ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য

কর্ম ও বাজারমুখী শিক্ষায় যোগ্য করে তুলছি

দিতি আহমেদ
  প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৪৮
অ- অ+

চলমান শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি বিশ্বমানের শিক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরাও যেন নিজেদের গড়ে তুলতে পারে এই স্বপ্ন নিয়ে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন, শিক্ষক ও কমকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও মান উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বাংলাদেশের প্রচলিত পাঠ্যবিষয়ের পাশাপাশি সংযোজন করেছে নতুন নতুন বিষয়ের। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যেন আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা পায় এবং আগামী দিনে শিক্ষায় নতুন কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছেন এই প্রতিষ্ঠানের কুশীলবরা। এসব নিয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড.আব্দুল মান্নান চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছে দিতি আহমেদ

দেশে প্রায় ১০০ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা দিচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিশেষত্ব কী?

প্রতিষ্ঠার দিন থেকে শুরু করে মানসম্মত পাঠদানের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। একজন শিক্ষার্থী যেন মানসম্মত শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারে, এটি আমাদের প্রথম লক্ষ্য। এ ছাড়া আমরাই প্রথম ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবর্তন করেছি। মেকাট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মাস্টার্স অব বিজনেস এডুকেশন নামের সম্পূর্ণ নতুন দুটি শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করেছে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

কোন পদ্ধতিতে পাঠদানে বেশি গুরুত্ব দেন আপনারা?

আমরা চাই শিক্ষার্থীদের পথ চলাটা শেখাব। কিন্তু কীভাবে পথ চলবে সেটা তারা নিজেরাই ঠিক করবে। আমরা মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা দিয়ে থাকি। ২০ মিনিট মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতে পাঠদানের পর বাকি সময়টা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পাঠদানের বিষয়ের ওপর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে থাকে। এতে করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জড়তা কেটে যাচ্ছে, কমিউনিকেশন বাড়ছে এবং তারা অভিনবত্বের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় কোন ধরনের পদ্ধতি জরুরি?

বাজারমুখী ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে দেশে বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য বাজারমুখী ও কমমুখী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

কারিগরি শিক্ষাকে কর্মমুখী শিক্ষা বলা হচ্ছে। তাহলে এর বাইরে যে চলমান শিক্ষাব্যবস্থা, তার ভূমিকা কী?

কারিগরি শিক্ষাই কেবল কর্মমুখী শিক্ষা নয়। কারিগরি শিক্ষার কিছু স্তর আছে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে আমরা টেকনিক্যাল স্কিলড লাভ করি। কিন্তু টেকনিক্যাল স্কিলড থেকে নিজেকে উত্তরণ করে যখন আমরা উচ্চতর স্কিলডের দিকে যাব, তখন আমাদের কনসেপচুয়াল ও সোশাল স্কিলডের প্রয়োজন পড়ে। এ জন্যই চলমান শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক আলোচনায় আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার ফ্লেক্সিবিলিটি অনেক বেশি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুব সহজেই বাজারমুখী বা বাস্তবমুখী শিক্ষা প্রবর্তন করতে পারে যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাজারের খুব কাছাকাছি এবং বাজারের নার্ভ দ্রুত অনুভব করতে পারে এবং বাস্তবায়ন করতে পারে, যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব হয় না।

আপনি দেশ-বিদেশে ৫০ বছর ধরে শিক্ষা দিয়ে আসছেন। এই সময়ে শিক্ষাব্যবস্থায় বিশেষ কী পরিবর্তন এসেছে বলে আপনি মনে করেন?

বিগত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষা অনেক বেশি বাজারমুখী বা বাস্তবমুখী হয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতো শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে। উচ্চশিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দে শিক্ষার্থীদের কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব দেয়া উচিত?

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষা পদ্ধতি, কোর্সের বিষয়সমূহ, কতটা বাজারমুখী বা বাস্তবমুখী শিক্ষা প্রদানে সক্ষম, কর্মসংস্থান সৃষ্টির করতে পারে এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে কি না, উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে কতটা মিল রয়েছে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে কতটা সক্ষম ও আন্তরিক ইত্যাদি বিষয় দেখতে হবে।

শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠন এবং ক্যারিয়ার নির্বাচনে কোন বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে আপনি পরামর্শ দেবেন?

ক্যারিয়ার গঠন ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এমন কোনো বিষয় নির্বাচন করতে বলব আমি। আর অবশ্যই কারিগরি, কনসেপচুয়াল ও সোশাল স্কিলড বাড়াতে হবে। কমিউনিকেশনস দক্ষতাও জরুরি।

পৃথিবী এখন বিশ্বগ্রাম। আন্তর্জাতিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আমরা কতটা তাল মিলিয়ে চলতে পারছি?

আন্তর্জাতিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কেবল সিলেবাসে মিল আছে। কিন্তু এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য যেসব প্রয়াস প্রয়োজন তা থেকে আমরা বহু যোজন দূরে। এ জন্য আমাদের দক্ষ শিক্ষক ও কর্মচারীর অভাব রয়েছে। গবেষণার সুযোগ অপ্রতুল। শিক্ষাদান পদ্ধতির মূল্যায়ন প্রক্রিয়া, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা- সার্বিক দিক বিবেচনায় আমরা অনেক পিছিয়ে।

ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ নিয়ে আপনার বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানতে চাই।

একাডেমিক, প্রশাসনিক, উন্নয়নমূলক নানা পরিকল্পনা রয়েছে আমার। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে চাই। তাদের ভবিষ্যৎ যেন সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের মাধ্যমে যোগ্য, দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষক গড়ে তুলতে চাই, যাদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা পাবে শিক্ষার্থীরা।

সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শহীদ জিয়ার মাজার এলাকায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পরিচ্ছন্নতা অভিযান
নির্বাচনে নৌকা প্রতীক থাকবে না: রাশেদ প্রধান
২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে খেলাফত মজলিস 
মিটফোর্ডে মাথা থ্যাঁতলে হত্যা: তিন আসামির দায় স্বীকার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা