে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ঢাকার র‌্যাব ও আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।

যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ১৮ তারিখে আবু বক্কর আবু নিখোঁজ হন ঢাকা থেকে। কিন্তু বুড়িগঙ্গায় পাওয়া লাশটি তার বলে নিশ্চিত করেছেন তার স্বজনরা।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, যতদূর মনে হচ্ছে, এটি আবু চাচার লাশ। আবু চাচা মারা যাওয়ায় বিএনপির একটি বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে যা, পূরণ হওয়ার নয়।

(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :