ভ্রমণ

ভ্রমণ গন্তব্য যখন রাজধানী

আসাদুজ্জামান, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:২৭
অ- অ+

ঢাকা শহরের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে সৌন্দর্য। ৪০০ বছরের এই শহর ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক নগরী। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপিপাসুরা এখানে ঘুরতে আসেন। এছাড়াও গ্রামগঞ্জ থেকেও প্রতিদিন এই শহরের রূপ সুধা পানের জন্য ছুটে আসেন মানুষ। ঢাকা শহরের ভ্রমণ গন্তব্যগুলো নিয়ে এই প্রতিবেদন।

বিউটি বোর্ডিং

পুরান ঢাকার বিউটি বোর্ডিং বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের অনন্য এক আড্ডার স্থান। বাংলাবাজারের বইয়ের মার্কেট ছাড়িয়ে কিছুটা এগিয়ে শ্রীশদাস লেনে দাঁড়িয়ে আছে বিউটি বোর্ডিং। পুরান ঢাকার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের তুলনায় বিউটি বোর্ডিংকে জীর্ণ মনে হলেও এই বোর্ডিং জুড়ে আছে সময়ের পদচিহ্ন।

চিড়িয়াখানা রাজধানী ঢাকার মিরপুরে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা অবস্থিত। জনসাধারণের বিনোদন, প্রাণী বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, প্রজনন, গবেষণা এবং বন্যপ্রাণী সম্পর্কিত জ্ঞান বৃদ্ধি করার উদ্দেশে ১৯৫০ সালে ঢাকা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অল্পসংখ্যক বন্যপ্রাণী নিয়ে বাংলাদেশে চিড়িয়াখানার যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে মিরপুরে চিড়িয়াখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রায় ৭৫ হেক্টর আয়তনের বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার মূল আকর্ষণ পৃথিবীর বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার হলেও এখানে ১৯১ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ২১৫০টি প্রাণী রয়েছে। এদের মধ্যে চিত্রা হরিণ, বানর, নীলগাই, সিংহ, জলহস্তি, গন্ডার, ভালুক, সিংহ, কুমির, জেব্রা, ফ্লেমিংগো, কানিবক, পানকৌড়ি ও মাছরাঙা অন্যতম। আর প্রাণী জাদুঘরে রয়েছে প্রায় ২৪০ প্রজাতির স্টাফিং করা পশুপাখি। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় ১৩ হেক্টর জায়গা জুড়ে দুটি লেক রয়েছে।

বলধা গার্ডেন বলধা গার্ডেন একটি উদ্ভিদ উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেন। পুরান ঢাকার ওয়ারীতে অবস্থিত বলধা গার্ডেনের আয়তন ৩.৩৮ একর। ১৯০৯ সালে ঢাকা জেলার বলধার জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী বিভিন্ন দেশ থেকে ফুল এবং দুর্লভ উদ্ভিদ এনে বলধা গার্ডেন সাজানো শুরু করেন। বর্তমান গাজীপুর জেলাই তৎকালীন সময়ে বলধা নামে পরিচিত ছিল। বলধা গার্ডেনে রয়েছে বিভিন্ন রঙের শাপলায় পূর্ণ একটি শাপলা হাউস। এছাড়াও আছে বিরল প্রজাতির দেশি-বিদেশি ক্যাকটাস, এনথুরিয়াম, অর্কিড, বকুল, ক্যামেলিয়া, ভূজ্জপত্র, অশোক, আমাজান লিলি, আফ্রিকান টিউলিপসহ নানা প্রজাতির গাছ।

বলধা গার্ডেনে বর্তমানে ৮০০ প্রজাতির প্রায় ১৮,০০০ উদ্ভিদ রয়েছে। অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর বলধা গার্ডেন এক সময় সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। সাইকী ও সিবলী নামে দুই অংশে বলধা গার্ডেন সাজানো হয়েছে। সাইকী শব্দের অর্থ আত্মা এবং সিবলী শব্দের অর্থ প্রকৃতির দেবী।

হাতিরঝিল হাতিরঝিল নগরবাসীর বিনোদনের জন্য মনোরম এক কেন্দ্র হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। হাতিরঝিল পরিবেশ ও নান্দনিকতায় খুব সহজেই নগরবাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছে। হাতিরঝিলে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সেতু, চমৎকার শ্বেতশুভ্র সিঁড়ি এবং নজরকাড়া ফোয়ারা। এখানে ঝিলের জলে পালতোলা নৌকায় করে নৌবিহার করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়াও হাতিরঝিলকে ঘিরে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, শিশুপার্ক, বিশ্বমানের থিয়েটার এবং শরীর চর্চা কেন্দ্র।

বিমানবাহিনী জাদুঘর

রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিমানবাহিনী জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর গৌরবময় ঐতিহ্যের ইতিহাস এবং সাফল্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই জাদুঘরটি নির্মিত। জাদুঘরের ভেতরে ঢুকতেই বিশাল চত্বর চোখে পড়ে। আর এই চত্বরেই রাখা হয়েছে বিভিন্ন জঙ্গি বিমান, হেলিকপ্টার এবং রাডার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী জাদুঘরে ২১টি বিমান ও ৩টি রাডার রয়েছে। যার মধ্যে ৩টি বিমান ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় বিমানবাহিনী ব্যবহার করে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে প্রদান করে।

বিমানবাহিনী জাদুঘরে আগত দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে একটি ফুড কোর্ট, স্যুভেনির শপ ‘নীলাদ্রি’, বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি, থিম পার্ক এবং নান্দনিক ফোয়ারা।

কার্জন হল কার্জন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত প্রায় ১১৫ বছরের পুরোনো একটি ঐতিহাসিক ভবন ও পুরাকীর্তি। বর্তমানে কার্জন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও জীব বিজ্ঞান অনুষদের পাঠদানে ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৯০৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন গভর্নর জেনারেল জর্জ কার্জন এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর থেকে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত কার্জন হল ঢাকা কলেজ ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

ইউরোপ ও মোগল স্থাপত্য রীতির অপূর্ব সংমিশ্রণে নির্মিত দ্বিতল এই কার্জন হল ভবনকে ঢাকার অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লাল রঙা কারুকার্যময় এই ভবনের অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল একটি কেন্দ্রীয় হল। কার্জন হলের সামনে রয়েছে একটি সুন্দর বাগান। একটি চমৎকার রাস্তা পশ্চিম থেকে পূর্বে বাগানের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। ভবনের পেছনের দিকে রয়েছে প্রায় ৪০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মুসা খাঁ মসজিদ, একটি বিশাল পুকুর ও শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের মূল আবাসিক ভবন। কার্জন হলের উল্টো দিকের রাস্তার অন্য পাশে রয়েছে শিশু একাডেমি এবং ঐতিহ্যবাহী দোয়েল চত্বর।

বোটানিক্যাল গার্ডেন জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান (বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম) বোটানিক্যাল গার্ডেন হিসেবে অধিক পরিচিত। মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার পাশেই বোটানিক্যাল গার্ডেনের অবস্থান। ২০৮ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে প্রায় ৮০০ প্রজাতির বিভিন্ন বৃক্ষ রয়েছে। এই সব বৃক্ষরাজির মধ্যে রয়েছে নানান ধরনের ফুল, ফল, বনজ এবং ঔষধি গাছ। বোটানিক্যাল গার্ডেনে ফুলের বাগান ছাড়াও রয়েছে পুকুর, দীঘি ও ঘাসে ঢাকা সবুজ মাঠ।

রাজধানী ঢাকা শহরের ভেতরে সবুজের রাজ্যে ভ্রমণের জন্য বোটানিক্যাল গার্ডেন অনন্য। তাই প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শনার্থী এখানে বেড়াতে আসেন।

লালবাগ কেল্লা রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় এই কেল্লার অবস্থান। সম্রাট আওরঙ্গজেব লালবাগ কেল্লা নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও তার পুত্র যুবরাজ শাহজাদা আজম ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে লালবাগ দুর্গের নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন। শুরুতে লালবাগ কেল্লার নাম দেওয়া হয়েছিল আওরঙ্গবাদ দুর্গ বা আওরঙ্গবাদ কেল্লা। পরবর্তীতে ১৬৮৪ খিষ্টাব্দে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর কন্যা ইরান দুখত পরীবিবি মারা যাওয়ার পর তিনি দুর্গটি তৈরির কাজ বন্ধ করে দেন। ১৮৪৪ সালে আওরঙ্গবাদ এলাকাটির নাম পরিবর্তন করে লালবাগ রাখা হয়। এলাকার নামের সাথে সাথে কেল্লাটির নামও পরিবর্তিত হয়ে লালবাগ কেল্লা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

বর্তমানে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর বাসভবন ও দরবার হল ‘লালবাগ কেল্লা জাদুঘর’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। লালবাগ কেল্লায় তিনটি ফটক থাকলেও এর মধ্যে দুটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফটক দিয়ে প্রবেশের সাথে সাথে মনোরম বাগান মনকে প্রফুল্ল করে তোলে। প্রবেশ পথ ধরে সোজা এগিয়ে গেলে সামনে দেখতে পাওয়া যায় শায়েস্তা খাঁর কন্যা পরীবিবির স্মৃতির উদ্দেশে নির্মিত সমাধি সৌধ। সমাধি সৌধটি বর্গাকৃতির এবং এর প্রত্যেক বাহুর দৈর্ঘ্য ২০.২ মিটার। মার্বেল পাথরে তৈরি সমাধি সৌধটি অনন্য কারুকার্যপূর্ণ এবং মূল সমাধি সৌধের উপরের তামার পাত দিয়ে মোড়ানো একটি কৃত্রিম গম্বুজটি রয়েছে।

এছাড়াও দর্শনীয় জিনিসগুলোর মধ্যে রয়েছে লালবাগ কেল্লা মসজিদ, সুন্দর ফোয়ারা, আরো কিছু সমাধি এবং তৎকালীন সময় যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান/তোপ।

আহসান মঞ্জিল পুরান ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত আহসান মঞ্জিল। দোতলা এ ভবনের বারান্দা ও মেঝে তৈরি করা হয়েছে মার্বেল পাথর দিয়ে। আহসান মঞ্জিলের প্রতিটি কক্ষ অষ্টকোণ বিশিষ্ট এবং এই ভবনের ছাদ কাঠের তৈরি। প্রাসাদের ভেতরে রয়েছে খাবার ঘর, লাইব্রেরি, জলসাঘর, দরবার হল এবং বিলিয়ার্ড খেলার জায়গা। আর প্রাসাদের দোতলায় রয়েছে অতিথিদের থাকার কক্ষ, বৈঠকখানা, নাচঘর, গ্রন্থাগার এবং আরো কিছু বসবাসের কক্ষ। প্রাসাদের ঠিক সামনে রয়েছে চমৎকার ফুলের বাগান ও সবুজ মাঠ। আহসান মঞ্জিলের দ্বিতীয় তলা থেকে একটি বড় সিঁড়ি সবুজ মাঠে নেমে এসেছে।

আহসান মঞ্জিলকে ঢাকা শহরের প্রথম ইট-পাথরের তৈরি স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়। আর তৎকালীন নবাবদের হাতে এই ভবনেই প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠে। আহসান মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী পশ্চিমাদেরও সমানভাবে আকর্ষণ করে, লর্ড কার্জন ঢাকায় আসলে এই ভবনেই থাকতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমানে আহসান মঞ্জিল বাংলাদেশ সরকারের জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত আছে। ১৯৯২ সালে এই জাদুঘর জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আহসান মঞ্জিলের রংমহলের ২৩টি কক্ষে ৪ হাজার ৭৭ নিদর্শন রয়েছে।

জাতীয় জাদুঘর জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশের যুগ যুগ ধরে বেড়ে উঠার সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন ধারাবাহিকতার সাথে আগলে রেখে চলেছে। ১৯১৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি কক্ষে ঢাকা জাদুঘর নামে পথচলা শুরু করে আজকের এই জাতীয় জাদুঘর। তৎকালীন বাংলার গভর্নর লর্ড কার মাইকেল ঢাকা জাদুঘরের উদ্বোধন করেন। ১৯৮৩ সালে ঢাকা জাদুঘরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরটি ঢাকার শাহবাগ এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। প্রায় ২০,০০০ বর্গমিটারের চারতলা এই ভবনের ৪৬টি গ্যালারিতে রয়েছে প্রায় ৮৩ হাজারের বেশি নিদর্শন। দক্ষিণ এশীয় দেশের মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ জাদুঘর।

ধানমন্ডি লেক ধানমন্ডি লেক এখন ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৯৫ সালে সংস্কার করে লেকটিকে নতুন রূপ দেওয়া হয়। ২০১৩ সাল হতে এর সংস্কারের কাজ পুরোদমে আবার শুরু হয়েছে। ঢাকার হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, মিরপুর রোড ও শুক্রাবাদ এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে ধানমন্ডি লেকের বিশাল অবস্থান। গাছ-গাছালি, লেক, দৃষ্টিনন্দন লোহার সেতু, পানির ফোয়ারা, লেকের পাড়ের ছোট কুটির ইত্যাদি মিলিয়ে লেকটি বেশ আকর্ষণীয় বলা যায়।

রমনা পার্ক শাহবাগের পাশেই এই রমনা পার্ক অবস্থিত। এটি প্রতিদিন খোলা থাকে, কোনো প্রবেশ মূল্য নেই। এর ভিতরে আছে চমৎকার খাল, সরু পায়েচলার রাস্তা, অসংখ্য গাছ আর সবুজ ঘাসের লন। এর ভেতরে আছে চাইনিজ রেস্তোরাঁ।

শ্যামলী শিশুমেলা ছোট এই শিশুপার্কটি শ্যামলী থেকে আগারগাঁও রাস্তার মোড়ে অবস্থিত। প্রতি দিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য খোলা থাকে।

বড়কাটরা চকবাজারের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার দিকে মুখ করে নির্মিত এই ইমারত। ১৬৪৪ সালে দেওয়ান আবুল কাশেম কাটরাটি শাহ সুজার বাসস্থান হিসেবে নির্মাণ করেন। তবে শাহ সুজা কখনোই এই কাটরাটিতে বাস করেননি। মুসাফির, পথিক ও আশ্রয়হীনদের সরাইখানা বা লঙ্গরখানা হিসেবে ব্যবহার হয়েছে বড়কাটরা। বর্তমানে কাটরাটির একটি অংশ দখল করে রেখেছে একটি মাদ্রাসা আর অন্য আরেকটি অংশ দখল নিয়েছে বিভিন্ন স্তরের কিছু মানুষ।

ছোটকাটরা বড়কাটরা থেকে ১৮২.২৭ মিটার পুবে এই ছোটকাটরার অবস্থান। ধারণা করা হয় ১৬৬২ সালে অথবা ১৬৭১ সালে শায়েস্তা খাঁ এটি নির্মাণ করেন। বর্তমানে এটি সম্পূর্ণ বেদখল হয়ে গেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর হাতে।

তারা মসজিদ বিখ্যাত এই তারা মসজিদটি ঢাকার আর্মানিটোলায় অবস্থিত। মসজিদটির সারা গায়ে রয়েছে শত শত ছোট-বড় তারার কারুকাজ। সাদা সিমেন্টের ওপর চিনামাটির তারকাকৃতি টুকরো বসিয়ে করা হয়েছে এই তারকাসজ্জা। আঠারশ শতকে ঢাকার জমিদার মির্জা গোলাম মসজিদটি নির্মাণ করেন।

হোসেনী দালান

হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মরণে নির্মিত অপরূপ স্মৃতিসৌধ হোসেনী দালান। একজন শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত লোক সৈয়দ মীর মুরাদ তৈরি করেছিলেন ঢাকার হোসেনী দালান। সৈয়দ মীর মুরাদ ছিলেন শাহ সুজার নৌবাহিনীর প্রধান। এই দালান নির্মাণের পেছনে একটি গল্প চালু রয়েছে। সেটি হচ্ছে, এক রাতে স্বপ্নে সৈয়দ মীর মুরাদ দেখতে পেলেন হযরত ইমাম হোসেন (রা.) কারবালার যুদ্ধের স্মৃতির উদ্দেশে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করছেন এবং তাকে অনুরূপ একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে বলেন।

অতঃপর মীর মুরাদ ১০৫২ হিজরি মোতাবেক ১৬৪২ খ্রিষ্টাব্দে এই ইমামবাড়া নির্মাণ করেন। এখানে রয়েছে হোসেনী দালান, ইমামবাড়া, পুকুর মাকবারা-এ নায়ের নাজিম স্থানে ৮টি কবর, ইমাম হাসান (রা.) ও ইমাম হোসেন (রা.)-এর কবরের প্রতিকৃতি।

তিন নেতার মাজার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে রয়েছে দোয়েল চত্বর। আর দোয়েল চত্বরের একটু পশ্চিমেই জাতীয় তিন নেতার সমাধি স্থাপিত। এই তিন নেতা হলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং খাজা নাজিমউদ্দিন।

বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তিলগ্নে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সহযোগীদের সহায়তায় দেশের যে সব শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবী এবং অন্যদের হত্যা করেছিল তাঁদের শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ ঢাকার রায়েরবাজার ইটখোলায় এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় গাবতলী মাজার সড়কের পশ্চিমে এর অবস্থান। শহীদদের স্মরণে লাল রং করা তিনটি থামের সমন্বয়ে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর চারদিকে রয়েছে পরিখা ও বাগান। বাগানের ভিতরে পায়েচলা পথ ও বসার ব্যবস্থা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টেম্বর/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাইবান্ধায় আ.লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক গ্রেপ্তার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল ১৮তম আসর
অনতিবিলম্বে নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক: ডা. জাহিদ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে সরকার, সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা