কারাগার থেকে তিনটি টুপি এনেছিল জঙ্গিরা: ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৪৫
অ- অ+

রাজধানীর হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার রায়ের দিন কারাগার থেকেই জঙ্গিরা মোট তিনটি টুপি এনেছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুবুল আলম।

তিনি বলেছেন, হলি আর্টিজান হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যানসহ জঙ্গিরা কারাগার থেকে তিনটি (আইএসআইয়ের প্রতীক) সংম্বলিত টুপি এনেছিল। এর মধ্যে দুটি টুপি সাদা আর একটি টুপি কালো। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে এই তদন্ত প্রতিবেদন তারা পুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দেবেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এসব কথা বলেন মাহবুবুল আলম। তিনি ‘জঙ্গির মাথায় আইএস টুপি’ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে করা তদন্ত কমিটির প্রধান। এই কমিটিতে আরও রয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান ও ডিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার শাহাদৎ হোসেন।

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত ২৭ নভেম্বর। রায়ের পর আসামি রাকিবুল আইএসের প্রতীকসংবলিত টুপি পরে এজলাস থেকে বের হন।

হলি আর্টিজানে হামলার পর থেকেই পুলিশ দাবি করে আসছে, জঙ্গিদের সঙ্গে আইএসের কোনো যোগাযোগ ছিল না। অথচ হামলার সোয়া তিন বছর পর এই মামলার রায়ের দিনই আইএসের প্রতীকসংবলিত টুপি পরে জঙ্গি রাকিবুল বেরিয়ে আসেন। আবার এজলাস থেকে বের করার মিনিট দশেক পর যখন প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়, তখন আরেক জঙ্গি রাজীব গান্ধীর (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত) মাথায়ও একই ধরনের টুপি দেখা যায়। কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আনা জঙ্গিদের মাথায় এই টুপি কীভাবে এল, তা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), যার প্রধান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মাহবুবুল আলম।

বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল বলেন, ‘আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছি। কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় তল্লাশি করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে যে টুপি ছিল তা রেখে দেয়া হয়নি বরং নির্বিঘ্নে তাদের টুপি নিয়ে আসতে দেয়া হয়েছে।’

ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বলেন, মোট তিনটি টুপি এসেছিল। এর মধ্যে দুটি সাদা ও একটি কালো টুপি ছিল। তবে কোনো লোগো ফুটেজে ধরা পড়েনি।

এক প্রশ্নের জবাবে জনাব মাহবুবুল আলম বলেন, কারাগারে কর্মরত কারারক্ষীরা হয়তো বুঝতেই পারেনি এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ (সিগনিফিকেন্স)। টুপি তো নামাজের অংশ। তাই হয়তো তারা ছেড়ে দিয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিদের কাছে এভাবে একাধিক টুপি আসতে পারে। লোগো থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। তবে আমাদের তদন্তে ধরা পড়েনি। এমনও হতে পারে, তারা যে টুপি কারাগার থেকে এনেছিল, আদালতে রায় শোনার পর তা তারা উল্টে পরেছে।

রিগ্যানের বিষয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, আইএস টুপি বিতর্কের পর তদন্তের স্বার্থে তাকে অনেক সংস্থাই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রিগ্যান কারাগারে এক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আরেক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে আবার আদালতে গিয়ে ভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।

আদালতের নিরাপত্তার বিষয়ে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সেদিন আদালতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। এরপরও আদালতে রিগ্যান বলেছে, ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন তাকে টুপি দিয়েছে। সেদিন পুলিশ, সাংবাদিক আর আইনজীবী ছাড়া কেউ ছিলেন না। সাংবাদিক এবং আইনজীবীর বিষয়টি আদালতে একটা ফ্রেমে আনা দরকার। এমন কোনো সিস্টেম দাঁড় করানো দরকার যাতে আইনজীবী তার পেশায় থাকতে পারে আর সাংবাদিক যাতে তার রিপোর্ট কাভার করতে পারে। পুলিশ তার নিরাপত্তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে।

এর আগে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম জানিয়েছিলেন, হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা মামলার রায়ের দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিগ্যানসহ দুই জঙ্গির মাথায় যে টুপি ছিল সেটা কারাগার থেকেই আসছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

অন্যদিকে কারা অধিদপ্তর থেকে যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে- জঙ্গি রিগ্যানের মাথায় যে আইএস লোগোসম্বলিত টুপি দেখা গেছে, তা কারাগার থেকে যায়নি।

ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/এএ/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বনানীতে পথশিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা