যশোরের বাজারে টসটসে লিচু, দামও কম

আব্দার রহমান, যশোর
 | প্রকাশিত : ০৩ জুন ২০১৯, ০৯:৩৮

যশোরের বাজার এখন টসটসে লিচুতে ভরপুর। হরেক রকমের লিচুর দিক থেকে চোখ ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। দাম তুলনামূলক কম। তাই শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল, দড়াটানা, চৌরাস্তা, খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, পালবাড়ি, চাঁচড়া বাসস্ট্যান্ড, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় লিচু কিনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরছে কম। রৌদ্রের তাপ ও রমজানের কারণে গত বছরের তুলনায় এবার দাম কম এবং বিক্রিও কম। ঈদের পর পুষিয়ে নেবেন ব্যবসায়ীরা এমন আশা করছেন।

যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকার রাজু আহম্মেদ তিন বিঘা জমিতে লিচুর চাষ করেছেন। প্রায় এক লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

তার চাচা আব্দুস সাত্তার সাত বিঘা জমিতে লিচুর চাষ করেছেন। এবার তিনি বিক্রি করেছেন নয় লাখ টাকা। গত বছর বিক্রি করেছিলেন মাত্র দেড় লাখ টাকা। তার লিচু কিনেছেন নওয়াপাড়ার হায়দার আলী। তিনি বলেন, দাম কম হওয়ায় সাত্তারের লিচু কিনে লোকসান হচ্ছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।

দাম কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী নাহিদ হাসান বলেন, দেশি লিচু পাক ধরছে রমজান মাসে। এ মাসে লিচু তেমন খেতে চায় না। তাছাড়া যশোরের তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি ওপর। এ তাপমাত্রায় লিচু বড় হয় না, মিষ্টিও হয় না। ফলনও তেমন বেশি হয় না। এবার এক হাজার বোম্বে লিচু এক হাজার টাকা থেকে শুরু ২৩শ টাকা পাইকারিভাবে কেনা হচ্ছে। লিচু বুঝে দামের হেরফের হয়।

যশোর অঞ্চলের লিচু এখন ঢাকা, গাজীপুর, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। ২০ দিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এ লিচু শেষ হলে রাজশাহী, দিনাজপুরের লিচু এ অঞ্চলে বিক্রয় করা হয় বলে জানান যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া এলাকার লিচু ব্যবসায়ী ওমর ফারুক।

মাদারীপুরের ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেছেন, যশোর সদর উপজেলা, চৌগাছা উপজেলা, বাঘারপাড়া উপজেলায় বেশি পরিমাণ লিচু হয়েছে। দেশি লিচু শেষ হয়েছে। বোম্বে ও চাইনা ওয়ান, চাইনা দুই এবং চাইনা ত্রি লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে হাজার লিচু এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার দুইশ দরে বিক্রি হচ্ছে।

যশোর জেলা ফল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান জানান, এবারের উৎপাদন ভালো হলেও কৃষকের কোনো উপকার আসছে না। দাম বেশি না হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারছে না। লিচু স্টোর বা লিচু রপ্তানির ব্যবস্থা না হলে লিচু চাষে কৃষকদের লাভ হবে না বলে জানান তিনি।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এমদাদ হোসেন সেখ বলেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। যশোরে ছয় হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। রমজানের কারণে আপাতত দাম কম। ঈদের পর কৃষকরা দাম পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।

যশোর সিভিল সার্জন অফিসের ডা. আবু মাউথ জানান, লিচু পুষ্ট, লাল রং করার যে সব স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে তা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এসব কীটনাশক ব্যবহারে ক্যান্সার, হার্ড, লিভার ও কিডনিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ঢাকাটাইমস/৩জুন/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :