চট্টগ্রাম বিআরটিএ

দালাল ছাড়া কাজ হয় না

হাশেম তালুকদার, চট্টগ্রাম ব্যুরো
 | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৭

চট্টগ্রামের বিআরটিএ কার্যালয়ে দালাল ছাড়া কোনো কাজই হচ্ছে না। গাড়ির ফিটনেস, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নতুন গাড়ির লাইসেন্সসহ সব কিছুতেই নির্ভর করতে হয় তাদের ওপরে।

দালাল ছাড়া সরাসরি কাজ করতে ধীরগতিসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে কয়েকটি দালাল চক্র প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ছোট একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ করে জীবন চলে সেলিম রেজার। কম খরচ আর দ্রুত যাতায়াতে মোটরসাইকেল কিনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ বালুছড়া অফিসে টাকা জমা দেন দুই মাস আগে। স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সটি ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল গত ২১ জানুয়ারি। কিন্তু অফিসে এসে জানতে পারেন, তার ডেলিভারির সময় আরও দুই মাস বাড়িয়েছেন কর্মকর্তারা।

টাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে না করায় হয়রানি বেড়েছে, এমন অভিযোগ করে সেলিম রেজা বলেন, ‘আমাকে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাটহাজারি উপজেলার বালুছড়া এলাকার বিআরটিএ কার্যালয়টিতে প্রতিদিন ১০-১২ ধরনের সেবা নিতে আসেন পাঁচশ’র বেশি সেবাগ্রহীতা। তারা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কেউ রেজিস্ট্রেশন, কেউ মালিকানা পরিবর্তন আবার কেউবা গাড়ির ফিটনেস নিয়ে দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করছেন এরুমে সেরুমে। সময়মতো হচ্ছে না কাজ, আবার রাস্তায় বের হলে উল্টো পড়তে হয় পুলিশি হয়রানিতে।

হয়রানির শিকার এক সেবাগ্রহীতা বলেন, ‘তিন বছর পরে এসেও এখনো কাগজ পেলাম না।’

আরেকজন বলেন, ‘এক রুমে গেলে আরেক রুম দেখিয়ে দেয়। সেখানে গেলে আরেক রুম দেখায়। সেখানে বলে ডেট বাড়িয়ে দেবে।’

চালক-মালিকদের অভিযোগ, দালাল ছাড়া নিয়ম অনুসারে কাজ করতে গেলে নানা অজুহাতে কাগজপত্র বাতিল করে দেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ জাতীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আপনি যদি তাদের নির্দিষ্ট লোকের (দালাল) মাধ্যমে যান এবং নির্দিষ্ট ফি (ঘুষ) অফিসিয়াল খরচের বাইরে দিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে কর্মকর্তারা দ্রুত কাজ করে দেবেন।’

চট্টগ্রাম বিআরটিএ কার্যালয়ে সরব উপস্থিতি রয়েছে বেশকিছু দালাল চক্রের। এমন এক চক্রের সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ক্যামেরা দেখে পালিয়ে যান তিনি।

তবে বিআরটিএ কর্মকর্তারা দালালের উৎপাত বাড়ার জন্য সেবাগ্রহীতাদের অসচেতনতাকে দায়ী করছেন। বিআরটিএ চট্টগ্রাম শাখার সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি বলেন, ‘গ্রাহকরা যদি আমাদের বিআরটিএতে নিজেরা সেবা নিতে আসেন, তাহলে অবশ্যই তারা ভোগান্তিতে পড়বেন না। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আমরা দালালদের উৎপাত প্রতিরোধের চেষ্টা করছি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :